পাবর্ত্য জেলা খাগড়াছড়িতে এবার চারজন খুনের পাশাপাশি নিখোঁজ তিনজন; ‘অপহরণের’ শিকার তাদের ভাগ্যে কী ঘটেছে তা নিয়ে এখনও অন্ধকারে স্বজনরা।
Published : 13 Dec 2023, 12:40 AM
রাতে দূর থেকে গুলির শব্দ শুনছিলেন তারা; স্বল্প সময়ের মধ্যে প্রচণ্ড গোলাবর্ষণের সেই ক্ষণে ঘর থেকে বাইরে বের হওয়ার সাহস হয়নি কারও। ভয়াবহ কিছু একটা হয়েছে বুঝছিলেন ঠিকই; সকালে এসে দেখলেন হৃদয় ভাঙা সেই দৃশ্য। একটা ঘরে খুন হয়ে পড়ে রয়েছেন চারজন, তাদের একজনের আবার হাত বাঁধা।
দুর্গম পাহাড়ে ভয় জাগানো রাতের এ ঘটনার ১৪ ঘণ্টা পর সেখানে গিয়ে দেখা যায়, নিহতের স্বজন আর প্রতিবেশীদের জটলা। কেউ কেউ তখনও ডুকরে কেঁদে উঠছিলেন। কেউবা এগিয়ে গিয়ে সান্ত্বনা দিচ্ছেন তাদের। কথা নেই কারও মুখে, যেন ভয়ের খোলসের মধ্যে ঢুকে গেছেন।
ঘটনার বিষয়ে জানতে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছাড়া কারও মুখ খোলানো গেল না।
রাতের হত্যাকাণ্ডের পর লোগাংয়ের অনিল পাড়ার দৃশ্য ছিল এমনই। এলাকাটি এতটা দুর্গম যে পানছড়ি উপজেলা সদর থেকে প্রথমে মোটরসাইকেলে পরে ও হেঁটে সেখানে যেতে ২৫ থেকে ৩০ মিনিটের মত সময় লাগে। পুছগাং বাজার ছাড়িয়ে পেরোতে হয় চেঙ্গী নদী। ফসলি জমি ও পাহাড়ের পাদদেশ দিয়ে হাঁটতে হয়। খাগড়াছড়ি জেলা সদর থেকে প্রায় দেড় ঘণ্টার পথ।
দুপুর ১২টার দিকে অনিল পাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, একটি ছোট্ট টিলার উপরে একটি আধাপাকা টিনসেডের ঘর। যেখানেই দুবৃত্তদের হাতে প্রাণ গেছে চারজনের; নিখােঁজ আরও তিনজন, যাদের ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে ধারণা স্বজন ও এলাকাবাসীর।
পার্বত্য চট্টগ্রামের আরেক পাহাড়ে এমনই আতঙ্কের দিন গেছে প্রায় পাঁচ বছর আগে, ২০১৮ সালের মে মাসের প্রথম সপ্তাহে। ৩ মে একজন খুনের রেশ না কাটতেই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রাণ যায় আরও পাঁচজনের।
ওই সময় প্রথমে খুন হন জেএসএস এমএন লারমা অংশের নেতা ও রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শক্তিমান চাকমা। পরদিন তার অন্ত্যোষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিতে যাওয়ার পথে রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি সীমান্তের কাছে বেতছড়ি এলাকায় ইউপিডিএফ-গণতান্ত্রিক এর প্রধানসহ পাঁচজনকে ব্রাশফায়ার করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
ওই সময় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ছয়জনকে হত্যার ঘটনায় ইউপিডিএফ-গণতান্ত্রিক ও জেএসএস-এমএন লারমা উভয় সংগঠনই প্রসীত খিসার নেতৃত্বাধীন পাহাড়ের আঞ্চলিক সংগঠন ইউপিডিএফকে দায়ী করেছিল।
তবে তা দোষারোপের মধ্যেই থেমে থাকেনি, এরপর নানা রাজনৈতিক ও আঞ্চলিক সমীকরণ আর বিভেদের মধ্যে ভ্রাতৃঘাতী সহিংসতায় বারবার ক্ষত-বিক্ষত হয়েছে পাহাড়; ঝরেছে আরও প্রাণ।
পাহাড়কে উথাল পাথাল করে দেওয়া এমন ‘অশান্ত’ ঘটনাবলীর মধ্যেই সোমবার রাতে খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলার লোগাং ইউনিয়নের দুর্গম অনিল পাড়ায় ইউপিডিএফের চার নেতাকর্মীকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। আরও তিনজনকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই তিনজনের ভাগ্যে কী ঘটেছে ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় পরও তা নিয়ে অন্ধকারে স্বজনরা।
