১৯৯৭ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরের প্রথমে উপমন্ত্রী ও পরে প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
Published : 29 Oct 2023, 10:38 PM
সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক জিনাতুন নেসা তালুকদার আর নেই।
রোববার সকাল ৬টা ৭ মিনিটে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
তার মৃত্যুতে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন গভীর শোক প্রকাশ করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
জিনাতুন নেসা তালুকদারের বড় ছেলে মাহমুদ হাসান ফয়সল জানান, বার্ধক্যজনিত কারণে তার মা বিভিন্ন অসুখে ভুগছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন তিনি।
মঙ্গলবার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে জিনাতুন নেসা তালুকদারকে আবারও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর থেকে তিনি হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। রোববার সকালে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
রাজশাহী নগরীর বোয়ালিয়া পাড়া এলাকায় ১৯৪৭ সালের ৯ জুলাই জন্মগ্রহণ করেন জিনাতুন নেসা তালুকদার। তার বাবা মৌলভী পারভেজ আলী মিয়া ছিলেন বিশিষ্ট সমাজসেবী। ১৯৬৩ সালে রাজশাহীর পিএন সরকারি বালিকা বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন জিনাতুন নেসা। এরপর কলেজে ভর্তি হন। কলেজ জীবন থেকেই সরাসরি রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন তিনি।
১৯৬৯ সালের গণঅভ্যূত্থানে সক্রিয়ভাবে কাজ করেন জিনাতুন নেসা। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে ছাত্রলীগের একজন নেত্রী হিসেবে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে দেশমাতৃকার ডাকে সাড়া দিয়ে তিনি সরাসরি মুক্তিসংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েন।
ভারতে গিয়ে সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর নেতৃত্বে বিখ্যাত গোবরা ক্যাম্পে অস্ত্র পরিচালনা ও চিকিৎসা সেবাদানের প্রশিক্ষণ নেন জিনাতুন নেসা। প্রশিক্ষণ শেষে তাকে ৭ নম্বর সেক্টরের সাব-সেক্টর ৪-এর অধীনে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
স্বাধীনতা অর্জনের পরও দেশ ও সমাজসেবায় নিয়োজিত ছিলেন জিনাতুন নেসা। ১৯৭৭ সালে তিনি নওহাটা ডিগ্রি কলেজে অধ্যাপনা শুরু করেন। একইসঙ্গে চালিয়ে যান রাজনীতি ও সমাজ গড়ার কাজ।
১৯৯৬ সালের ৫ জুলাই সংরক্ষিত মহিলা আসন থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেন তিনি। ১৯৯৭ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত প্রাথমিক ও গণশিক্ষা বিভাগের প্রথমে উপমন্ত্রী ও পরে প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
মেয়রের শোক
জিনাতুন নেসা তালুকদারের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে বিবৃতিতে মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, “আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের সাহসী নেতৃত্ব, সততা ও আদর্শের প্রতি অবিচল ছিলেন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা। নারী অধিকার বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখায় বেগম রোকেয়া পদক-২০১৮ এবং শিক্ষা সম্প্রসারণে অবদান রাখায় ১৯৯৮ সালে মীর মোশাররফ হোসনে পদক পান অধ্যাপক জিনাতুন নেসা তালুকদার। তিনি তার কর্মের মাধ্যমে আমাদের মাঝে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।”