অপারেশন থিয়েটার থেকে তাকে কেবিনে স্থানান্তর করার পর শুরু হয় রক্তক্ষরণ।
Published : 01 Apr 2024, 01:07 PM
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় একটি হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ তুলে তার স্বজনেরা সেখানে ভাঙচুর চালিয়েছে।
উপজেলার মাওনা চৌরাস্তা এলাকায় ‘লাইফ কেয়ার’ হাসপাতালে রোববার রাত পৌনে ১২টায় ভাঙচুরের ওই ঘটনা ঘটে বলে শ্রীপুর থানার এসআই এনায়েত কবির জানান।
নিহত ৩০ বছর বয়সী ইয়াছমিন আক্তার গাজীপুর সদর উপজেলার বানিয়ারচালা পালপাড়া গ্রামের ব্যবসায়ী মো. আসাদুল্লাহ্'র স্ত্রী।
আসাদুল্লাহ্ বলেন, তার স্ত্রীর প্রসব যন্ত্রণা শুরু হলে রোববার দুপুর ১২টার দিকে তাকে লাইফ কেয়ার হাসপাতালে নিয়ে যান। এ সময় চিকিৎসকরা ইয়াছমিনের সিজার করানোর কথা বলেন। পরে ১৪ হাজার টাকায় তারা সিজার করতে চুক্তিবদ্ধ হন এবং ইফতারের পর অস্ত্রোপচার করা হবে বলে হাসপাতাল থেকে জানানো হয়।
কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিকাল ৪টার দিকে হঠাৎ সিজার করার সিদ্ধান্ত নেন। পরে ইয়াছমিন এক ছেলে সন্তানের জন্ম দেন। কিন্তু অপারেশন থিয়েটার থেকে তাকে কেবিনে স্থানান্তর করার পর শুরু হয় রক্তক্ষরণ।
তিনি বলেন, “বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসক ও নার্সদের জানানো হলে তারা আমার স্ত্রীকে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ দেন। এরপরও রক্তক্ষরণ বন্ধ না হওয়ায় রাত ৯টার দিকে ইয়াসমিন নিস্তেজ হয়ে পড়ে। পরে সেখানে চিকিৎসরা উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেন।
“এরপর আমি ও আমার স্বজনরা পাশের একটি হাসপাতাল থেকে ডাক্তার এনে ইয়াছমিনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাই। এ সময় তার পালস পাওয়া না গেলে, চিকিৎসক ও কর্তৃপক্ষ হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায়।”
নিহতের মামা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকের গাফিলতিতে আজ শিশুটি এতিম হয়েছে। আমরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকের শাস্তি দাবি করছি।”
এসআই এনায়েত কবির বলেন, হাসপাতালে ভাঙচুরের খবর পেয়ে শ্রীপুর থানার একাধিক টিম গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ঘটনাস্থলে পাওয়া যায়নি, ততক্ষণে তারা পালিয়ে গেছে।
এ ঘটনায় নিহতের স্বজনরা লিখিত অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে ভাঙচুরের খবরে রাতেই লাইফ কেয়ার হাসপাতাল পরিদর্শন করেন শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইইএনও) শোভন রাংসা।
তিনি বলেন, “হাসপাতালে ওই প্রসূতির স্বজনের সঙ্গে কথা হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।“