এ ঘটনায় ইউপিডিএফ কয়েক বছর আগে তাদের দল থেকে বেরিয়ে যাওয়া ইউপিডিএফ-গণতান্ত্রিকের নেতাদের দায়ী করছে। ইউপিডিএফ-গণতান্ত্রিক তা অস্বীকার করেছে।
লোগাংয়ে একসঙ্গে চারজনকে হত্যার ঘটনায় পাহাড়ের নৃগোষ্ঠীর মানুষদের মধ্যে আবার সেই পাঁচ বছর আগের ভয় আর আতঙ্কের স্মৃতিই যেন ফিরে এসেছে। এ ঘটনার রেশ আরও কতদিন সইতে হবে-অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে সেই আশঙ্কা এখন তাদের মধ্যে।
দুর্গম সেই এলাকায় গিয়ে অনিশ্চিত এক আতঙ্কের ছাপ দেখা গেছে পানছড়ির পাহাড়ি মানুষদের চোখেমুখে।
মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাস্থল অনিল পাড়ায় দাঁড়িয়ে লোগাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জয় কুমার চাকমা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলছিলেন, “দেখতেই পারছেন, এখানকার পরিস্থিতি এখন অত্যন্ত থমথমে। সাধারণ জনগণ ভয়-ভীতির মধ্যে বসবাস করছে। তারা অতীতেও এ ধরনের ঘটনা দেখেছে।
“এখন জনগণ আশঙ্কা করছে কখন কী ঘটে, এই নিয়েই তারা চিন্তায় আছে। কারণ, একটা ঘটনা এখানেই শেষ হয়ে যায় না”, যোগ করেন ইউপি চেয়ারম্যান।
কী ঘটেছিল রাতে
খাগড়াছড়িতে বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক দল সক্রিয়। নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সেখানে এর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী প্রসীত খিসার নেতৃত্বাধীন ইউপিডিএফ। সেখানে জেএসএস-এমএন লারমা ও ইউপিডিএফ-গণতান্ত্রিকের অবস্থানও ভাল। সেখানে জেএসএস-সন্তু লারমার কাজ থাকলেও অবস্থান বেশ দুর্বল।
প্রসীত খিসা ২০১৪ সালে এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও অংশ নিয়েছিলেন। সেবার তিনি প্রায় ৬৮ হাজার ভোট পেয়ে পরাজিত হয়েছিলেন। এবার অবশ্য দলটি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না।
সেই হিসেবে বলতে গেলে নিজেদের পুরো নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকাতেই যুব সংগঠনের সম্মেলনের আয়োজন করেছিল ইউপিডিএফ।
সেই সম্মেলনে অংশ নিতেই সোমবার রাতে সাত নেতাকর্মী লোগাংয়ের অনিল পাড়ায় গিয়েছিলেন সাতজন। তারা একটি ঘরে একসঙ্গে ছিলেন। সেখানেই ২০ থেকে ২৫ সশস্ত্র দুর্বৃত্ত হামলা চালিয়ে চারজনকে হত্যা করে। বাকি তিনজন এখনও নিখোঁজ আছেন।
নিহতরা হলেন- পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ পিসিপির সাবেক কেন্দ্ৰীয় সভাপতি ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক বিপুল চাকমা, পিসিপির কেন্দ্রীয় সহসভাপতি সুনীল ত্রিপুরা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের নেতা লিটন চাকমা ও ইউপিডিএফ সদস্য রুহিন বিকাশ ত্রিপুরা।
এছাড়া ইউপিডিএফ সংগঠক নীতিদত্ত চাকমা, হরিকমল ত্রিপুরা ও সদস্য প্রকাশ ত্রিপুরা নিখোঁজ রয়েছেন। তাদের ভাগ্যে কী ঘটেছে ২৪ ঘণ্টাও জানা সম্ভব হয়নি। স্বজনদের ধারণা, তাদের দুর্বৃত্তরা অপহরণ করে নিয়ে গেছে।
নিহত বিপুল চাকমার বাড়ি পানছড়ি উপজেলার চেঙ্গী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের করল্যাছড়ি বুদ্ধধন পাড়ায়। সুনীল ত্রিপুরার বাড়ি মাটিরাঙ্গা উপজেলার বড়নাল ইউনিয়নের সুরেন্দ্র রোয়াজা হেডম্যান পাড়ায়। লিটন চাকমার বাড়ি খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার ভাইবোনছড়া ইউনিয়নের দ্রোনচার্য্য কার্বারি পাড়ায়। আর রুহিন বিকাশ ত্রিপুরা পানছড়ির উপল্টাছড়ি ইনিয়নের পদ্মিনী পাড়ায়।
