‘বীজতলা তৈরি না করা গেলে একদিকে আমন উৎপাদন ব্যাহত হতো। অন্যদিকে আমাদের না খেয়ে থাকতে হতো।’
Published : 20 Sep 2024, 11:34 AM
অব্যাহত ভারী বর্ষণে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় এখনো পানির নিচে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার ফসলের মাঠ। জমির সংকটে বীজতলা তৈরি করতে না পেরে আমনের মৌসুম নিয়ে চরম শঙ্কায় আছেন চাষিরা।
তবে কৃষকের সে দুঃশ্চিন্তা দূর করতে এগিয়ে এলেন এক ঝাঁক শিক্ষক-শিক্ষার্থী। তারা নিজেদের বিদ্যালয়ের খেলার মাঠকে দিয়ে দিলেন কৃষকের আমনের বীজতলা তৈরিতে।
উপজেলার রুপসা দক্ষিণ ইউনিয়নের সাহেবগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের এ উদ্যোগকে প্রশংসায় ভাসাচ্ছেন উপজেলাবাসী।
ফরিদগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কল্লোল কিশোর সরকার বলেন, বীজতলা প্রস্তুত করার উপযোগী মাঠ না থাকায় স্কুল মাঠে বীজতলা তৈরির ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
চাষিরা জানান, অতিবৃষ্টি-জলাবদ্ধতায় ঘরে থাকা বীজ ধান নষ্ট হয়ে গেলেও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বীজ উপহার দিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু বীজতলা তৈরির মতো এক টুকরো মাঠের সন্ধান না মেলায় তাদের মধ্যে হতাশা তৈরি হয়েছে। তবে তাদের বাঁচাতে এগিয়ে এসেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
স্কুল মাঠে বীজতলা প্রস্তুতকারী কৃষকদের একজন মোবারক হোসেন বলেন, “এর মধ্যে দুইবার আমাদের বীজতলা নষ্ট হয়েছে। প্রশাসনের কর্মকর্তা এবং স্কুল কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় মাঠে আমরা বীজতলা তৈরি করেছি।
“বীজতলা তৈরি না করা গেলে একদিকে আমন উৎপাদন ব্যাহত হতো। অন্যদিকে আমদের না খেয়ে থাকতে হতো।”
বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক একেএম সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, “জলাবদ্ধতায় কৃষকদের বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে। কৃষকদের অনুরোধে প্রেক্ষিতে মাঠে বীজতলা তৈরির সুযোগ দিয়েছি। আশা করি, এতে কৃষকরা এবং এলাকাবাসী উপকৃত হবে।”
তবে, এ বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানিয়েছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা একে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ।
তিনি বলেন, “আমরা কি এ ধরনের কাজের অনুমতি দিতে পারি?”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌলি মন্ডল বলেন, “সিজন চলে যাচ্ছে। যেহেতু জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না, কৃষক যাবে কোথায়? তাদেরকে তো আমাদের হেল্প করতে হবে।”
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কল্লোল কিশোর সরকার বলেন, “এ বছর আমনে আমাদের উৎপাদন লক্ষমাত্রা ৮ হাজার ৩৭৩ হেক্টর। কিন্তু জলাবদ্ধতায় লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের বিষয়ে আমরা শঙ্কিত। চেষ্টা করছি, লক্ষ্যমাত্রার কাছিকাছি পৌঁছতে। ”
দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি প্রশমনের চলছে মৌসুম। কিন্তু কৃষকের কপালে পড়া দুঃশ্চিন্তার ভাঁজ দূর করার উপায় ছিলো না কারো কাছে।