তবে মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন জেলার গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক আবু বকর।
Published : 26 Jan 2025, 05:19 PM
শরীয়তপুরের জাজিরায় মাদকবিরোধী অভিযানে গোয়েন্দা পুলিশের মারধরে এক ব্যক্তির মৃত্যুর অভিযোগ তুলেছেন স্বজনরা।
শনিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে জাজিরা উপজেলার নাওডোবা ইউনিয়নের কালু বেপারী কান্দি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে স্থানীয়রা জানান।
নিহত মিলন বেপারী (৫৫) ওই এলাকায় মৃত আমজাদ বেপারীর ছেলে।
তবে, পুলিশ বলছে, মিলন আগে থেকেই অসুস্থ ছিলেন। অভিযানের সময় আতঙ্কিত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে তিনি মারা গেছেন।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, শনিবার রাতে জাজিরার পদ্মা সেতু এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযান চালান জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই নওশের আলীসহ আট সদস্য। তখন একই উপজেলার বিকে নগর এলাকা থেকে মোজাম্মেল মাঝি নামে এক ব্যক্তিকে গাঁজাসহ আটক করা হয়।
পরে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী কালু বেপারী কান্দি এলাকায় জামাল বেপারীর বাড়িতে অভিযান চালানো হয়।
এ সময় জামাল বেপারীর প্রতিবেশি মামা মিলন বেপারীকেও ডিবি পুলিশের সদস্যরা আটক করেন।
নিহতের ভাগ্নে শিপন বেপারী বলেন, “ডিবি পুলিশ পরিচয়ে মামাকে ঘর থেকে বের করে প্রথমে চর-থাপ্পর দেয় ও মাদক ব্যবসায়ী কোথায় জানতে চায়। তিনি জানেন না বললে পুলিশ তাকে ব্যাপক মারধর করলে তিনি অসুস্থ হয়ে মাটিতে পড়ে যান। পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।”
রোববার দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে তার পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।
নিহতের স্ত্রী রেনু বেগম অভিযোগ করে বলেন, “ডিবি পুলিশ রাতে বাড়িতে তল্লাশি করার পর আমার স্বামীকে মারধর করেছে। মারধর করায় তার মৃত্যু হয়েছে। আমি স্বামী হত্যার বিচার চাই।”
নিহতের ছেলে আল-আমিন বলেন, “আমাদের সামনে বাবাকে ডিবি পুলিশের লোকজন মারধর করেছেন। মারধর করলে তার মুখ দিয়ে রক্ত এসে তিনি মারা গেছেন।”
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের আবসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা আকরাম এলাহী বলেন, “রাতে মরদেহ নিয়ে আসা হয়েছিল। ময়নাতদন্তের জন্য প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রতিবেদন এলে মৃত্যুর রহস্য জানা যাবে।”
এ ব্যাপারে এসআই নওশেরের মোবালই নম্বরে একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।
তবে মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করে জেলার গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক আবু বকর মাতুব্বর বলেন, “পদ্মা সেতু এলাকায় চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী জামাল বেপারীর বাড়িতে অভিযান চলাকালে তার মামা মিলন আতঙ্কিত হয়ে মাটিতে পড়ে যান। পরে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে ডিবির সদস্যরা তার পরিবারকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে। পরে শুনতে পাই, তিনি নাকি মারা গিয়েছেন।”
মাদক আইনে আটক মোজাম্মেল মাঝির নামে নয়টি ও জামাল বেপারীর নামে তিনটি মামলা রয়েছে বলে জানান আবু বকর মাতুব্বর।