ইউপিডিএফ এর দুধকছড়া ইউনিটের সাংগঠনিক সম্পাদক সুবোধ চাকমার অভিযোগ, “পাহাড়ে ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত লাগিয়ে দিয়ে একটি পক্ষ সুবিধা নিতে চায়। ইউপিডিএফ- গণতান্ত্রিক এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। আমরা প্রশাসনের কাছে অবশ্যই এই ঘটনার বিচার চাইব।”
তবে এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপিডিএফ-গণতান্ত্রিক এর সভাপতি শ্যামল চাকমা বলেন, “পাহাড়ে বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল রয়েছে। তারা এই ঘটনা ঘটাতে পারে। সামনে নির্বাচন, আমরা এই ঘটনা কেন ঘটাব? আমরা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নই।”
ঘটনার প্রায় ১৯ ঘণ্টা পর বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে অনিল পাড়া থেকে চারজনের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
পানছড়ি থানার ওসি শফিউল আজম বলেন, “আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছি। চারজনের মৃতদেহ থানায় নিয়ে এসেছি।
“বুধবার সকালে মরদেহগুলো ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। তারপর তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
পরবর্তী যে আইনি কার্যক্রম তার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান ওসি।
প্রচণ্ড গোলাগুলি শুনেছেন প্রতিবেশীরা
লোগাংয়ের অনিল পাড়া বেশ দুর্গম এলাকা। পানছড়ি উপজেলা সদর থেকে প্রথমে মোটরসাইকেলে পরে ও হেঁটে সেখানে যেতে ২৫ থেকে ৩০ মিনিটের মত সময় লাগে। পুছগাং বাজার ছাড়িয়ে পেরোতে হয় চেঙ্গী নদী। ফসলি জমি ও পাহাড়ের পাদদেশ দিয়ে হাঁটতে হয়। খাগড়াছড়ি জেলা সদর থেকে প্রায় দেড় ঘণ্টার পথ।
দুপুর ১২টার দিকে অনিল পাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, একটি ছোট্ট টিলার উপরে একটি আধাপাকা টিনসেডের ঘর। এটি অতুল চাকমার। তিনি পরিবার নিয়ে রাঙামাটি শহরে থাকেন। বাড়ির চারপাশেই রয়েছে ফলের বাগান। এই বাড়িটির ৫০ গজ উত্তরে আরেকটি বাড়ি। এরপর বিরান ভূমি, অনেক দূরে পাড়া।
এলাকাটি দুর্গম বলে তখনও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো সদস্য গিয়ে সেখানে পৌঁছায়নি। হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়ে সকাল থেকেই সেখানে জড়ো হয়েছেন জনপ্রতিনিধি, ইউপিডিএফের নেতাকর্মী, নিহত ও নিখোঁজদের স্বজন এবং আশপাশের লোকজন। তারা সংখ্যায় প্রায় ৫০ জনের মত।
নিহতের স্বজনরা কেউ আশপাশে বসে কাঁদছিলেন; কেউ কেউ তাদের সান্ত্বনা দিচ্ছিলেন। অনেকেই চোখেমুখে ছিল ভয় আর আতঙ্কের ছাপ।
লম্বা ঘরটিতে সামান্য আসবাবপত্র, রান্নার চুলা ও খাট রয়েছে। কাপড়-চোপড় এলোমেলো। তার মধ্যেই পড়ে আছে বিপুল ও লিটনের মরদেহ। আর ঘরের পেছনের আম গাছের নীচে রুহিন ও উঠানে সুনীলের মরদেহ পড়ে ছিল। উঠানে ও আশপাশে ২৩টি গুলির খোসা পড়েছিল।
সেখানে থাকা ইউপি চেয়ারম্যান জয় কুমার চাকমা বলেন, “রাতে যখন হামলা হয় তখন পাড়াবাসী প্রচণ্ড গোলাগুলির শব্দ শুনতে পেয়েছে। অনেকক্ষণ ধরেই গোলাগুলি হয়েছে। কিন্তু পাহাড়ে রাতের অন্ধকারে কোথায় গোলাগুলি হচ্ছে সেটা বোঝা যায় না। তাই রাতে আমরা বুঝতে পারিনি। তবে বিষয়টি রাতেই আইনশৃঙ্খলাকে আমরা জানিয়েছি।”
স্থানীয় আরেকজন বাসিন্দা বলেন, “রাতে গোলাগুলি হলেও বের হওয়ার কোনো সুযোগ ছিল না। সকালে সবাই এখানে এসেছি। এসে চারটা লাশ পড়ে থাকতে দেখছি।”
আশপাশের গ্রাম থেকেও বেশ কয়েকজন নারী-পুরুষ-শিশু এসেছে। তারা দূরে বসেছিলেন। কিন্তু চেষ্টা করেও কারও সঙ্গে কথা বলা যায়নি। তারা কথা বলতে চাননি।
