২০১৩ সালে বিএনপির প্রার্থী এক লাখ ৮০ হাজার ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়, ২০১৮ সালে ধানের শীষের প্রার্থী এক লাখ নয় হাজার ভোট পেয়েও হেরে যান।
Published : 10 Jun 2023, 11:54 AM
দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে খুলনা সিটি করপোরেশনে মেয়র পদে ভোটের লড়াইয়ে কোনো প্রার্থী নেই, কাউন্সিলর পদে যারা নির্বাচন করছেন তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে, প্রচারে অংশ নেওয়ায় ১১ নেতাকে দেওয়া হয়েছে কারণ দর্শানোর নোটিস, ভোটাররা যেন কেন্দ্রে না যায় সেজন্য বার বার দল থেকে সতর্ক করা হয়েছে। এতকিছুর পরও খুলনায় ‘বিএনপি ভোটব্যাংক’ নিয়ে আলোচনা ও ভাবনার কথা এসেছে খোদ প্রার্থী থেকে শুরু করে সাধারণ ভোটারদের কাছ থেকে।
ভোটের সময় যত কাছে আসছে বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত কাউন্সিলর প্রার্থীদের কাছে প্রধান চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে দলের কর্মী-সমর্থক ভোটারদের কেন্দ্রে নিয়ে আসা। শেষ মুহূর্তে তারা বার বার সাধারণ ভোটারদের পাশাপাশি তৃণমূলের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের কাছে ধরনা দিচ্ছেন ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য।
মহানগর বিএনপির নেতা, কাউন্সিলর প্রার্থী ও বিএনপির সাধারণ সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে কট্টর বিএনপি সমর্থকদের একটা বড় অংশ এবার কেন্দ্রমুখী না হওয়ার সম্ভাবনা আছে। আরেকটি অংশ কাউন্সিলর প্রার্থীদের জন্য ভোটকেন্দ্রে যাবেন এবং কাউন্সিলরের পাশাপাশি মেয়র পদেও ভোট দেবেন।
অপর একটি অংশের ভাষ্য, তারা কাউন্সিলর প্রার্থীকে ভোট দিয়ে চলে আসবেন; মেয়র পদে কাউকে ভোট দেবেন না। যদিও ইভিএমের ভোটে এমনটা সম্ভব না। মেয়র, সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর তিনটি পদেই ভোটাধিকার প্রয়োগ না করলে সেটি বাতিল বলে গণ্য হবে।
অপরদিকে একসময় বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোটের সঙ্গী বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নেতারা বলছেন, কয়েকটি ওয়ার্ডে তাদের নেতারা কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ফলে ওইসব ওয়ার্ডে দলের নেতাকর্মীরা ভোট দিতে যাবেন। নিয়ম মেনে তারা মেয়র প্রার্থীকেও ভোট দেবেন। এ নিয়ে দলের পক্ষ থেকে কোনো নির্দেশনা বা নিষেধাজ্ঞা নেই।
১২ জুন অনুষ্ঠেয় এ র্নিবাচনের প্রচার এখন তুঙ্গে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত নগরীর প্রতিটি মহল্লা ১৮০ জন প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের পদচারণায় মুখরিত। শুক্রবার প্রার্থীদের নিজ এলাকার মসজিদের নামাজ শেষে ভোটারদের কাছে দোয়া চাইতে দেখা গেছে।
পাড়ার মোড়ে মোড়ে চায়ের দোকানে আলাপের প্রধান অনুষঙ্গ এখন নির্বাচন। তবে আলোচনার কেন্দ্রে আছেন কাউন্সিলর প্রার্থীরাই। এরই মধ্যে অধিকাংশ ভোটার কাকে ভোট দেবেন তা নিয়ে মনস্থির করে ফেলেছেন।
১৯৯০ সালে খুলনা সিটি করপোরেশন গঠনের পর এ পর্যন্ত পাঁচটি নির্বাচন হয়েছে। এর মধ্যে তিনবার মেয়র হিসেবে বিএনপির প্রার্থীকে বেছে নিয়েছেন খুলনাবাসী। বাকি দুবার জয় পেয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক। প্রবীণ ও অভিজ্ঞ এই রাজনীতিবিদ এবারও লড়ছেন।
২০১৩ সালে বিএনপি প্রার্থী মনিরুজ্জামান মনি যখন মেয়র হয়েছিলেন তিনি এক লাখ ৮০ হাজার ভোট পেয়েছিলেন। তালুকদার আব্দুল খালেক পেয়েছিলেন এক লাখ ১৯ হাজার ভোট। সেবার ভোটার ছিল ৪ লাখ ৪০ হাজার ৫৬৬ জন। ভোট পড়েছিল ৬৮ দশমিক ৭০ শতাংশ।
২০১৮ সালের নির্বাচনে তালুকদার আব্দুল খালেক এক লাখ ৭৪ হাজার ভোট পেয়ে মেয়র হন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির নজরুল ইসলাম মঞ্জু পান এক লাখ নয় হাজার ভোট। তখন ভোটার ছিল ৪ লাখ ৯৩ হাজার ৯৩ জন। ভোট পড়েছিল ৬২ শতাংশ।
খুলনার স্থানীয় রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা, ৫ লাখ ৪৩ হাজার ভোটারের এ নগরীতে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর গড়ে দেড় লাখের মত একটি ‘ভোটব্যাংক’ রয়েছে। এই ভোটের দিকে চোখ রয়েছে অন্য প্রার্থীদের। নানা প্রতিশ্রুতিতে তারা সেই ভোট বাগানোর চেষ্টা করছেন।
