মামলায় প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ৪ নভেম্বর আন্নির উপস্থিতিতে কয়েক যুবক জোর করে সুমনকে অপহরণ করে বলে অভিযোগ করা হয়।
Published : 12 Nov 2024, 11:49 AM
শেরপুরে নিখোঁজের সাতদিন পর মাটিচাপা দেওয়া এক কলেজছাত্রের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় তার সহপাঠী তরুণীসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার মধ্যরাতে শহরের সজবরখিলা এলাকার একটি বাড়ির উঠান থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয় বলে জানান শেরপুরের পুলিশ সুপার মো. আমিনুল ইসলাম।
নিহত সুমন মিয়া (১৮) শেরপুর শহরের কসবা বারাকপাড়া নিমতলা এলাকার কৃষক মো. নজরুল ইসলামের ছেলে ও শেরপুর সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র।
গ্রেপ্তার করা হয়েছে- সুমন মিয়ার সহপাঠী আন্নি আক্তার (১৮), তার বাবা মো. আজিম উদ্দিন এবং রবিনকে (১৯)।
আজিম উদ্দিন শহরের বাগরাকসা কাজীবাড়ী পুকুরপাড় এলাকার বাসিন্দা ও শিক্ষক। রবিন শহরের সজবরখিলা মহল্লার পুলিশ সদস্য মো. ফোরকানের ছেলে। তার বাড়ির আঙ্গিনা থেকেই সুমন মিয়ার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার মো. আমিনুল ইসলাম জানান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তিনজনকে আটকের পর সুমনকে হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত হয়। পরে আটকদের তথ্যের ভিত্তিতে মাটিচাপা অবস্থায় সুমনের লাশ উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, একই সঙ্গে পড়াশোনার সুবাদে সুমন মিয়া ও আন্নি আক্তারের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। তবে আন্নি পরবর্তীতে রবিনের সঙ্গে প্রেমে জড়িয়ে পড়েন। এই ‘ত্রিভুজ প্রেমের’ জটিলতায় গত ৪ নভেম্বর থেকে সুমন মিয়া নিখোঁজ ছিলেন।
এ ঘটনায় সুমনের বাবা নজরুল ইসলাম থানায় প্রথমে সাধারণ ডায়েরি এবং পরে আন্নি ও তার বাবা আজিম উদ্দিনসহ কয়েকজনকে আসামি করে অপহরণ মামলা করেন ।
মামলায় প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় গত ৪ নভেম্বর সন্ধ্যায় আন্নির উপস্থিতিতে কয়েক যুবক জোর করে সুমনকে অপহরণ করে একটি অটোরিকশায় উঠিয়ে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ করা হয়।
এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার আমিনুল বলেন, মামলার পর পুলিশ ঘটনার তদন্তের পাশাপাশি অভিযান চালিয়ে প্রথমে আন্নি ও তার বাবাকে গ্রেপ্তার করলেও সুমনের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।
এর মধ্যে মোবাইল ট্র্যাকিং করে সুমনের সর্বশেষ অবস্থান ময়মনসিংহে পাওয়া গিয়েছিল। তারই সূত্র ধরে সোমবার রাতে ময়মনসিংহ থেকে রবিনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরে জিজ্ঞাসাবাদে সুমনকে হত্যার পর শহরের সজবরখিলা এলাকায় নিজ বাড়ির উঠানে লাশ মাটিচাপা দিয়ে রাখার কথা স্বীকার করে রবিন। পরে তার দেখানো জায়গায় মাটি খুঁড়ে সুমনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, পুরো ঘটনাটি পুলিশ গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করেছে। প্রেমঘটিত বিষয়কে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে। লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় ইতিমধ্যে মূল তিন আসামি গ্রেপ্তার হয়েছেন। তদন্তে আরও কেউ জড়িত থাকার বিষয় উঠে এলে তাদেরকেও দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।
আগের খবর