“বাবলু মনসুর আলীর জানাজায় যাচ্ছিলেন।তিনি সম্পর্কে তার বোনের শ্বশুর হয়। কিন্তু সেই জানাজায় যাওয়ার আগেই স্ত্রী আর সন্তানকে নিয়ে নিজেই লাশ হলেন।“
Published : 16 Feb 2024, 06:20 PM
ময়মনসিংহ নগরীর চর ঈশ্বরদীয়া এলাকায় আত্মীয় মো. মনসুর আলীর জানাজায় যাচ্ছিলেন ব্যবসায়ী বাবলু আহমেদ; তার আগেই বাসচাপায় স্ত্রী ও ছেলের সঙ্গে তারও প্রাণ ঝরছে সড়কেই।
শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে সদর উপজেলার শেরপুর-ময়মনসিংহ মহাসড়কের আলালপুর এলাকায় বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে নারী ও শিশুসহ অটোরিকশার যে সাতজন নিহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে বাবুল ও তার পরিবারও ছিল।
পুলিশ জানায়, ঢাকা থেকে শেরপুরগামী আদিল পরিবহনের বাসটি আলালপুর এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা সিএনজিচালিত অটোরিকশাটির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- ফুলপুর উপজেলার রামভদ্রপুরের আশাবট গ্রামের বাসিন্দা বাবলু আহমেদ (৪৫), তার স্ত্রী শিলা আক্তার (৩৫), তাদের ছেলে মো. সাদমান (৭), অটোরিকশার চালক দিও গ্রামের আলামিন হোসেন (২৫), সিংহেস্বর এলাকার আব্দুল বারেক মণ্ডল (৫৫) ও ধোবাবাউড়া উপজেলার গোলাম মোস্তফা (৫০)। বাকি একজনের পরিচয় জানা যায়নি।
ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা তাদের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
চর আশাবট গ্রামের করিম মাসাটারের বড় ছেলে নিহত বাবলু ফুলপুর বাজারে কাপড়ের দোকান চালাতেন। দুর্ঘটনার পর তার বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, পরিবার ও স্বজনরা আহাজারি করছেন। গ্রামের লোকজনও ততক্ষণে ভিড় জমিয়েছেন। সেখানে কথা হয় মো. কামরুজ্জামান নামে বাবলুর এক আত্মীয়ের সঙ্গে।
কামরুজ্জামান বলেন, “বাবলু মনসুর আলীর জানাজায় যাচ্ছিলেন। তিনি সম্পর্কে তার বোনের শ্বশুর হয়। কিন্তু সেই জানাজায় যাওয়ার আগেই স্ত্রী আর এক ছেলের সঙ্গে নিজেই লাশ হলেন।
“বাবলু ভালো মনের মানুষ ছিল। সে চার সন্তানের জনক। এর মধ্যে ছোট ছেলে সাদমান বাবা-মার সঙ্গেই মারা গেছে। আর বাকি দুই মেয়ে এবং এক ছেলে এতিম হল; পরিবারটি এখন অথৈ সাগরে পড়েছে।”
বাবলুর স্ত্রী শীলা আক্তারের চাচাত ভাই সোহাইন মাহমুদ বলেন, “বোনটার সংসারটা খুব সাজানো -গোছানো ছিল। একটি দুর্ঘটনায় সব শেষ হয়ে গেল। তিনটা বাচ্চাকে কি বলব, ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না।”
ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক দিদারে মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী বলেন, “ভয়াবহ দুর্ঘটনায় নিহতদের স্বজনদের সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা আমাদের জানা নেই। প্রাথমিকভাবে তাদের দাফনের জন্য ২০ হাজার টাকা করে দিচ্ছি। ঘটনার তদন্তে একটি কমিটি করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
আরও পড়ুন: