ঝড়ের মধ্যে সাগরে গেছেন জেলেরা, ফেরাতে তৎপর প্রশাসন

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করা জেলেদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে হবে বলে জানায় উপজেলা প্রশাসন।

ফেনী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 May 2023, 01:19 PM
Updated : 14 May 2023, 01:19 PM

ঘূর্ণিঝড় মোখার দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার কয়েকজন জেলে মাছ ধরতে গেছেন। এ খবর পেয়ে বিষয়টি নিয়ে তৎপর হয়েছেন প্রশাসনের কর্তারা।

রোববার সকাল থেকে বড় ফেনী নদীর উপকূল থেকে অন্তত ১০-১২টি ট্রলার নিয়ে জেলেরা মাছ ধরতে সাগরে গেছেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।  

মাছ ধরতে যাওয়ার খবর পেয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এস এম অনীক চৌধুরী, সোনাগাজী পৌরসভার মেয়র রফিকুল ইসলাম খোকন, চর চান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেনসহ মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তা ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা জেলেপাড়ায় ছুটে যান।

সরেজমিনে জেলেপাড়া গিয়ে জানা যায়, ভোরে জোয়ারের পানি থাকা অবস্থায় উপজেলার চরচান্দিয়া ইউনিয়নে জেলেপাড়ার প্রায় ৪০ জন জেলে ১০-১২টি ট্রলার নিয়ে সাগরে মাছ ধরতে যান। খবর পেয়ে ওই পাড়ায় উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা যান।

তবে ততক্ষণে ওই জেলেরা চলে যাওয়ায় তাদের আটকানো সম্ভব হয়নি বলে প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানান।

এ ছাড়া ওই জেলেপাড়ায় আসা প্রশাসনের লোকজনকে সাগরে যাওয়া জেলেদের পরিচয় দিতে স্বজন বা পাড়ার লোকজন অস্বীকৃতি জানান।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এস এম অনীক চৌধুরী বলেন, “যেসব জেলে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সাগরে মাছ ধরতে গেছে তাদের ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করায় তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নতুন করে আর কোনো জেলেকে নদীতে নামতে দেওয়া হচ্ছে না।”

তিনি বলেন, জেলেদের তো নিজস্ব জেলে কার্ড রয়েছে। তারা বিভিন্ন সময়ে ভাতা পেয়ে থাকেন। তবে ঘূর্ণিঝড় মোখার কোনো ভাতা বা বরাদ্দ এখনও আসে নাই। উপজেলা প্রশাসন থেকে বরাদ্দ পেলে জেলেদের প্রদান করা হবে।

ওই পাড়ার বাসিন্দা জেলে প্রিয় লাল জল দাস বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে গত তিন-চার দিন ধরে প্রশাসনের নির্দেশে জেলেরা নৌকা ও ট্রলারগুলোকে তীরে বেঁধে রেখেছেন। নদীতে না যাওয়ায় খাদ্য সংকট ও ঋণের টাকা পরিশোধ করতে পারছেন না। এ কারণে কিছু জেলে পেটের দায়ে ‘না বুঝে’ সাগরে মাছ শিকার করতে চলে গেছেন।

পাড়ার আরেক জেলে কৃষ্ণলাল জল দাস বলেন, “আমরা জেলেরা প্রতিদিন নদীতে মাছ ধরে তা বিক্রি করে পরিবার চালাই। একদিন মাছ না ধরলে না খেয়ে থাকতে হয়।”

চর খোন্দকার এলাকার জেলে নিরঞ্জন জল দাস বলেন, “ঘূর্ণিঝড় মোখার জন্য উপজেলা প্রশাসন থেকে ২০ টন চাল বরাদ্দ হয়েছে শুনেছি, কই আমরা তো কোনো চাল বা সাহায্য পাইনি। নদীতে না নেমে কয়দিন না খেয়ে থাকব?”