গাছের গোড়ার আর্দ্রতা ধরে রাখাতে খড়কুটা দিয়ে ঢেকে দেওয়ার পাশাপাশি শাখায় পানি স্প্রে করার পরামর্শ দিয়েছেন কৃষি গবেষক।
Published : 10 May 2024, 09:37 AM
আর কয়েকদিন পরেই বাজারে আসবে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম। এবার বাগানে এমনিতেই মুকুল কম এসেছে; তার উপর টানা দাবদাহের ঝরে পড়েছে আমের গুটি। এতে একদিকে যেমন আমের ফলন কম হয়েছে, বিপরীতে বাড়তি দামের স্বপ্ন দেখছেন চাষিরা।
গাছে যে আম আছে তা টিকিয়ে রাখতে বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পর করছেন চাষিরা। তবে সব জায়গায় সেচ সুবিধা না থাকায় আকাশের দিকে চেয়ে আছেন অনেকেই।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে এ জেলায় প্রায় ৩৭ হাজার ৬০৪ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। এতে গাছ রয়েছে প্রায় ৭৫ লাখ ৭৯ হাজার ৮২৫টি। আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে চার লাখ ৫০ হাজার টন।
ধানের পর চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলার প্রধান অর্থকরী ফসল হিসেবে আমকে ধরা হয়। এ জেলার আমের চাহিদা বিদেশেও রয়েছে। মৌসুমের শুরুতে এবার তীব্র ঠান্ডা থাকায় গাছে মুকুল এসেছিল দেরিতে। সাধারণত যে বছর গাছে মুকুল বেশি আসে তার পরের বছর মুকুল কম আসে।
শিবগঞ্জ উপজেলার বিনোদপুর এলাকার আমচাষি ও বাগান মালিক মো. শামীম বলেন, “এ বছর বাগানে মুকুল কম আসায় গুটিও কম। প্রচণ্ড গরমে বেশিরভাগ গাছের আম ঝরে পড়ছে। এখনো যে গুটি আছে বৃষ্টি হলে ফলন ভাল পাব। আর আমের ফলন কম হলে, দাম বেশি হয়।”
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মুনজের আলম মানিক বলেন, “এবার আমের অফ ইয়ার। এক বছর গাছে বেশি মুকুল এলে পরের বছর কম আসে। আম ঝরে পড়ার বিষয়টি এখনো তীব্র হয়নি। তবে দাবদাহ দীর্ঘ হলে আমের ফলন কমবে। বাগানে সেচের পরামর্শ দেওয়া হলেও সব জায়গায় সেচ ব্যবস্থা নেই। কৃষি মিটার, বাণিজ্যিক মিটারে বিদ্যুৎ খরচও বেশি। এতে আমের উৎপাদন খরচ বাড়ছে।”
চাষিদের আশাহত না হয়ে বাগান পরিচর্যা চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোখলেসুর রহমান।
তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বিলম্ব শীত, শৈত্যপ্রবাহ ও তীব্র ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে গাছে দেরিতে মুকুল আসে। মুকুলের মাত্রাও ছিল কম; তবে বড় গাছগুলোর চেয়ে ছোট গাছে মুকুল কিছুটা বেশি ছিল। আম বড় হয়ে উঠছে। মাস খানেকের মধ্যে আম বাজারে আসার উপযোগী হয়ে উঠবে। চলমান তাপপ্রবাহ থেকে রক্ষায় বাগানে নিয়মিত সেচ দিতে হবে।
মোখলেসুর রহমান বলেন, গাছের গোড়ার আর্দ্রতা ধরে রাখাতে খড়কুটা দিয়ে ঢেকে দেওয়ার পাশাপাশি শাখায় পানি স্প্রে করা যেতে পারে। তবে অবশ্যই সকাল ১০টার আগে অথবা বিকাল ৫টার পরে এই স্প্রে করতে হবে। ১০ দিন অন্তর অন্তর সেচ চালিয়ে যেতে হবে যত দিন বৃষ্টি না হয়।