পিপি জানান, মামলায় অন্য তিন আসামির বিচার-কাজ শিশু আদালতে শুরু হয়েছে।
Published : 16 Nov 2023, 06:46 PM
সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় দোকান কর্মচারীকে হত্যার দায়ে দুজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
সিলেটের জ্যেষ্ঠ দায়রা জজ মশিউর রহমান চৌধুরী বৃহস্পতিবার দুই আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন বলে আদালতের পিপি নিজাম উদ্দিন জানান ।
দণ্ডিতরা হলেন- মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার ভোলারকান্দি গ্রামের শাকিল (২০) ও একই এলাকার সুমন আহমেদ (২২)।
যাবজ্জীবনের পাশাপাশি তাদের ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং অপর একটি ধারায় আরও ২ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
এ ছাড়া অন্য আরও একটি ধারায় প্রত্যেককে ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২ হাজার টাকা জরিমানা; অনাদায়ে ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
এ মামলার অন্য তিন আসামির বিচার কাজ শিশু আদালতে শুরু হয়েছে বলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নিজাম উদ্দিন জানান।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, জেলার ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার ঘিলাছড়া ইউনিয়নের নিজ ঘিলাছড়া ইছাপুর গ্রামে ঋষিকেশ দে’র বাড়ির সামনের মুদির দোকানের কর্মচারী ছিলেন সজল বিশ্বাস পটল (৩৮)। স্থানীয় তিন শিশু প্রায়ই ওই দোকানে আসত। দোকানের পুরোনো কর্মচারী হিসেবে সজল বিশ্বাসের কাছ থেকে শিশুরা বাকিতে জিনিসপত্র নিত। বাকির টাকা না দিয়েই ফের বাকিতে মালামাল দেওয়ার জন্য দোকান কর্মচারী সজলকে তিন শিশু চাপ দিচ্ছিল। এ নিয়ে সজলের সঙ্গে ওই শিশুদের মনোমালিন্য হয়।
মামলায় আরও বলা হয়, ২০২২ সালের ২০ জুলাই রাতে স্থানীয় তিন শিশু ওই এলাকায় বেড়াতে আসা শাকিল ও সুমনকে সঙ্গে নিয়ে দোকানের সামনে অবস্থান করে সজলকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
এদিকে, সজল প্রতিদিনের মত দোকান মালিকের বাড়ি থেকে রাতের খাবার খেয়ে দোকানে ঘুমাতে আসেন।
ওই রাতে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী চারজন দোকানে ঢুকে সজলের গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন।
এ সময় দোকানের বাইরে রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে স্থানীয়দের আসা-যাওয়ার দিকে লক্ষ্য রাখছিলেন আরেক জন।
আসামিরা সজলের মৃত্যু নিশ্চিত করে দোকানের ক্যাশ থেকে নগদ ৩ হাজার ২৩০ টাকা নিয়ে মরদেহ দোকানের মেঝেতে ফেলে রেখে যান।
খবর পেয়ে ঘটনার পর দিন ভোরে থানা পুলিশ গিয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় ঘিলাছড়া আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকা থেকে শাকিল ও সুমনসহ চারজনকে আটক করে।
পুলিশ জানায়, তখন আটকরা স্থানীয়দের সামনে সজল হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। তাদের দেওয়া তথ্যে জড়িত অপর এক শিশুকে আটক করা হয়।
এ ঘটনায় দোকান মালিক ঋষিকেষ দে বাদী হয়ে ফেঞ্চুগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
শিশুসহ তিনজন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। মামলায় ৩১ সাক্ষীর মধ্যে ১৯ জন সাক্ষ্য দেন।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি মো. নিজাম উদ্দিন।
মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হওয়া দুই আসামির আইনজীবী ছিলেন মো. জয়নাল আবেদীন।
মামলায় রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী দেবব্রত চৌধুরী লিটন।