আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে তাকে ২৮ মে রাতে বাড়িতে নিয়ে আসা হয় ভুক্তভোগী নারীকে। পরদিন বুধবার দুপুরে বাড়িতেই মারা যান তিনি।
Published : 02 Jun 2024, 01:08 AM
কুড়িগ্রামের চর রাজীবপুরে সংঘবদ্ধ ‘ধর্ষণের’ পর ‘বিষপানে’ গৃহবধূর মৃত্যুর ঘটনায় প্রধান দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার বিকালে রাজিবপুর থানার ওসি আশিকুর রহমান বলেন, শুক্রবার জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ এলাকা থেকে পৃথকভাবে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন- উপজেলার সদর ইউনিয়নের হলপাড়া গ্রামের আবু সামারের ছেলে জয়নাল মিয়া এবং টাঙ্গালিয়া পাড়া এলাকার মো. শহীদ আলীর ছেলে আলম হোসেন ওরফে আলম।
এর আগে রাজীবপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নে ধার নেওয়া টাকা পরিশোধ করতে না পারার সুযোগ নিয়ে কয়েকজন মিলে এক গৃহবধূকে দীর্ঘদিন ধরে দলবদ্ধ ধর্ষণ করছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে।
বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় গণ্যমান্যদের কাছে অভিযোগ করেও বিচার পাননি ভুক্তভোগী নারী। পরে লোকলজ্জার ভয়ে গত ২৪ মে দুপুরে ওই নারী ও তার স্বামী ’বিষপানে আত্মহত্যার’ চেষ্টা করেন বলে তাদের স্বজনদের অভিযোগ।
এ দম্পতির অসুস্থতার খবর পেয়ে স্বজনরা তাদের উদ্ধার করে রাজীবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন স্বামী কিছুটা সুস্থ হলেও অবস্থার অবনতি হয় ভুক্তভোগী নারীর। পরে তাকে জামালপুর সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তিন দিন চিকিৎসা গ্রহণের পর শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হলে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।
কিন্তু আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে তাকে ২৮ মে রাতে বাড়িতে নিয়ে আসার পরদিন বুধবার দুপুরে বাড়িতেই মারা যান ভুক্তভোগী নারী।
পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।
ওই দম্পতির দুই বছর বয়সী একটি মেয়ে আছে।
ওসি আশিকুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় বুধবার থানায় নিহতের মামার তথ্যের ভিত্তিতে একটি ইউডি মামলা হয়। শুক্রবার রাতে পুলিশের অনুরোধে ভুক্তভোগী নারীর মামা বাদী হয়ে চারজনের নাম উল্লেখ করে একটি ধর্ষণ মামলা করেন।
“পরে আমরা বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ এলাকায় থেকে দুইজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই। আসামিদেরকে আদালতে প্রেরণ করা হবে।”
কুড়িগ্রামের পুলিশ সুপার (এসপি) আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম বলেন, “ধর্ষণের মামলা হওয়ার ১২ ঘণ্টার মধ্যে প্রধান আসামি দুজনকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। এ ঘটনায় যেই জড়িত থাক না কেন আমরা তাদের আইনের আওতায় আনবো। আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।”