পুলিশ সুপার বলেন, “এটি ছিল সম্পূর্ণ পারিবারিক বিষয়, কোনো রাজনৈতিক বিষয় ছিল না।”
Published : 15 Dec 2024, 11:49 PM
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতির একজন নেতার কক্ষে একটি সালিশি সভার মধ্যে জাতীয় নাগরিক কমিটির তিন নেতার ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রোববার সন্ধ্যায় জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বাবুলের কক্ষে এ ঘটনা ঘটে বলে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাবেদুর রহমান জানান।
হামলায় আহতরা হলেন- জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক ও চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আতাউল্লাহ, সংগঠনের জেলা সংগঠক জিহান মাহমুদ (৩০) এবং উপজেলা সংগঠক রাসেল মিয়া (৩০)।
হামলার খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠায়। পরে সেনাবাহিনীর একটি দল আদালত চত্বরে আসে।
এ ঘটনার প্রতিবাদে সংগঠনের নেতাকর্মীরা আদালত চত্বর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ করেছে।
জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক আতাউল্লাহ অভিযোগ করে বলেন, “আমাদের এক সহযোদ্ধাকে একটি মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। সেই বিষয়ে আমি আদালতে এসেছিলাম। সেখানে এক সহকর্মী বলেন, তার এক আত্মীয়ের একটি সালিসি সভা হচ্ছে, সেখানে যেতে। আমি তার সঙ্গে আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদকের কক্ষে যাই।
“সেখানে যাওয়ার পর আমাদের সঙ্গে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা হচ্ছিল। একপর্যায়ে একজন আমাকে জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতা হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন। নাগরিক কমিটির কথা বলার পরই আমাকে মারধর শুরু করে।”
আতাউল্লাহ দাবি করেন, “সেখানে আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বাবুল সামনে ছিলেন। তার ইশারাতে আমাদের ওপর হামলা করা হয়। একপর্যায়ে সাধারণ সম্পাদক বের হয়ে গেলে কক্ষের লাইট বন্ধ করে দেয়। তখন সবাই আমাদের বেদম প্রহার করে।”
তিনি বলেন, “এই অবস্থায় আমি পুলিশ সুপারকে কল দেই, তখনও তারা আমাদের মারধর করছিল। তারা মারার সময় বলছিল, নাগরিক কমিটি কেন এখানে এসেছিস? তারা নাগরিক কমিটির ওপর খুব ক্ষ্যাপা।”
আহত জিহান মাহমুদ বলেন, “আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বাবুল জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক। আমরা উনার কক্ষে প্রবেশ করার পরই খারাপ ব্যবহার শুরু করেন। তখন নাগরিক কমিটির নাম শুনে তারা আরো খারাপ ব্যবহার করেন। তারা আমাদের ওপর চড়াও হন। সেখানে এই অবস্থায় রাসেল ফেইসবুক লাইভ দেয়, লাইভ দেওয়ার পর আরো বেশি মারধর করা হয়।”
এ বিষয়ে জানতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বাবুলের মোবাইলে কল করলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাবেদুর রহমান বলেন, “আদালতে রাবেয়া খাতুন ও হাবিবুল্লাহর মাঝে একটি মামলা চলমান রয়েছে। রাবেয়া খাতুন তার স্বামী হাবিবুল্লাহর বিরুদ্ধে আদালতে যৌতুক সংক্রান্ত মামলা করেছেন। রাবেয়া খাতুন জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক আতাউল্লাহর সম্পর্কে খালা হন।
“আজকে দুইপক্ষের উকিল নিয়ে মীমাংসার জন্যে বসেছিলেন। এটি ছিল সম্পূর্ণ পারিবারিক বিষয়, কোনো রাজনৈতিক বিষয় ছিল না। সেখানে দুইপক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও মারামারি হয়।”
তিনি বলেন, “এই ঘটনায় আতাউল্লাহসহ তিনজন আহত হন। আমি এসে তাদেরকে হাসপাতালে পাঠিয়েছি। এই ঘটনায় অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেব।”