‘প্রতিরোধের কোনো সুযোগ ছিল না’
নিহতদের মধ্যে সুনীল ত্রিপুরার হাত পেছন থেকে বাঁধা অবস্থায় উঠানে পড়ে ছিল।
যে ঘরে তারা অবস্থান করছিলেন সেখাকার দেয়ালে গুলির চিহ্ন দেখা গেছে, ইট ভেঙে পড়েছে। যে আম গাছের নীচে রুহিনের লাশ পড়ে ছিল তার পাশে আরেকটি আম গাছের চারা আছে। সেই গাছের কাণ্ড ভেদ করে গেছে গুলি।
ইউপিডিএফ এর দুধকছড়া ইউনিটের সাংগঠনিক সম্পাদক সুবোধ চাকমা বলছিলেন, “এখানে যারা ছিলেন তারা নিরস্ত্র ছিলেন। কোনো ধরনের প্রতিরোধের সুযোগ তাদের ছিল না। তাদেরকে ধরে ধরে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
সুনীলের হাত পেছন থেকে বাঁধা থাকার ব্যাপারে জানতে চাইলে সুবোধ চাকমা বলেন, “হয়তো যে তিনজনকে অপহরণ করা হয়েছে তাদের সঙ্গে তাকে নিয়ে যেতে চেয়েছিল দুর্বৃত্তরা। তিনি হয়তো সহকর্মীদের রেখে যেতে চাননি। তাই তাকে হাতবাঁধা অবস্থাতেই গুলি করে হত্যা করেছে।”
বিপুল চাকমার বাড়ি পানছড়িতেই। অনিল পাড়ায় যারা জড়ো ছিলেন তাদের মধ্যে বিপুলের আত্মীয়-স্বজন ছিলেন বেশ কয়েকজন।
বিপুল চাকমার কাকী গৌরি চাকমা বার বার ঘরে লাশটি দেখছিলেন আর চোখের জল মুছছিলেন।
খাগড়াছড়িতে ইউপিডিএফের ৪ জনকে গুলি করে হত্যা
পাহাড়ে ৪ ইউপিডিএফ নেতা হত্যা: ২০ ঘণ্টা পর লাশ উদ্ধার
তিনি বলেছিলেন, “বিপুলকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।”
স্থানীয় আরেক বাসিন্দা ভাগ্যধন চাকমা বলেন, “পাহাড়ি-পাহাড়ি ভাই-ভাই। তাদেরকে এভাবে অন্যায়ভাবে কেন হত্যা করবে? আমরা এই ঘটনার বিচার চাই।”
কেন বা কারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে এ নিয়ে স্থানীয়রা কোনো কথা বলতে চাননি। এ নিয়ে তাদের কোনো কথা বলতেও শোনা যায়নি।
তবে স্থানীয় একজন নারী বলছিলেন, “পাহাড়ের মানুষ এ ধরনের ঘটনায় অভ্যস্ত। এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে। ফলে এখানে সবাই আসলে আতঙ্কিত। ভয়ে আছে।”
যা বলছে ইউপিডিএফ
চারজন খুন ও তিনজন অপহরণের ঘটনায় বিকেলে বিবৃতি দিয়েছে ইউপিডিএফ ও সহযোগী সংগঠনগুলো। এতে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। পাশাপাশি হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান নেতারা।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “খুন গুম করে জনগণের ন্যায্য আন্দোলন দমন করা যায় না। অতীতে অসংখ্য নেতাকর্মীকে হত্যা করার পরও ইউপিডিএফকে আন্দোলন থেকে বিচ্যুত করা যায়নি, ভবিষ্যতেও যাবে না।
তারা পার্বত্য চট্টগ্রামে অরাজকতা সৃষ্টিকারী খুনি-সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে এলাকায় এলাকায় গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
পানছড়ি বাজার বয়কটের ঘোষণা
এ ঘটনা প্রতিবাদে বিবৃতিতে ইউপিডিএফ কিছু কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে রয়েছে- ১৩-১৫ ডিসেম্বর প্রতিবাদ সমাবেশ ও শোক সভা, ১৫ ডিসেম্বর থেকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত এক মাস পানছড়ি বাজার বয়কট, ১৭ ডিসেম্বর পানছড়ি উপজেলায় সাধারণ ধর্মঘট এবংও ১৮ ডিসেম্বর খাগড়াছড়ি জেলায় সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধের ঘোষণা।
আরও পড়ুন:
শক্তিমানের শেষকৃত্যে যাওয়ার পথে গাড়িতে গুলি, নিহত ৫
রাঙামাটিতে উপজেলা চেয়ারম্যান শক্তিমানকে গুলি করে হত্যা
পাহাড়ে ৬ হত্যার ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি