Published : 14 Jun 2023, 11:29 PM
প্রবাসীর সঙ্গে প্রেম ও আর্থিক বিষয়ে দ্বন্দ্বের কারণে নোয়াখালী শহরে মা ও মেয়েকে হত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।
বুধবার সন্ধ্যায় সুধারাম মডেল থানায় আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম এ কথা জানান।
ঘটনার পর এলাকাবাসীর হাতে আটক আলতাফ হোসেনকে (২৮) জিজ্ঞাসাবাদে এ তথ্য জানা গেছে বলে পুলিশ সুপার জানান। আলতাফ লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চর মেহার গ্রামের বাসিন্দা।
বুধবার সকালে জেলা শহরের বার্লিংটন মোড়ে ফজলে আজিম কচি মিয়ার বাড়ির দ্বিতীয় তলায় স্ত্রী নূর নাহার বেগম (৪৫) ও তার স্কুল পড়ুয়া মেয়ে ফাতেমা আজিম প্রিয়ন্তী (১৬) ছুরিকাঘাতে খুন হন। প্রিয়ন্তী শহরের হরিনারায়ণপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, আলতাফ হোসেন প্রবাসে থাকাকালে রং নম্বরে গৃহবধূ নূর নাহার বেগমের সঙ্গে পরিচয় হয় এবং পরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আলতাফকে ওমান থেকে দেশে এসে ব্যবসা করার প্রস্তাব দেন নুর নাহার। আলতাফকে ব্যবসার মূলধন দেবেন বলেও আশ্বাস দেন তিনি।
“সেই আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৮ জুন ওমানের ভিসা বাতিল করে দেশে আসেন আলতাফ। এরপর নূর নাহারের সঙ্গে তার বাসায় কয়েকবার দেখা করে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ব্যবসার টাকা চান আলতাফ। কিন্তু টাকা না দিয়ে নূর নাহার টালবাহানা করতে থাকেন।”
এসপি শহীদুল বলেন, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পুনরায় টাকার জন্য আলতাফ নূর নাহারের বাসায় যান। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটির পর্যায়ে আলতাফকে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন নূর নাহার।
“এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আলতাফ সঙ্গে থাকা ছুরি দিয়ে নূর নাহারকে উপর্যুপরি আঘাত করেন। চিৎকার শুনে পাশের কক্ষে ঘুমিয়ে থাকা মেয়ে প্রিয়ন্তি জেগে ওঠেন এবং মাকে রক্ষায় এগিয়ে গেলে তাকেও উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করেন আলতাফ।”
প্রতিবেশীর বরাতে এসপি বলেন, আহত প্রিয়ন্তী দৌড়ে নিচ তলার ভাড়াটিয়ার বাসার দরজায় ধাক্কা দিলে তারা দরজা খুলে দেন; দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে প্রিয়ন্তী ‘ডাইনিং রুমের’ মেঝেতে অচেতন হয়ে লুটিয়ে পড়েন।
নোয়াখালীতে বাসায় ঢুকে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা
“স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এদিকে ছুরিকাঘাতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে নূর নাহার বেগম ঘটনাস্থলেই মারা যান।”
এসপি জানান, ঘটনাস্থল থেকে পালানোর সময় স্থানীয়রা আলতাফকে ধরে পুলিশে দেয়। পরে থানা হেফাজতে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সে সব খুলে বলে।
নিহতদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে; এ ঘটনায় মামলা দায়ের প্রস্তুতি চলছে বলে পুলিশ জানায়।