“মন্নুগেট এলাকায় আমাদের গাড়ি পৌঁছানো মাত্রই লাঠিসোঁটা নিয়ে জুবায়ের অনুসারীরা আমাদের লোকজনের ওপর হামলা করেন।”
Published : 12 Dec 2024, 09:33 PM
গাজীপুরের টঙ্গীর ইজতেমা মাঠে ভারতের মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীদের পাঁচ দিনের জোড় ইজতেমা ঠেকাতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন মাওলানা জুবায়ের অনুসারীরা।
বৃহস্পতিবার বেলা ১টার দিকে টঙ্গীর স্টেশন রোড এলাকায় এ বিক্ষোভ করেন তারা। এ সময় সাদ অনুসারীদের একটি গাড়ি তারা ভাঙচুর করেন। এ ঘটনায় সাদপন্থীদের ইজতেমা আয়োজক কমিটির অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার অপরাধ (দক্ষিণ) মো. হাফিজুল ইসলাম বলেন, “জুবায়ের অনুসারীরা মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে ঘণ্টাব্যাপী ২০১৮ সালে সাদপন্থীদের হামলার বিচারের দাবি জানায়। এ সময় তারা সাদ অনুসারীদের একটি প্রাইভেটকারে ভাঙচুর করে।”
আহতদের মধ্যে তিনজনের পরিচয় জানা গেছে। তারা হলেন-সাদপন্থীদের ইজতেমা আয়োজক কমিটির মুরুব্বি মাওলানা বশির (৫২), মাওলানা আতাউর (৫৪) ও প্রকৌশলী মহিবুল্লাহ। তাদেরসহ আহতদের উদ্ধার করে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ ও তাবলীগ জামাত থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ২৯ নভেম্বর থেকে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত টঙ্গীর ইজতেমা মাঠে ৫ দিনের জোড় ইজতেমা পালন করেন বাংলাদেশি জুবায়েরের অনুসারীরা। এরপর ইজতেমা মাঠে ২০ ডিসেম্বর থেকে ৫ দিনের জোড় ইজতেমা পালনের ঘোষণা দেন মাওলানা সাদ কান্ধলভী অনুসারীরা।
কিন্তু জুবায়ের অনুসারীরা সাদ অনুসারীদের ইজতেমা মাঠে জোড় পালন করতে দেবেন না। পাশাপাশি সরকার থেকেও অনুমতি নেই। এ নিয়ে কয়েকদিন ধরেই দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে সাদ অনুসারীরা ইজতেমা মাঠের পশ্চিম অংশে যান। এ সময় বাধা দেন জুবায়ের অনুসারীরা। ময়দানে প্রবেশ করতে না পেরে সাদ অনুসারীরা পুলিশের সহযোগিতা চাইতে টঙ্গী পূর্ব থানায় যান। পরে পুলিশের সহায়তায় সাদপন্থীরা ময়দানের দিকে রওনা দেন। এ সময় জুবায়ের অনুসারীরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের মন্নুগেইট এলাকায় সাদ অনুসারীদের মাইক্রোবাসে ভাঙচুর চালায়। হামলায় সাদ অনুসারীদের দুইজনের আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়।
ঘটনার বর্ণনায় সাদ অনুসারীদের গণমাধ্যম সমন্বয়ক মো. সায়েম বলেন, “২০ ডিসেম্বর দ্বিতীয় ধাপে জোড় ইজতেমা আয়োজন করতে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে গিয়েছিলাম। পুলিশ সদস্যদের নিয়ে উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলাম। এর মধ্যেই সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন জুবায়ের অনুসারীরা।
“মন্নুগেট এলাকায় আমাদের গাড়ি পৌঁছানো মাত্রই লাঠিসোঁটা নিয়ে জুবায়ের অনুসারীরা আমাদের লোকজনের ওপর হামলা করেন। এ সময় আমাদের দুই সাথি বশির ও আতাউর আহত হন। পাশাপাশি আমাদের গাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়।”
এদিকে জুবায়েরপন্থী ইজতেমা আয়োজক কমিটির মুরুব্বি মাহফুজ হান্নান বলছেন, “সাদপন্থীরা ইজতেমা ময়দানের বিদেশি মেহমানখানায় প্রবেশের চেষ্টা করেন। তাদের ময়দানে জোড় ইজতেমা আয়োজন করার অনুমতি দেওয়া হয়নি। তারা অবৈধভাবে ময়দানে প্রবেশের চেষ্টা করল, আমাদের সাথিরা তাদের প্রতিহত করে।”