তবে তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওই যুবদল নেতা।
Published : 15 Mar 2025, 07:17 PM
লক্ষ্মীপুরে ঠিকাদারের কাছ থেকে চাঁদা না পেয়ে বেড়িবাঁধের সংস্কার কাজ বন্ধসহ শ্রমিকদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় যুবদল নেতার বিরুদ্ধে।
শনিবার বেলা ১১টার দিকে সদর উপজেলার চর রমণী মোহন ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
মারধরে আহতরা হলেন- শ্রমিক কাসেম সর্দার, ইসলাম সর্দার, জাহের সর্দার ও তিনজন ভেকু চালক।
যার বিরুদ্ধে অভিযোগ, স্থানীয় মনপুরা এলাকার আনোয়ার সম্রাট নিজেকে সদর উপজেলার চর রমণী মোহন ইউনিয়ন যুবদলের সহ সভাপতি বলে দাবি করেছেন।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে জানা যায়, বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে মজু চৌধুরীর হাটে ‘ক্লাইমেট স্মার্ট এগ্রিকালচার অ্যান্ড ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট প্রজেক্ট’ হাতে নেওয়া হয়।
এতে ক্ষতিগ্রস্ত ১০ দশমিক ৪৮ কিলোমিটার বাঁধ সংস্কারের পাশাপাশি ভাঙা অংশে একটি স্লুইস গেইট নির্মাণ করা হবে।
একইসঙ্গে বাঁধ এলাকার ২ কিলোমিটার অংশে ক্যাম্পের খাল পুনখনন করা হচ্ছে।
বাঁধ সংস্কার ও খাল খননে ৫ কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স মোস্তফা অ্যান্ড সন্স কাজটি করছে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে বাঁধের উচ্চতা সাড়ে ৭ মিটার ও উপরিভাগের প্রস্থ ৬ মিটার হবে। এছাড়া প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যয় হবে স্লুইসগেট নির্মাণে। চলতি বছরের জুনে কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
এ কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের অভিযোগ, শনিবার প্রথমে সম্রাটের পাঠানোর ২০-৩০ জন লোক এসে তাদের কাজে বাধা দেয়। এরপরও কাজ চলমান থাকায় সম্রাট নিজে এসে লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি তাদের পিটিয়ে আহত করেন।
শ্রমিক কাশেম সর্দার বলেন, “শুক্রবার ৩-৪ জন লোক এসে আমাদের কাজ বন্ধ করে দেয়। তারা কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলতে বলেছে।
“শনিবার সকালে কাজ শুরু করার পর লোকজন এসে কাজে বাধা দেয়। তারপরও কাজ বন্ধ না করায় সম্রাট এসে লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি আমাদের পিটিয়ে আহত করে। তারা আমাদের এমপি-মন্ত্রী দেখায়।”
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ক মামুনুর রশিদ বলেন, “বেড়িবাঁধ সংস্কার কাজে কয়েক দফা বাধাগ্রস্ত হয়েছি। আনোয়ার সম্রাট চাঁদা চেয়েছে। তা না দেওয়ায় কাজে বাধা দিয়ে আমার শ্রমিকদের মারধর করেছে।”
চর রমণী মোহন ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি ইউনুছ খান বলেন, “আনোয়ার সম্রাট ইউনিয়ন যুবদলের কমিটিতে আছে। সে আমাদের সঙ্গে রাজনীতি করে।”
অভিযোগ অস্বীকার করে আনোয়ার সম্রাট বলেন, “আমি ব্যবসা করি। আমি বেঁড়িবাধের কাজ বন্ধ করিনি। শ্রমিকদের মারধরের ঘটনায় আমি কিংবা আমার কোনো লোক জড়িত নয়। আমি ঘটনাস্থলই যাইনি।”
জেলা যুবদলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দ রশিদুল হাসান লিংকন বলেন, “আনোয়ার সাবেক যুবদল নেতা ছিলেন। পরে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। তাকে আমরা দল থেকে বিতাড়িত করেছি।”
বেঁড়িবাধের কাজ বন্ধসহ শ্রমিকদের মারধর করায় সংশ্লিষ্টদের প্রতি সম্রাটের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দেন রশিদুল হাসান।
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ঝলক মোহন্ত বলেন, ঘটনাটি তার জানা নেই।
এ ব্যাপারে জানতে লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ-উজ জামান খাঁনের মোবাইল ফোনে কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।