স্মার্ট নগরী গড়ে তোলার কথা বললেন আজমত উল্লা; জাহাঙ্গীর বললেন, নির্বাচনে সবাই সতর্ক থাকুন।
Published : 29 Apr 2023, 12:32 AM
শুক্রবার জুমার নামাজে গিয়ে ভোট ও দোয়া চেয়েছেন গাজীপুর সিটি নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লা খান ও মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম। এ সময় তারা গাজীপুরবাসীর কাছে নানা প্রতিশ্রুতি দেন।
আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লা জুমার নামাজ আদায় করেন গাজীপুর মহানগরের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের চান্দনা চৌরাস্তা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে।
এ সময় নামাজ আদায় করতে আসা মানুষের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি স্মার্ট নগরী গড়ে তোলার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, “গাজীপুর শহর আজ নানা সমস্যায় জর্জরিত। বর্জ্য, অপরিকল্পিত উন্নয়ন, নানা সমস্যায় আবর্তিত আজ নগরবাসী।এর মধ্য দিয়েই এবারের নির্বাচনে অংশ নিয়েছি, দল আমার উপর আস্থা রেখে নৌকা প্রতীক দিয়েছে, ইনশাল্লাহ যদি জয়লাভ করি, তাহলে নগরবাসীকে আধুনিক-স্মার্ট নগরী উপহার দেব। মাদকমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত পরিবেশসম্মত নগর গড়ে তুলব।”
এ সময় নিজের আগের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমি ১৮ বছর টঙ্গী পৌরসভার মেয়র ছিলাম, স্থানীয় সরকারের প্রতিষ্ঠান চালানোর মতো অভিজ্ঞতা আমার রয়েছে। সে অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নগরবাসীকে সঙ্গে নিয়েই সব উন্নয়ন করা হবে।”
পরে তিনি বাসন থানা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের উদ্যোগে তেলিপাড়া এলাকায় একটি কমিউনিটি সেন্টারে যৌথ কর্মিসভায় যোগ দেন।
সেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে সংসদ সদস্য শামসুন্নাহার, গাজীপুর সিটির ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউল্লাহ মণ্ডল, মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক কামরুল আহসান সরকার রাসেল, যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
কর্মিসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিভিন্ন কার্যক্রম ও দিক- নির্দেশনা নিয়ে কথা হলেও সেখানে কেউই ভোট চাননি।
“কর্মিসভায় নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের মতো কোনো কথা ও কাজ করা হয়নি,” বলেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত শামসুন্নহার।
এদিকে, মহানগরের ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের খাইলকুর জান্নাতুল মাওয়া জামে মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করেন স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম।
এ সময় তিনি উপস্থিত মুসল্লিদের নির্বাচনে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।
মেয়র থাকা অবস্থায় তিনি নগরের যে উন্নয়ন করেছেন সে ধারা অব্যাহত রাখতে ভোট ও দোয়া চান জুমার নামাজ আদায় করতে আসা মানুষের কাছে।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তিনি ২০১৮ সালে নির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়ে নগরবাসীর উন্নয়নে কাজ শুরু করেছিলেন্। কিন্তু তিন বছরের মাথায় একটি ভুয়া চিঠির মাধ্যমে তাকে মেয়র পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে তার দাবি।
“আমি সব জায়গায় গিয়েছি, সুবিচারের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে গিয়েছি, আদালতে গিয়েছি। আদালত তিনবার সময় নির্ধারণ করেও রায় দেয়নি।”
নগরবাসীর চাওয়ায় নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন দাবি করে তিনি বলেন, “তারা (নগরবাসী) শুধু একটি প্রতীক চেয়েছে। তাদের কথা মতো আমি একটি প্রতীক তাদের হাতে তুলে দিচ্ছি। বাকিটা নির্ভর করবে তাদের উপর। আমার বিশ্বাস, নগরবাসী আগেও আমার পরীক্ষা নিয়েছে সে পরীক্ষায় আমি উত্তীর্ণ হয়েছি, এবারও আমি উত্তীর্ণ হব ইনশাল্লাহ।
মসজিদে নির্বাচনী প্রচারণার বিষয়ে বক্তব্য নিতে একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি কল কেটে দেন।
নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, “নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দের আগে মসজিদ-মন্দির বা উপসনালয়ে কোনো প্রকার নির্বাচনী প্রচারণা চলানোর বিধান নেই। প্রশান ও অভিযোগ পেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
নির্বাচনী তফসিল অনুযায়ী আগামী ৩০ এপ্রিল মনোনয়নপত্র বাছাই ৮ মে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ। ৯ মে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে ভোট গ্রহণ করা হবে আগামী ২৫ মে।
নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, গাজীপুর সিটি নির্বাচনের ৫৭টি ওয়ার্ডে ভোট নেওয়ার জন্য ৪৭৮টি কেন্দ্র থাকবে, কক্ষ থাকবে ৩ হাজার ৪৯১টি। এ ছাড়া অস্থায়ী ভোট কক্ষের সংখ্যা ৪৮৬টি। এছাড়া প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ৪৭৮ জন, সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ৩ হাজার ৪৯১ জন, পোলিং কর্মকর্তা থাকবেন ৬ হাজার ৯৮২ জন।
নির্বাচনের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম জানান, শেষ দিনে মেয়র পদে ১২ জন প্রার্থী সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ২৯০ জন ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্য পদে ৮২ জন প্রার্থী তাদের মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন।