বৃহস্পতিবার উৎসবের দ্বিতীয় দিনের অধিবেশন শুরু হবে সন্ধ্যা ৭টায়। একক ও সম্মেলক গান দিয়ে সাজানো হয়েছে অনুষ্ঠান সূচি।
Published : 08 May 2024, 10:17 PM
তখনও অনুষ্ঠান শুরু হয়নি, মিলনায়তন পূর্ণ দর্শকে। প্রবেশদ্বারেও তিল ঠাঁই নেই। কেউ কেউ মিলনায়তনের বাইরে লবিতে থাকা প্রজেক্টরের পর্দায় চোখ রেখেছেন অনুষ্ঠান দেখার জন্য।
রবীন্দ্রপ্রেমিরা ভিড় করেছেন নগরের ছায়ানট মিলনায়তনে। বুধবার থেকে দুই দিনব্যাপি 'রবীন্দ্র উৎসব ১৪৩১' আয়োজন করেছে সংস্কৃতি শিক্ষার প্রতিষ্ঠান ছায়ানট।
বিশ্বকবির ১৬৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ছায়ানট ভবনের মিলনায়তনে প্রথম দিনের অধিবেশন শুরু হয় রবি ঠাকুরের 'প্রথম যুগের উদয়দিগঙ্গনে' গানের সঙ্গে নাচের পরিবেশনার মধ্য দিয়ে।
দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলে শিল্পীদের পরিবেশনা। একের পর এক পরিবেশনার পর দর্শকের করতালি অন্য মাত্রা যোগ করে। সুরের মূর্ছণায় সঙ্গীতপ্রেমীরা উপভোগ করেন এই আয়োজন।
একক, দলীয় গানের পাশাপাশি গীতি আলেখ্য 'তারেই খুঁজে বেড়াই' পরিবেশন করেন শিল্পীরা। রবীন্দ্রনাথের বাউল পর্যায়ের গান নিয়ে সাজানো হয় গীতিআলেখ্য- 'তাঁরেই খুঁজে বেড়াই'। গানের ফাঁকে রবীন্দ্রনাথের লেখা থেকে পাঠের মধ্য দিয়ে তুলে ধরা হয় বাউলদের নিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাবনা।
'আমি ডুবতে রাজি আছি', 'তোমার খোলা হাওয়া', 'আমি কান পেতে রই', 'আজি ঝড়ের রাতে তোমার অভিসার'সহ রবীন্দ্রনাথের কালজয়ী সব গানে অনুষ্ঠান মাতিয়ে তোলেন শিল্পীরা।
আয়োজক প্রতিষ্ঠান ছায়ানটের ঘোষণায় বলা হয়, "রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আমাদের অনুপ্রেরণা, সংকটে তিনি আমাদের ত্রাণকর্তা। আমাদের প্রাণে আগুনের পরশমণি ছুঁয়ে তিনি বলছেন, 'আমি তোমাদেরই লোক'।"
প্রথম দিনের অধিবেশনে শিল্পীরা সম্মেলক কণ্ঠে গেয়ে শোনান- 'কোন আলোতে প্রাণের প্রদীপ জ্বালিয়ে', 'আমার প্রাণের মানুষ আছে প্রাণে', 'সফল করো হে প্রভু আজি সভা', 'অসীম কালসাগরে ভুবন ভেসে চলেছে'।
একক কণ্ঠে গান শোনান- শিল্পী ইফফাত বিনতে নাজির, এটিএম জাহাঙ্গীর, নুসরাত জাহান রুনা, সেমন্তী মঞ্জুরী, অভয়া দত্ত, মোস্তাফিজুর রহমান তূর্য, চঞ্চল বড়াল, দীপ্র নিশান্ত, সেঁজুতি বড়ুয়া, সাজেদ আকবর, লিলি ইসলাম, অনিরুদ্ধ সেনগুপ্ত, আব্দুল ওয়াদুদ, শিমু দে, জহিরুল হক খান, স্বাতী বিশ্বাস, অসীম দত্ত সালমা আকবর।
তাদের কণ্ঠে গীত হয়- 'তুমি একলা ঘরে বসে বসে', 'চক্ষে আমার তৃষ্ণা ওগো', প্রতিদিন আমি, হে জীবনস্বামী', 'আমি যখন ছিলেম অন্ধ', 'আমি তারেই জানি তারেই জানি', 'মন রে ওরে মন', 'তুমি বাহির থেকে দিলে বিষম তাড়া', 'গগনে গগনে আপনার মনে', 'তোমার কথা হেথা কেহ তো বলে না' গানগুলো।
অনুষ্ঠান শেষ হয় সম্মেলক নৃত্যগীতের মধ্য দিয়ে। ছায়ানটের বড়দের দল পরিবেশন করে 'ভুবনজোড়া আসনখানি' এবং 'অরূপ তোমার বাণী'। ছায়ানট তাদের রীতি অনুযায়ী জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শেষ করে প্রথম দিনের আয়োজন।
যন্ত্রানুষঙ্গে ছিলেন- তবলায় গৌতম সরকার ও মৃত্যুঞ্জয় মজুমদার, সেতারে ফিরোজ খান, বাঁশিতে মামুনুর রশীদ, কীবোর্ডে জুয়েল আল্-দ্বীন এবং মন্দিরায় প্রদীপ কুমার রায়।
বৃহস্পতিবার উৎসবের দ্বিতীয় দিনের অধিবেশন শুরু হবে সন্ধ্যা ৭টায়। একক ও সম্মেলক গান দিয়ে সাজানো হয়েছে অনুষ্ঠান সূচি।