‘অনাগ্রহের’ বিপরীতের চ্যালেঞ্জ
বিএনপি নির্বাচনে না থাকায় খুলনার ভোটের মাঠ অনেকটাই জৌলুস হারিয়েছে বলে মানছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। এই অবস্থায় মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রধান চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে ভোটারদের কেন্দ্রে নিয়ে আসা।
অনেকে গাজীপুরের উদাহরণ টেনে বলছেন, গাজীপুরে ক্ষমতাসীন দলের মেয়র প্রার্থীর সঙ্গে নির্বাচিত মেয়র জায়েদা খাতুনের লড়াইয়ের আভাস পাওয়া গিয়েছিল। সেখানে বিএনপির সমর্থক প্রার্থীও ছিলেন। তারপরও সেখানে ভোট পড়েছে ৫০ শতাংশের কম। গাজীপুরের মত উত্তেজনা খুলনায় নেই। ফলে এখানে ভোটারের উপস্থিতি আরও কম হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে।
তবে যেখানে নির্বাচনে প্রার্থীই নেই, সেখানে ভোট নিয়েও বিএনপির কোনো আগ্রহ বা মাথাব্যথা নেই বলে জানিয়েছেন দলটির নগর কমিটির আহ্বায়ক শফিকুল আলম মনা।
তিনি বলেন, “যে নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিচ্ছে না, সেই নির্বাচন নিয়ে দলের কোনো আগ্রহ নেই। ভোটারদেরও আগ্রহ নেই বলে আমার বিশ্বাস।”
ধানের শীষের ভোটার অন্য প্রতীকে ভোট দিতে কেন্দ্রে যাবে, ‘এটা প্রত্যাশা করা ঠিক নয়’ বলেই মনে করেন তিনি।
যারা কোনো প্রার্থীর পক্ষে কাজ করবেন কিংবা ভোট দিতে যাবেন- তাদেরকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ বলে আখ্যায়িত করেন এই বিএনপি নেতা।
নগর বিএনপির সদস্যসচিব শফিকুল আলম তুহিন বলেন, দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে এই সরকারের অধীনে সিটি নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করার অভিযোগে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের ১১ নেতাকর্মীকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়েছে।
গত ৩ জুন দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে কাউন্সিলর প্রার্থী হওয়ায় নয় নেতাকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে।
নেতাকর্মীদের সিটি করপোরেশন নির্বাচনী কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে গত ৫ জুন চিঠি দেওয়া হয়েছে। নগরীর প্রতিটি থানা বিএনপির আহ্বায়ক, সদস্যসচিব, ওয়ার্ড কমিটির আহ্বায়ক, সদস্যসচিবসহ দলটির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের সতর্ক করে এ চিঠি পাঠানো হয়েছে।
নগর বিএনপির সদস্যসচিব স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, “বিএনপি বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারই অংশ হিসেবে খুলনা সিটি নির্বাচনে নয়জন কাউন্সিলর প্রার্থীকে দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।”
“যদি কোনো নেতাকর্মী নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকেন, তাহলে কেন্দ্রে তাদের নাম পাঠানো হবে।”
তবে বিএনপিপন্থি একজন কাউন্সিলর প্রার্থী বলেছেন, “আমাদের কর্মীদের কেন্দ্রে নেওয়ার চেষ্টা থাকবে।“
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) খুলনা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কুদরত ই খুদা বলেন, “আগে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখা যেত। কিন্তু এবার বিএনপির মতো বড় দল বর্জন করায় নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হবে এমন চিন্তা করার সুযোগ নেই। সাকুল্যে ভোটই পড়তে পারে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ।”
বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ উজ জামান বলেন, “বিএনপি নির্বাচনে এলে হয়ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হত। বিএনপির কাউন্সিলর প্রার্থীরা তাদের সমর্থকদের কেন্দ্রে নিতে পারলেও বিএনপির কর্মীরা এবার সেভাবে ভোটকেন্দ্রে যাবেন না বলে মনে হচ্ছে।”
খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্যসচিব বাবুল হাওলাদার বলেন, “এবারের সিটি ভোট নিয়ে সাধারণ ভোটারদের আগ্রহ কম। তবে কাউন্সিলর প্রার্থীরা সাড়া ফেলেছে।”
এদিকে পাঁচটি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হয়েছেন জামায়াতের পাঁচ নেতা। জেলা ও নগরীতে দলটির বেশ সমর্থক রয়েছে।
