এর মধ্যে ৯ মাস বয়সী তাসিন বালী ও ১৭ মাস বয়সী সুব্রত কান্তি পালের হাত-পা ফুলে গিয়ে তারা অসুস্থ হয়ে পড়ে।
Published : 05 Mar 2023, 09:33 AM
বরিশালের গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডায়রিয়া আক্রান্ত তিন শিশুকে মেয়াদোত্তীর্ণ স্যালাইন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে দুই নার্সকে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. মনিরুজ্জামান শনিবার রাত পৌনে ১২টায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, শুক্রবার দুপুরে ও শনিবার সকালে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত তিন শিশুকে মেয়াদোত্তীর্ণ স্যালাইন দেওয়া হয়।
“এর মধ্যে ৯ মাস বয়সী তাসিন বালী ও ১৭ মাস বয়সী সুব্রত কান্তি পাল অসুস্থ হয়ে পড়ে। অসুস্থ শিশুদের চিকিৎসা দিয়েছি। তারা বর্তমানে সুস্থ আছে।”
শিশু তাসিন উপজেলার বেতগর্ভ গ্রামের বাসিন্দা তসলিম বালীর ছেলে এবং সুব্রত শাওরা গ্রামের বাসিন্দা গোপাল কান্তি লালের ছেলে।
তসলিম বালী সাংবাদিকদের বলেন, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে শুক্রবার সকালে তাসিনকে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। শনিবার দায়িত্বরত নার্স তার শরীরে একটি স্যালাইন দেয়। এতে তাসিনের হাত-পা ফুলে অসুস্থ হয়ে পড়ে।
“পরবর্তীতে দেখতে পাই তাসিনের শরীরে যে স্যালাইন দিয়েছে, তার মেয়াদ নাই। ওই স্যালাইনের মেয়াদ ছিল ২০২৩ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত। অর্থাৎ এক মাস আগেই মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে।”
গোপাল কান্তি লাল সাংবাদিকদের বলেন, তার ছেলে সুব্রত ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে বৃহস্পতিবার রাতে তাকে হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়।
“শুক্রবার দুপুরে সুব্রতের শরীরে আইভি স্যালাইন দেওয়ার করার পর তার হাত-পা ফুলে যায়। সে আরও অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে জানতে পারি তার শরীরে এক মাসের মেয়াদোত্তীর্ণ স্যালাইন পুশ করেছেন নার্সরা।”
এ ছাড়া মেয়াদোত্তীর্ণ স্যালাইন দেওয়া হয়েছে বিল্বগ্রাম এলাকার শাওন তালুকদারের ৪ বছর বয়সী শিশু আয়ানের শরীরেও।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. মনিরুজ্জামান বলেন, শনিবার বিকাল ৪টার দিকে এ বিষয়টি জানার পর দুই নার্সকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তারা হলেন- ঝুমা মিস্ত্রী ও কনিকা হালদার।
ঘটনা তদন্তে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটিও গঠন করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আগামী সাত কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে গাইনী বিশেষজ্ঞ ডা. বিমল বিশ্বাসকে। কমিটির অন্য দুইজন হলেন ডা. মৌলি ও ডা. টিপু সুলতান।
স্যালাইন কোথা থেকে এসেছে, কীভাবে এল, মেয়াদহীন স্যালােইন কেন দেওয়া হল সে বিষয়গুলো কমিটিকে তদন্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান জানান।