এই বৃষ্টি বছরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে গত ২৭ মে জেলায় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয় ২৫৭ মিলিমিটার।
Published : 05 Oct 2024, 12:12 PM
মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ ২৭৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে চাঁদপুরে।
শুক্রবার রাতভর থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টি শনিবারও চলমান রয়েছে।
চাঁদপুর আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক শাহ্ মো. শোয়াইব বলেন, শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত চাঁদপুর জেলায় ২৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যা গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত ছিল।
এর মধ্যে শনিবারই ভোর ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত আরও ২৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
তবে এই বৃষ্টি বছরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে গত ২৭ মে জেলায় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয় ২৫৭ মিলিমিটার।
এদিকে রেকর্ড বৃষ্টিপাতে তলিয়ে গেছে চাঁদপুর শহরসহ বিভিন্ন উপজেলা। ঘরবাড়ি, মসজিদ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বৃষ্টির পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।
শনিবার সকালেও বৃষ্টির মধ্যে শহর ঘুরে দেখা গেছে অধিকাংশ মহল্লার সড়কে পানি উঠে গেছে। বিশেষ করে শহরের নাজির পাড়া, মিশন রোড আশ্রম এলাকা, প্রফেসর পাড়া, মমিন পাড়া, গুয়াখোলা, চিত্রলেখা মোড়, পালপাড়া, আলিম পাড়া, আদালত পাড়া, রহমতপুর আবাসিক এলাকা, গাজী সড়ক, মাদ্রাসা সড়কে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে।
এসব এলাকার সড়কের বাসাবাড়িতে পানি প্রবেশ করে চরম দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে।
নাজিরপাড়া এলাকার বাসিন্দা নয়ন জানান, টানা বৃষ্টিতে পুরো এলাকা নিমজ্জিত হয়ে গেছে। মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারছে না। এখানকার ড্রেনেজ ব্যবস্থা খুবই খারাপ। পানি নামতে সময় লাগছে। মসজিদের ভিতরেও হাঁটু পানি জমে আছে। পানি মাড়িয়েই পেশাগত কাজে যেতে হচ্ছে।
মিশন রোড এলাকার অটোরিকশা চালক রেদওয়ান ইসলাম বলেন, ভোর ৬টায় তিনি সড়কে নেমেছেন। কিন্তু বৃষ্টির কারণে লোকজন বাসাবাড়িতে থেকে নামেনি, তাই যাত্রী পাচ্ছেন না। সড়কে যানবাহন সংখ্যা খুবই কম তার মধ্যেও যাত্রীর অপেক্ষায় আছেন তিনি।
শহরের নাজির পাড়ার মামুনুর রশিদ বলেন, শুক্রবার রাত থেকেই বাসায় জলাবদ্ধ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সকাল থেকে তাদের বাসার নীচতলায় হাঁটু পরিমাণ পানি।
পালপাড়া এলাকার মাজহারুল ইসলাম বলেন, চলতি বছর টানা বৃষ্টি হলেও শুক্রবার রাত থেকে বৃষ্টির পরিমাণ ছিলো অনেক বেশি। তাদের বাসায়ও পানি হাঁটু পরিমাণ।
শহরের শপথ চত্বর এলাকায় মাঠা বিক্রি করেন বিকাশ। তিনি বলেন, মাঠা বিক্রিতেই তার সংসার চলে। যে কারণে বৃষ্টিতেও ঘরে বসে থাকতে পারেননি। সকাল ৬টায় এসে মাঠা বিক্রির জন্য বসেছেন। কিন্তু বৃষ্টির কারণে সকাল ১০টা পর্যন্ত কোনো ক্রেতা আসেনি।
সদর উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ আলগী গ্রামের বাসিন্দা আব্দুস ছাত্তার বলেন, টানা বৃষ্টিতে বাড়ির চারপাশে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। বাড়ি থেকে বের হওয়ার সড়কেরও বেহাল অবস্থা।
এর আগে শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে মুষলধারে বৃষ্টিপাত শুরু হয়। থেমে থেমে সারা রাত বৃষ্টি ও বজ্রপাত অব্যাহত ছিল। সন্ধ্যার পর থেকে শহরের সড়কগুলোতে যানবহন চলাচল কমে যায়। অনেকেই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে বাসাবাড়িতে চলে যায়।