ভোটের ব্যাপারে জানতে চাইলে খুলনা নগর জামায়াতে ইসলামীর আমির মাহফুজুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, “অনেক নেতা এবং তাদের পরিবার নিজ এলাকায় জনপ্রিয়। তারা এর আগেও স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে ব্যক্তিগত উদ্যোগে অংশ নিয়েছেন। তারই ধারাবাহিকতায় এবারও কেউ কেউ প্রার্থী হয়েছেন।”
খুলনা নগর জামায়াতে ইসলামীর কয়েকজন নেতাকর্মীর সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, জামায়াতের ভোটাররা কাউন্সিলর পদে তাদের প্রার্থীদের ভোট দিলেও মেয়র পদে হয়ত একক কোনো প্রার্থী তাদের ভোট পাবেন না।
ভোট বাড়াতে ব্যাকুল লাঙ্গল, হাতপাখা
গত দুই নির্বাচনে অংশ নেওয়া দলগুলোর মধ্যে যারা এবারের ভোটের মাঠে রয়েছে, তার মধ্যে আওয়ামী লীগের পর ভোটার বেশি রয়েছে ইসলামী আন্দোলনের। নির্বাচনকে ঘিরে প্রচারে এবার সাংগঠনিক পূর্ণ শক্তি নিয়োগ করেছে চরমোনাই পীরের দলটি। নগরজুড়ে মেয়র প্রার্থী মাওলানা আবদুল আউয়ালের পোস্টার চোখে পড়ার মত।
দলটির নেতা-কর্মীদের দাবি, নগরীতে পীরের ভক্ত, অনুরাগীদের সংখ্যা অনেক। তাদের বড় ‘ভোটব্যাংক’ রয়েছে।
প্রার্থী না দেওয়ায় বিএনপির ভোট তাদের পক্ষে আসবে বলে মনে করছেন তারা। পাশাপাশি ‘ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী’ অন্যান্য দলের ভোটও হাতপাখায় পড়বে বলে বিশ্বাস তাদের।
হাতপাখার মেয়র পদপ্রার্থী মাওলানা আব্দুল আউয়াল বলেন, “এখন মানুষ চায় ইসলামী শাসন, সামাজিক ন্যায়বিচার, মানবিক মর্যাদা। জনগণ ভোট দেওয়ার সুযোগ পেলে খুলনা সিটি নির্বাচনে নীরব বিপ্লব ঘটবে ইনশাআল্লাহ।
“বিএনপির সমর্থকরা সরকারের প্রতি অনাস্থা জানিয়েছে। সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন হলে মানুষ আমাদের বেছে নেবে।”
২০১৮ সালের বিপর্যয় কাটাতে জাতীয় পার্টি থেকে এবার মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে দলটির জেলা সভাপতি শফিকুল ইসলাম মধুকে। যদিও তিনি ২০১৩ সালে মেয়র পদে নির্বাচন করে মাত্র হাজার তিনেক ভোট পেয়েছিলেন।
এ নির্বাচনে নিজেকে ‘শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী’ দাবি করে মধু বলেন, “২০১৩ সালে নির্বাচনে দোয়াত-কলম প্রতীক ছিল, এবার লাঙ্গল। বিএনপি মাঠে না থাকায় তাদের সমর্থকদের একটা অংশ আমাকে ভোট দেবেন বলে আমি বিশ্বাস করি। আমি লড়াইয়ে থাকব।”
ফরিদপুরের আটরশি পীরের রাজনৈতিক দল জাকের পার্টি এবারই প্রথম এখানে নির্বাচন করছে। তাদের মেয়র প্রার্থী এস এম সাব্বির হোসেন লড়ছেন গোলাপ ফুল প্রতীকে। পীরের অনেক অনুসারী রয়েছে নগরীতে। তবে দলের অবস্থা খুব একটা সুসংহত নয়।
জাকের পার্টির নেতাদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, তাদের নির্দিষ্ট একটি ভোট রয়েছে, সেটি তারা পাবেন। বিএনপি ও ইসলামী মূল্যবোধের কিছু ভোট পাওয়ার ব্যাপারে তারা আশাবাদী।
স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মেয়র পদে আওয়ামী লীগ প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেকের পাল্লা অনেকটাই ভারী। তিনি নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে রয়েছেন টানা ১৯ বছর। চারবারের সংসদ সদস্য, একবার প্রতিমন্ত্রী এবং দুবার মেয়রের দায়িত্ব পালন করেছেন। তার স্ত্রী হাবিবুন নাহারও উপমন্ত্রী।
২০১৮ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টির নেতা এস এম শফিকুর রহমান মুশফিক দলীয় প্রার্থী হয়ে ভোট পেয়েছিলেন ১ হাজার ৭২ ভোট। এবার দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।
খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন বলেন, মেয়র পদে পাঁচজন, সাধারণ ৩১টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ১৩৬ জন এবং সংরক্ষিত ১০টি ওয়ার্ডে ৩৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এবার ভোটকেন্দ্র রয়েছে ২৮৯টি। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রের সামনে একটি করে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা স্থাপন করা হচ্ছে। এ ছাড়া এক হাজার ৭৩২টি ভোট কক্ষের প্রতিটিতে একটি করে ক্যামেরা স্থাপন করা হচ্ছে।
ভোট হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন-ইভিএমে।