“শোভাযাত্রায় ত্রিপুরা জাতির বিভিন্ন পোশাক পরে অংশ নিচ্ছে। আমাদের তিন দিন ধরে বৈসু উৎসব হয়।”
Published : 10 Apr 2024, 06:51 PM
পুরাতন বছরকে বিদায় ও নতুন বছর বরণে খাগড়াছড়িতে চলছে বৈসাবি উৎসব। এই উপলক্ষে ত্রিপুরা সম্প্রদায় আয়োজন করেছে বৈসু শোভাযাত্রা।
বুধবার সকাল থেকে শোভাযাত্রায় যোগ দিতে জেলা টাউন হল চত্বরে আসে তরুণ-তরুণীসহ বিভিন্ন বয়সী মানুষ।
সকাল সাড়ে ১০টায় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা। উদ্বোধনের আগে ত্রিপুরা গরয়া এবং ঐতিহ্যবাহী নৃত্য পরিবেশন করেন শিল্পীরা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “আমি চাই, সব জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে যে সংস্কৃতি আছে, সব সংস্কৃতির মাঝে ঐক্যের বন্ধন সৃষ্টি হোক। আমাদের যে সংস্কৃতি আছে, অপরাপর জাতিগোষ্ঠীর যে সংস্কৃতি আছে তার মধ্যে একটা মেলবন্ধ হবে।”
বৈসু শোভাযাত্রায় যোগ দিতে আসা প্রথমা ত্রিপুরা বলেন, “আজকে হল আমাদের বৈসু শোভাযাত্রা। প্রতি বছর আমরা এর জন্য অপেক্ষা করি। আজকে আমরা ভাইবোনরা মিলে অংশ নিয়েছি।”
নৃত্যশিল্পী দিনা ত্রিপুরা বলেন, “বৈসু আমাদের ত্রিপুরাদের মাঝে আনন্দ বয়ে নিয়ে আসে। বৈসুতে গয়রা বা গরিয়া নৃত্য হয়। গরিয়ার ঢোল এবং বাঁশির আওয়াজে চারিদিক মেতে উঠে। আমরা নতুন কাপড় পরি। শোভাযাত্রায় ত্রিপুরা জাতির বিভিন্ন পোশাক পরে অংশ নিচ্ছে। আমাদের তিন দিন ধরে বৈসু উৎসব হয়।”
উন্নয়নকর্মী চামেলি ত্রিপুরা বলেন, হারি বৈসুতে মেয়েরা ফুল তুলে গঙ্গা দেবীর পূজা করে। তারপর ফুলের মালা গেঁথে ঘরের দুয়ারে টাঙিয়ে দেয়।
বৈসুমার দিন ১০৪ প্রকারের সবজি রান্না করা হয়। বিসিকাতালের দিন বয়স্কদের প্রণাম করা হয় বলে জানান চামেলি ত্রিপুরা।
সৃজনী ত্রিপুরা বলেন, “এই কয়েক দিন আমরা উৎসব করব। সারা বছরের অপেক্ষা শেষে বৈসু আমাদের মধ্যে আনন্দ নিয়ে আসে। একে অপরের বাসায় যাব। খাওয়া-দাওয়া করব। শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা বিনিময় করব।”
বাংলাদেশ ত্রিপুরা কল্যাণ সংসদের সভাপতি সুশীল জীবন ত্রিপুরা বলেন, “শোভাযাত্রার মাধ্যমে আমাদের স্বকীয়তা তুলে ধরতে চাই। ত্রিপুরাদের হাজার বছরের নিজস্ব সংস্কৃতি, ভাষা, সংগীত, নৃত্যসহ হারানো সংস্কৃতিকে তুলে ধরার জন্য এমন আয়োজন।”
শোভাযাত্রায় আরো উপস্থিত ছিলেন খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী, খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান, পুলিশ সুপার মুক্তা ধর।
চাকমাদের বিজু, মারমাদের সাংগ্রাই ও ত্রিপুরাদের বৈসু উৎসবের সম্মিলিত রূপকে বলা হয় ‘বৈসাবি’। এ উৎসব চলবে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত।