ইউপি সদস্যসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনে মামলা করা হয়েছে বলে জানান ওসি।
Published : 20 Aug 2023, 05:05 PM
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার সীমান্ত নদী যাদুকাটার পাড় কেটে বালু উত্তোলন করার সময় ইউপি সদস্যসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রোববার তাহিরপুর থানার ওসি সৈয়দ ইফতেখার হোসেন জানান, শনিবার রাত ২টার দিকে যাদুকাটা নদীর ঘাগটিয়া এলাকায় পাকা রাস্তার মুখ থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন- বাদাঘাট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মোশাহিদ হোসেন রানু ওরফে রানু মিয়া, মো. আমিন উদ্দিন (২৩), মো. সায়েম আলী (২২), মো. দেলোয়ার হোসেন ও জয়ন্ত দাশ (২৩)।
ওসি সৈয়দ ইফতেখার হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বালু উত্তোলনের খবর পেয়ে শনিবার রাতে ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে বালুভর্তি চারটি স্টিলবডি নৌকাসহ তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনে একটি মামলা করা হয়েছে। এ মামলায় ওই পাঁচজনসহ অজ্ঞাত আরও সাত থেকে আটজনকে আসামি করা হয়। রোববার আসামিদের আদালতে মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, ইউপি সদস্য রানু মিয়ার নেতৃত্বে একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে যাদুকাটা নদীর পাড় কেটে বালু উত্তোলন করছে।
গত ৩০ জুলাই বাদাঘাট ইউনিয়নের যাদুকাটা নদী সংলগ্ন আদর্শ গ্রাম থেকে তাদের বালু উত্তোলন বাধা দেন স্থানীয় নারী রাজিয়া বেগম (৫০)। এ সময় ইউপি সদস্য রানু মিয়া ও তার সহযোগিরা তাকে বেধড়ক পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন। এক পর্যায়ে তাকে ছুরি দিয়ে আঘাত করা হয়।
হামলার শিকার হওয়া গৃহবধূ রাজিয়া বেগম বলেন, “পাড় কাটতে কাটতে তারা আমার বাড়ির উঠান কাটা শুরু করেন। এরপর আমার ঘরের বেড়ার কাছে চলে আসে। তখন বাধা দিলে আমার উপর হামলা করে। আমাকে চাকু দিয়ে আঘাত করে এবং মেরে ফেলার হুমকি দেন।
“আমি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছি। এখনও তাদের পাড় কাটা চলছেই। যে কোনো মুহূর্তে আমার বাড়িটা নদীগর্ভে চলে যাবে। আমি রানু মিয়াসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছি।”
রাজিয়া বেগমের স্বামী মো. আক্কাছ মিয়া (৪১) বলেন, “আমরা নদীর পাড় কাটতে না করেছি। তারপরও তিন মাস ধরে নদীর পাড় কেটেই চলছে। আমার স্ত্রী বাধা দিলে তাকে তারা মেরেছে। চাকু, গাদা নিয়ে হামলা করে। নিষেধ করলে ঘর থেকে আমাদের ছেলেদের রশি দিয়ে বেঁধে নিয়ে যান। তারা কোনো নিষেধ মানে না। তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছি।”
এ মামলার বিষয়ে ওসি বলেন, ওই গৃহবধূর করা মামলার তদন্ত চলছে।
আরও পড়ুন-