ভুক্তভোগী বলেন, “সিনিয়র ভাইদের জন্য এখন তো বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতেই ভয় করে।”
Published : 23 Feb 2023, 11:46 PM
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিংয়ের শিকার হওয়া এক শিক্ষার্থী ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন।
এ বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি বৃহস্পতিবার দুপুরে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর কাছে থেকে বক্তব্য নিয়েছেন।
তদন্ত কমিটির সঙ্গে কথা বলার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের প্রথম বর্ষের ওই শিক্ষার্থী।
তিনি বলেন, “গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে দ্বিতীয় বর্ষের সিনিয়ররা মুজতবা আলী হলের ১১১ নম্বর রুমে ছেলেদের তিনটি আবাসিক হলের আমাদের ব্যাচের সবাইকে নিয়ে আসেন।
“এক দিন আগেই ওই হলে ১১৭ নম্বর রুমে ওঠেছিলাম আমি। পরের দিন ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে ওই রুমে সিনিয়ররা আমাকে ডাকলে প্রথমে যাই নাই। পরে সিনিয়ররা আমাকে রুম থেকে ডেকে নিয়ে যান। ওই রুমে ইমিডিয়েট সিনিয়র দ্বিতীয় বর্ষের সিআর (ক্লাস রিপ্রেজেন্টেটিভ) সহ ১০-১৫ জন ছিলেন।”
কক্ষের সামনে সিসি ক্যামারে আছে বলেও এ শিক্ষার্থী জানান।
ভুক্তভোগীর দাবি, “আমার এই ছোট্ট জীবনের সবচেয়ে ভয়াবহ রাত ছিল ২০ ফেব্রুয়ারি। সেই রাতে ভাইয়েরা আমাদের ব্যাচের দুজনকে ধর্ষণের দৃশ্য করতে বাধ্য করেন। যৌনকর্মী সেজে দেহ প্রদর্শন ও খরিদদার ধরার দৃশ্য করান। তৃতীয় লিঙ্গদের মত ট্রেনে টাকা নেওয়ার দৃশ্য করানো হয় অনেক বার। কয়েকটি যৌন উত্তেজক গানের দৃশ্য করে দেখাতে বাধ্য করেন।
এ ছাড়া আমাদের কাছে পরিচয় চান এবং পরিচয়টা অনেকবার বলতে বলেন এবং নামের সঙ্গে যৌনতা সম্পকিত শব্দ যোগ করে বলতে বলেন।
বলতে অস্বীকার করলে শারীরিক নির্যাতনের হুমকি দেন; পাশাপাশি অবিরাম ধমক দিতে থাকেন বলে ওই শিক্ষার্থীর অভিযোগ।
ভুক্তভোগী বলেন, “ইমিডিয়েট সিনিয়র ভাইদের জন্য এখন তো বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতেই ভয় করে আমাদের।”
এ ঘটনায় বুধবার সকালে ওই শিক্ষার্থী ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের কাছে অভিযোগ দেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ মুজতবা আলী হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক আবু সাঈদ আরফিন খান বলেন, “হলের ১১১ নম্বর কক্ষে সোমবার রাত ১০টায় ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের র্যাগ দিয়েছে বলে জানতে পেরেছি।”
তিনি জানান, বুধবার সকালে এক শিক্ষার্থীর অভিযোগের বিষয়ে প্রাথমিকভাবে সত্যতা পাওয়ায় পাঁচ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. ফজলুর রহমান বলেন, সাময়িক বহিষ্কৃতরা হলেন, ব্যবসায় প্রশাসনের বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের মো. আপন মিয়া, মো. আল আমিন, মো. পাপন মিয়া, মো. রিয়াজ হোসেন ও মো. আশিক হোসেন।
পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে জানিয়ে কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক খায়রুল ইসলাম বলেন, “তদন্ত কাজ চলমান।”