অনৈতিক মেলামেশার জেরে ২ শিশুকে হত্যা, কুমিল্লায় প্রবাসীর স্ত্রীর মৃত্যুদণ্ড

বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক দেখায় এক শিশুকে হত্যা করা হয়; ওই খুনের ঘটনা দেখে ফেলায় হত্যা করা হয় আরেক শিশুকে।

কুমিল্লা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 Jan 2023, 03:03 PM
Updated : 31 Jan 2023, 03:03 PM

কুমিল্লার মুরাদনগরে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের জেরে দুই শিশুকে গলাকেটে হত্যার দায়ে এক প্রবাসীর স্ত্রীর মৃত্যুদণ্ড হয়েছে। খুনে সহযোগিতা করায় একই পরিবারের আরেক নারীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে।

মঙ্গলবার কুমিল্লা জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের বিচারক রোজিনা খানম এই রায় ঘোষণা করেন বলে জানান আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. মুজিবুর রহমান।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ইয়াসমিন আক্তার (২৮) জেলার মুরাদনগর উপজেলার লাজৈর গ্রামের বাবুল হোসেনের স্ত্রী। যাবজ্জীবন দণ্ডিত মাজেদা বেগম (৪৩) একই গ্রামের সেলিম মিয়ার স্ত্রী। মাজেদা বেগম সম্পর্কে ইয়াসমিনের চাচি শাশুড়ি।

রায় ঘোষণার সময় দণ্ডিত দুই নারী আদালতে উপস্থিত ছিলেন বলে পুলিশ পরিদর্শক মো. মুজিবুর রহমান জানান। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নুরুল ইসলাম জানান, ২০১৪ সালের ২১ এপ্রিল লাজৈর গ্রামের প্রবাসীর স্ত্রী ইয়াসমিন আক্তার বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িত ছিলেন। এ ঘটনা দেখে ফেলায় ওই এলাকার ৬ বছর বয়সী এক শিশুকে ভুট্টাক্ষেতে নিয়ে গলা কেটে খুন করেন ইয়াসমিন। ওই খুনের ঘটনা দেখে ফেলায় কিছুক্ষণ পর একই গ্রামের ৭ বছর বয়সী আরেক শিশুকেও গলা কেটে হত্যা করে লাশ খালে ডুবিয়ে দেন তিনি।

পরে স্থানীয়রা বিষয়টি টের পেয়ে ইয়াসমিন আক্তারকে আটক করে পুলিশে সোর্পদ করেন।

মামলার বরাতে নুরুল ইসলাম আরও জানান, ওই হত্যাকাণ্ডে ইয়াসমিন আক্তারকে সহযোগিতা করেন মামলার দ্বিতীয় আসামি মাজেদা বেগম। ঘটনার পর মাজেদা বেগম আত্মগোপনে চলে যান। গত বছর র‌্যাব-১১ মাজেদা বেগমকে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার দুর্গম একটি পাহাড়ি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। সেখানে নিজের পরিচয় বদল করে বসবাস করছিলেন তিনি।

তিনি বলেন, হত্যার ঘটনায় ২০১৪ সালের ২১ এপ্রিল মুরাদনগর থানায় ইয়াসমিন ও মাজেদাসহ অজ্ঞাত আরও দুই তিনজনকে আসামি করে নিহত এক শিশুর বাবা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী তাইফুর রহমান ও শাহানা সুলতানা সোমা সাংবাদিকদের বলেন, তারা শিগগিরই এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।

আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. মুজিবুর রহমান জানান, রায় ঘোষণার পর দণ্ডিত দুই নারী সংজ্ঞা হারিয়ে পড়ে যান। পরে পুলিশ সদস্যরা তাদের কারাগারে নিয়ে যান।