সমাবেশে এ জাতিগোষ্ঠীকে ‘ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী’ নয়, ‘আদিবাসী’ হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবি জানিয়েছেন বক্তারা।
Published : 14 Oct 2023, 06:48 PM
‘দিকুর জবরদখল থেকে মুক্ত কর জীবনটাকে’ স্লোগানে জাতীয় আদিবাসী পরিষদের পঞ্চম কেন্দ্রীয় সম্মেলন নওগাঁয় অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এতে রবীন্দ্রনাথ সরেন সভাপতি এবং নরেন চন্দ্র পাহান সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন।
শুক্রবার বিকালে শহরের মুক্তির মোড় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা যোসেফ হাঁসদা।
তিনি বলেন, “আদিবাসীদের ওপর নির্যাতন, নিপীড়ন বন্ধ হয়নি। আদিবাসীদের ওপর ‘দিকুদের’ হত্যা, নির্যাতন, ধর্ষণ, ভূমি জবরদখলসহ অন্যায় অত্যাচারের বিচার পাওয়া যায় না।”
ব্রিটিশ আমলে কোল ও সাঁওতালরা ‘দিকু’ শব্দটি বহিরাগত অর্থে ব্যবহৃত হত। ঝাড়খণ্ড, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা ও ছত্তিশগড়ের জনজাতিগুলোর কাছে ‘দিকু’ শোষক-মহাজনের প্রতিশব্দে পরিণত হয়েছিল। হাল-আমলে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীগুলোর কাছে দখলদার বাঙালিরা ‘দিকু’ নামের আতঙ্কে পরিণত হয়েছে।
এই আতঙ্ক থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এবারের সম্মেলনে বঞ্চনা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য নেতারা, ‘ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী’ নয়, ‘আদিবাসী’ হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি পাওয়ার দাবি জানিয়েছেন এবং সমতলের ‘আদিবাসীদের’ জন্য পৃথক মন্ত্রণালয় ও ভূমি কমিশন গঠনের দাবি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
সম্মেলনের শুরুতে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহীদ মিনারে এসে সমাবেশে মিলিত হয়।
রবীন্দ্রনাথ সরেনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সহসম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক ফারহা তানজীম তিতিল, বীর মুক্তিযোদ্ধা ময়নুল হক মুকুল, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হরেন্দ্রনাথ সিং, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মানিক সরেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সভাপতি বিচিত্রা তির্কী, রংপুর জেলা সভাপতি বিমল খালকো, গাইবান্ধা জেলা সভাপতি ফিলিমন বাস্কে, পাবনা জেলা সভাপতি আশিক বানিয়াস, নাটোর জেলা সভাপতি রঘুনাথ এক্কা, নওগাঁ জেলার সদস্যসচিব মার্টিন মূর্মূ ও মালতী মুণ্ডা।
সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে সর্বসম্মতিক্রমে রবীন্দ্রনাথ সরেনকে পুনরায় সভাপতি, নরেন চন্দ্র পাহানকে সাধারণ সম্পাদক এবং সূভাষ চন্দ্র হেমব্রমকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে কার্যনির্বাহী কমিটি ঘোষণা করা হয়।
কমিটির অন্যরা হলেন- সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বিচিত্রা তির্কী, ফিলিমন বাস্কে, মহীন্দ্রনাথ পাহান, বাসন্তী মূর্মূ, সুমিলা টুডু, সহসাধারণ সম্পাদক বিমল খালকো, কোষাধ্যক্ষ মার্টিন মূর্মূ, দপ্তর সম্পাদক নকুল পাহান, প্রচার সম্পাদক বিভূতী ভূষণ মাহাতো, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক নিরালা মারডি, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক মানিক সরেন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক খোকন সুইটেন মূর্মূ, আইন বিষয়ক সম্পাদক নবদ্বীপ লাকড়া ও নারী বিষয়ক সম্পাদক সাবিত্রী হেমব্রম।
সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যরা হলেন- হরেন্দ্রনাথ সিং, রঘুনাথ এক্কা, আশিক বানিয়াস, পরেশ সিং, বিশুরাম মুরমু, অজিত কুমার মুণ্ডা, পরিতোষ মুণ্ডা ও লক্ষণ মুণ্ডা।