মাদকবিরোধী অভিযানে গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যের মারধরে ওই ব্যক্তি মারা গেছেন বলে অভিযোগ নিহতের স্বজনদের।
Published : 27 Jan 2025, 06:38 PM
শরীয়তপুরের জাজিরায় মাদকবিরোধী অভিযানে পুলিশের মারধরে একজনের মৃত্যুর অভিযোগ তদন্তে কমিটি ও মামলা হয়েছে।
শরীয়তপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আবিদুল ইসলাম বলেন, ঘটনা তদন্তে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করার পাশাপাশি জাজিরার পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।
জাজিরা উপজেলার নাওডোবা এলাকায় পদ্মা সেতুর পাশে গত শনিবার রাতে গোয়েন্দা পুলিশের এসআই নওশের আলীসহ আটজনের একটি দলের অভিযানের সময় মিলন ব্যাপারী (৫৫) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়।
পরিবারের অভিযোগ, অভিযান চালানোর সময় ডিবি পুলিশের সদস্যদের মারধরে মিলন মারা যান।
পশ্চিম নাওডোবা এলাকার আমজাদ ব্যাপারীর ছেলে মিলন ব্যাপারীর বাড়ি পদ্মা সেতুর রেলের ভায়াডাক্টের ৪৮ নম্বর পিলারের পাশে। সেখানেই একটি ছোট মুদি দোকানের ব্যবসা করতেন তিনি।
শনিবার রাতে একই উপজেলার বিকে নগর এলাকা থেকে মোজাম্মেল মাঝি নামে এক ব্যক্তিকে গাঁজাসহ আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ। পরে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী কালু বেপারী কান্দি এলাকায় জামাল বেপারীর বাড়িতে অভিযান চালানো হয়।
এ সময় জামাল বেপারীর প্রতিবেশি মামা মিলন বেপারীকেও ডিবি পুলিশের সদস্যরা আটক করেন। কিছুক্ষণ পর তাকে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।
স্বজনদের দাবি, ডিবি পুলিশের মারধরে অসুস্থ হয়ে মিলন ব্যাপারীর মৃত্যু হয়েছে। যদিও পুলিশ বলছে, ওই ব্যক্তি আগে থেকেই হৃদরোগ ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত ছিলেন। তার ভাগ্নে জামাল ব্যাপারীকে আটক করার সময় তিনি পুলিশের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ান। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
রোববার দুপুরে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে সন্ধ্যায় লাশটি নাওডোবা এলাকার একটি গণকবরস্থানে দাফন করেন স্বজনরা।
এ ঘটনায় রোববার সন্ধ্যায় নিহত মিলন ব্যাপারীর ছেলে আল আমীন একটি অপমৃত্যুর মামলা করেন।
আল আমীন বলেন, “আমাদের সামনেই ডিবি পুলিশের সদস্যরা বাবাকে মারধর করেছেন। তাদের মারধরের কারণে বাবা অসুস্থ হয়ে মারা যান। এ বিষয়ে আমরা পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানায় অভিযোগ করেছি।”
তিনি বলেন, “পুলিশ জানিয়েছে, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখন অপমৃত্যু মামলা করতে বলেছিল। তাই আমি একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন আসার পর পুলিশ কোনো ব্যবস্থা না নিলে আমরা আদালতের দ্বারস্থ হব।”
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আবিদুল ইসলাম বলেন, “ওই ব্যক্তি হৃদরোগ ও হাঁপানি রোগে আক্রান্ত ছিলেন। এ কারণে তার মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে চিকিৎসক জানিয়েছেন। তারপরও পুলিশের কোনো সদস্যের দায়িত্ব পালনে কোনো গাফিলতি ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখতে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন ও কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন পেলে বোঝা যাবে, ওই ব্যক্তির মৃত্যু কীভাবে হয়েছে। এরপর আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
আরো পড়ুন: