নারী-পুরুষ মিলে এই তিনকেন্দ্রের ভোটার সংখ্যা সাত হাজার ৯৪৩ জন।
Published : 25 May 2023, 11:50 AM
উৎসবের আমেজে অনুষ্ঠিত হচ্ছে গাজীপুরে সিটি করপোরেশনের নির্বাচন। ভোটকেন্দ্রের সামনে ভোটারদের লক্ষ্যণীয় উপস্থিতির মধ্যে ভোটগ্রহণ চলছে কিছুটা ধীরগতিতে। তার মধ্যে একটি ভবনেই তিনটি আলাদা কেন্দ্র থাকায় বাড়তি ভোগান্তিতে পড়েছেন গাজীপুরে শহরের মদিনাতুল উলুম আলিম মাদ্রাসায় আসা ভোটাররা।
এই মাদ্রাসার একটি তিনতলা ভবনেই তিনটি কেন্দ্র থাকায় নারী-পুরুষদের ভবনের সামনে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। আর তিনটি কেন্দ্রের প্রায় আট হাজার ভোটারদের যাতায়াত করতে হচ্ছে একটি সিড়ি দিয়েই। তাই মাঝেমাঝেই ভবনের সামনে বেধে যাচ্ছে ভোটারদের ঝটলা।
গাজীপুর পুলিশের উপ-কমিশনার রেজওয়ান আহমেদ জানান, “মাদ্রাসার ক্যাম্পাসটিতে জায়গা কম। তার মধ্যে একই ভবনে তিনটি কেন্দ্র থাকলেও সিড়ি মাত্র একটি। সেটিও বেশ সরু। সেই সিড়ি দিয়ে ওঠানামা করতে ভোটারদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ”
একইসঙ্গে শৃঙ্খলা রক্ষা করতেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বেগ পেতে হচ্ছে বলে জানান তিনি।
এই ভবনের ১৮২ নম্বর কেন্দ্র মদিনাতুল উলুম আলিম মাদ্রাসা (দোতলা পশ্চিম ভবন) ও ১৮৩ নম্বর কেন্দ্র মদিনাতুল উলুম আলিম মাদ্রাসা (তিনতলা পশ্চিম ভবন) দুইটি নারীদের জন্য। এই দুই কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা যথাক্রমে ২ হাজার ৬৯৫ ও ২ হাজার ৬৭৫ জন।
১৮৪ নম্বর কেন্দ্রটি মদিনাতুল উলুম আলিম মাদ্রাসায় (দোতলা উত্তর ভবন) পুরুষ ভোটারদের। সেখানে ভোট দিচ্ছেন ২ হাজার ৫৭৩ জন ভোটার।
১৮৩ নম্বর কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা অনিক সাহা বলেন, একটিমাত্র সিঁড়ি দিয়ে তিনটি কেন্দ্রের ভোটারা ওঠানামা করায় ভোট গ্রহণে বেগ পেতে হচ্ছে।
তিনি জানান, তার কেন্দ্রে সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ভোট দিতে পেরেছেন ২৩১ জন নারী।
একই ভবনের ২৮২ নম্বর কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন জানান, তার কেন্দ্রের আটটি বুথে সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ভোট দিতে পেরেছেন ২৬০ জন নারী ভোটার।
তবে এই কেন্দ্রে এক ভোটার ‘ফিঙ্গারপ্রিন্ট’ জটিলতায় ভোট দিতে পারেননি বলে জানিয়েছেন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা।
তিনি জানান, নগরীর বিলাসপুর এলাকার বাসিন্দা জাহানারা বেগম আঙ্গুলের ছাপ না মেলায় ভোট দিতে পারেননি। একই কারণে এই নারী নিজের নামে কোনো মোবাইল সিমও রেজিস্ট্রেশন করতে পারেননি বলে জানিয়েছেন।
এই ভবনের দোতলার এক অংশে থাকা ১৮৫ নম্বর কেন্দ্রটি পুরুষদের জন্য। সেখানকার প্রিজাইডিং কর্মকর্তা তুহিনূর রহমান জানান, এই কেন্দ্রের মোট ভোটার সংখ্যা ২৫৭০ জন। এর মধ্যে ৭টি বুথে সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ভোট দিয়েছেন ২১৫ জন।
তবে এই কেন্দ্রে একটি ইভিএমে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেওয়ায় ভোট গ্রহণ বিঘ্নিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা। তিনি বলেন, বিশেষজ্ঞদের খবর দেওয়া হয়েছে। ত্রুটি সারাতে তারা কাজ করছেন।
এদিকে এই মাদ্রাসার আলাদা ভবনের ১৮৪ নম্বর পুরুষ কেন্দ্রটির প্রিজাইডিং কর্মকর্তা মো. মমিন উদ্দিন জানান, সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত এই কেন্দ্রে সাতটি বুথে ভোট দিতে পেরেছেন ১৭৫ জন। প্রতিটি বুথে গড়ে ২৫ জন ভোট দিতে পেরেছেন। যা মোট ভোটারের ৬.৮০ শতাংশ।
তিনি বলেন, এখনও ইভিএমে কোনো যান্ত্রিক ত্রুটি হয়নি। তবে অনেকেই প্রথমবার ইভিএমে ভোট দিতে এসেছেন। তাদের ভোট দেওয়ার পদ্ধতি বুঝিয়ে দিতে কিছুটা দেরি হচ্ছে। কিন্তু মানুষ আগ্রহের সঙ্গেই ভোট দিতে অপেক্ষা করছেন।
প্রথমে ভোট গ্রহণে কিছুটা বেশি সময় লাগলেও এখন তার গতি ধীরে ধীরে বাড়ছে বলে জানান এই নির্বাচনী কর্মকর্তা।
এদিকে এই কেন্দ্রগুলোয় মেয়রপদে আওয়ামী লীগ, লাঙ্গল ও হাতপাখার পোলিং এজেন্ট দেখা গেলেও অন্য মার্কার প্রার্থীদের এজেন্ট দেখা যায়নি।
তবে কাউন্সিলর প্রার্থীদের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক এজেন্ট দেখা গেছে ভোটের কক্ষগুলোয়।