নরসিংদীতে ফেইসবুকে ‘আপত্তিকর ভিডিও’ প্রকাশের দ্বন্দ্বে প্রবাসফেরত যুবক হত্যার প্রধান আসামি এক এসএসসি পরীক্ষার্থী গ্রেপ্তার হয়েছে।
মনোহরদী থানার ওসি মো. ফরিদ উদ্দিন জানান, রোববার রাতে গাজীপুরের কাপাসিয়ায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করেছে মনোহরদী থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তার ১৭ বছর বয়সী ওই কিশোর স্থানীয় একটি বিদ্যালয় থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছিল। মামলার এই প্রধান আসামির বাড়ি চন্দনবাড়ী ইউনিয়নের চন্দনপুর গ্রামে।
নিহত মো. শরীফ (২১) মনোহরদী উপজেলার চালাকচর ইউনিয়নের বাঘবের গ্রামের মহিউদ্দিনের ছেলে। সৌদি আরব থেকে সম্প্রতি দেশে ফিরেছেন তিনি।
ওসি জানান, গত সোমবার [১৫ মে] বিকালে মনোহরদী উপজেলার চন্দনবাড়ী ইউনিয়নের চন্দনপুর গ্রামে ছুরিকাঘাতে আহত হন মো. শরীফ। তিনদিন পর বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার ছয় জনকে আসামি করে নিহতের বাবা থানায় অভিযোগ দেন; লিখিত অভিযোগটি বৃহস্পতিবার রাতে মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয় বলে ওসি জানান।
মামলার ছয় আসামির মধ্যে চারজনই কিশোর। দুইজন এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন, একজন অষ্টম শ্রেণির ছাত্র, আরেকজন মাদ্রাসার ঝরে পড়া ছাত্র। অন্য দুইজন হলেন, প্রধান আসামির বাবা ও চাচা।
মামলার নথি থেকে ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দুই বছর আগে স্থানীয় অষ্টম শ্রেণির মেয়েটির সঙ্গে শরীফের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ছিল। এক পর্যায়ে শরীফ সৌদি আরব চলে গেলে মেয়েটি এক কিশোরের [প্রধান আসামি] সঙ্গে প্রেমে জড়িয়ে পড়ে।
ওই সময় ওই কিশোরের মোবাইল ফোন থেকে মেয়েটি ‘টিকটক ভিডিও’ বানিয়ে ফেইসবুকে ছাড়ত বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।
অভিযোগে আরও বলা হয়, শরীফ দেশে ফেরার পর ওই কিশোরকে এড়িয়ে মেয়েটি আবার শরীফের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ায়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওই কিশোর তার ফেইসবুক থেকে মেয়েটির আপত্তিকর ভিডিও ছাড়তে থাকেন।
মামলায় বলা হয়, এর জেরে শরীফ ও আসামি ওই কিশোরের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এর জেরে গত সোমবার বিকালে উপজেলার চন্দনবাড়ী ইউনিয়নের চন্দনপুর গ্রামে ছুরিকাঘাতে আহত হন মো. শরীফ। তিনদিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন থাকার পর বৃহস্পতিবার বিকালে তার মৃত্যু হয়।
মনোহরদী থানার ওসি মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, শরীফের পেটে-হাতে পাঁচ জায়গায় ছুরিকাঘাত করা হয়েছিল। এই মামলার প্রধান আসামিকে গাজীপুরের কাপাসিয়া থেকে গ্রেপ্তারের পর এখন জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। পরে তাকে নরসিংদী আদালতে পাঠানো হবে। বাকি আসামীরা পলাতক, তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
যে মেয়ের সঙ্গে এই কিশোর ও শরীফের বিরোধ সে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। মনোহরদীতে নানির বাড়ি থেকে পড়াশোনা করে। তার মা-বাবা ঢাকায় থাকেন।