যশোর সদরের এ ঘটনায় ছয় প্রতিবেশীকে আটক করেছে পুলিশ।
Published : 07 Nov 2022, 07:44 PM
পেঁয়াজ-মরিচ চুরির অভিযোগ এনে যশোরের সদর উপজেলায় এক নারীকে গাছে বেঁধে নির্যাতন ও চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ছয় প্রতিবেশীকে আটক করেছে পুলিশ।
উপজেলার চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের একটি গ্রামে রোববার রাতে এ ঘটনা ঘটে বলে সাজিয়ালী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই সেলিম হোসেন জানান।
তিনি বলেন, সোমবার সকালে ওই নারীকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার স্বামী একজন ভ্যানরিকশা চালক। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সোমবার বিকালে ছয় জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে।
আটকরা হলেন- হারুন গাজী (৫০), আল-আমিন (২৫) ও তার স্ত্রী কেয়া (২৪), চায়না বেগম (৩৫) ও তার ছেলে রিয়াদ (২০) এবং সীমা (৩০)। তারা একই গ্রামের বাসিন্দা।
যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন পঞ্চাশোর্ধ্ব ওই নারী সাংবাদিকদের বলেন, রোববার গভীর রাতে তিনি পাশের গ্রামের এক কবিরাজের কাছ থেকে নাতির জন্য তেল-পড়া নিয়ে আসছিলেন। তিনি আল-আমিনদের বাড়ির ওপর দিয়ে ফিরছিলেন। এ সময় ছয় জন তাকে পেঁয়াজ ও মরিচ চুরির অভিযোগে গাছে বেঁধে নির্যাতন করেন এবং একপর্যায়ে চুল কেটে দেন।
“রাত ১২টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত আমাকে মারপিট ও নির্যাতন করা হয়। পরে ভোরে ছেড়ে দেয়।”
গভীর রাতে কবিরাজের কাছ থেকে তেল-পড়া আনতে গিয়েছিলেন কেন- জানতে চাইলে ওই নারী নীরব থাকেন।
আটক আল-আমিন সাংবাদিকেদের কাছে দাবি করেন, “ওই নারী মধ্যরাতে আমাদের রান্না ঘর থেকে পেঁয়াজ ও কাচাঁমরিচ চুরির সময় হাতেনাতে ধরা পড়েন। তার কাছে পাঁচটি পেঁয়াজ ও ছয়টি কাঁচামরিচ পাওয়া গেছে। বেশ কয়েকদিন ধরে আমাদের বাড়ি থেকে মরিচ, পেঁয়াজ ও তেল চুরি হচ্ছিল।”
ওই নারীর স্বামী অভিযোগ করেন, আটকের পর তার স্ত্রীকে দড়ি দিয়ে বেঁধে মারপিট করতে থাকে কয়েকজন। পরে তার মাথার চুল কেটে দেয় তারা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা তাকে বেঁধে মারপিট করা হয়। পরে প্রতিবেশীদের কয়েকজন গিয়ে ভোর ৪টার দিকে তার বাঁধন খুলে দেন।
ওই নারীর ভাইয়ের ছেলে দুলাল মিয়া বলেন, “সামান্য মিথ্যা চুরির অভিযোগ এনে আমার ফুফুকে যেভাবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মারপিট ও নির্যাতন করেছে তা অমানবিক। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ফুফুকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।“
যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আহমেদ তারেক শামস বলেন, ওই নারীর শরীরে মারপিটের চিহ্ন রয়েছে; তবে গুরুতর নয়।
চুড়ামনকাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দাউদ হোসেন বলেন, চুরির অপবাদে একজন মানুষকে এভাবে মারপিট ও নির্যাতন করা আইনের পরিপন্থি। তিনি দোষীদের কঠোর শাস্তি দাবি করেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল মান্নান বলেন, একজন মানুষ অপরাধ করলে তাকে পুলিশে সোর্পদ করতে পারতো। কিন্ত চুরির অভিযোগে একজন নারীর সঙ্গে যা করা হয়েছে তা জঘন্য।