বর্ষবরণ: পর্যটকে মুখরিত কক্সবাজার

যদিও সমুদ্র সৈকতে থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে উন্মুক্ত কনসার্ট বা গান-বাজনার আয়োজনে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

কক্সবাজার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 Dec 2022, 04:42 PM
Updated : 31 Dec 2022, 04:42 PM

বছরের শেষ দুই দিন সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় অনেক ভ্রমণপিপাসু পরিবার-পরিজন নিয়ে ভিড় জমিয়েছেন বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে।

এ বছর সমুদ্র সৈকতে থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে উন্মুক্ত কনসার্ট বা গান-বাজনার আয়োজনে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তারকামানের হোটেলগুলোতে পর্যটকদের জন্য নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

যদিও পর্যটন ব্যবসায়ীরা বলছেন, পর্যটকদের একটি বড় অংশ কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের পাশাপাশি দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্ট মার্টিনে ভ্রমণের জন্য আসেন। এ বছর টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌ-পথে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলে অনুমতি না পাওয়ায় সেখানে পর্যটকের ভিড় তুলনামূলক কম।

প্রতি বছরই ইংরেজি নতুন বছরকে বরণ ও পুরনো বছরকে বিদায় জানাতে দেশের নানা প্রান্ত থেকে কক্সবাজারে ছুটে আসেন পর্যটকরা।

শনিবার কক্সবাজার শহরের লাবণী, সুগন্ধা ও কলাতলী পয়েন্ট ঘুরে দেখা গেছে, কয়েক হাজার পর্যটক সমুদ্র সৈকতে স্নান ও আনন্দ-উচ্ছ্বাসে মেতেছেন। তারা কেউ টায়ার-টিউবে গা ভাসাচ্ছেন, কেউ জলযান (জেটস্কি) নিয়ে সাগর দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন, কেউ আবার ঘোড়া ও বিচবাইকে সৈকত দর্শনে সময় কাটাচ্ছেন।

অনেকেই মেরিন ড্রাইভ ধরে দরিয়ানগর, হিমছড়ি, ইনানী, পাটুয়ারটেক ও টেকনাফ সৈকতেও ছুটছেন। এ ছাড়া সেন্ট মার্টিন, মহেশখালী আদিনাথ মন্দির, রামু বৌদ্ধপল্লি, চকরিয়ার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক, নিভৃতে নিসর্গসহ বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রে পর্যটক সমাগম রয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ রোডের হোটেল-মোটেল, কটেজ ও রিসোর্ট মালিক সমিতির সভাপতি মুকিম খান বলেন, “তারকামানের হোটেলগুলোতে শতভাগ কক্ষ বুকিং রয়েছে।”

সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টের ইকো-ট্যুরিজম সিস্টেমের ‘সেইলর বিচ রিসোর্ট’-এর ২০টি কক্ষ আগামী ২ জানুয়ারি পর্যন্ত বুকিং রয়েছে বলে জানান রিসোর্টটির পরিচালক বেলাল আবেদীন ভুট্টো।

তিনি বলেন, এবার নতুন বছরে পর্যটকের চাপ কম। কক্সবাজার শহরের হোটেল-মোটেল জোনের কলাতলী ও মেরিন ড্রাইভ সড়কে পাঁচ শতাধিক হোটেল-মোটেল, কটেজ ও রিসোর্ট রয়েছে। 

পর্যটকদের নিরাপত্তায় সতর্ক অবস্থায় রয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ, বিচকর্মী ও লাইফ গার্ডের সদস্যরা।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার অঞ্চলের সহকারী পুলিশ সুপার চৌধুরী মিজানুজ্জামান বলেন, পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তায় বাড়তি টহল ও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। 

সৈকতে কোনো অনুষ্ঠান নেই

থার্টি ফার্স্ট নাইটে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে উন্মুক্ত কোনো অনুষ্ঠান নেই। কেবল হোটেল-মোটেলগুলো নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠান করতে পারবে।

বছর দুয়েক আগেও সমুদ্র সৈকতে থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপনে লাখ লাখ পর্যটকের সমাগম ঘটত। তবে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর থেকে সৈকতে উন্মুক্ত অনুষ্ঠানে নিষেধাজ্ঞা দেয় কর্তৃপক্ষ।

থার্টি ফার্স্ট নাইটে সমুদ্র সৈকতে রাত ১২টার পর পর্যটক সমাগম নিরুৎসাহিত করার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে পুলিশ প্রশাসন।

পর্যটন ব্যবসায়ীরা বলছেন, নতুন বছরকে বরণ ও পুরনো বছরকে বিদায় জানাতে সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের বাড়তি চাপ থাকতো।

কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ হোটেল রিসোর্ট ও গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি মুকিম খান বলেন, থার্টি ফার্স্ট নাইটে সৈকতে কনসার্ট বা বড় কোনো অনুষ্ঠান না থাকায় পর্যটক আসা কমে গেছে।

ট্যুরিস্ট পুলিশের পরিদর্শক গাজী মিজানুর রহমান বলেন, সমুদ্র সৈকতে আতশবাজি ও কনসার্ট করা যাবে না। শুধু মাত্র হোটেল-মোটেলগুলোতে অনুষ্ঠান করার অনুমতি রয়েছে।