ওসি বলেন, “ছেলেমেয়েদের বিয়ের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। এলাকার জনগণ তাদের আটক করছে; আমাদের কাছে দেয়নি।”
Published : 19 Jan 2025, 08:32 PM
সিলেটের মোগলাবাজারে একটি রিসোর্টে বেড়াতে যাওয়া আট তরুণ-তরুণীকে ধরে আসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগ এনে কাজী ডেকে বিয়ে পড়িয়ে দিয়েছেন স্থানীয়রা। এসময় রিসোর্টের একটি অংশে অগ্নিসংযোগও করা হয়।
রোববার দুপুরের দিকে মোগলাবাজার থানা এলাকার রিজেন্ট পার্ক রিসোর্টে এ ঘটনা ঘটে। পরে বিকালে কর্তৃপক্ষ তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক ঘোষণায় রিসোর্টটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেন।
মোগলাবাজার থানার ওসি মো. খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান বিকালে বলেন, “সকালে স্থানীয় লোকজন অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে রিসোর্টের ভেতরে যান। এ সময় কে বা কারা সেখানে অগ্নিসংযোগ করে। পরে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
“ছেলেমেয়েদের বিয়ের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। এলাকার জনগণ তাদের আটক করছে; আমাদের কাছে দেয়নি।”
একই সময় রিসোর্টে থাকা আরও আট তরুণ-তরুণীকে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানায় পুলিশ।
আট তরুণ-তরুণীর বিয়ে পড়িয়েছেন দক্ষিণ সুরমা উপজেলার সিলাম ইউনিয়নের কাজী আব্দুল বারী।
তিনি বলেন, “এলাকাবাসী ছেলেমেয়েদের আটক করেন। তারপর আমাকে খবর দিয়ে নেওয়া হয়। তখন এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে চার ছেলে ও চার মেয়ের বিয়ে দেওয়া হয়। তিনটি বিয়ের দেনমোহর ১০ লাখ; আরেকটির দেনমোহর ১২ লাখ টাকা।”
কাজী বলেন, এসব ছেলে-মেয়ে সিলেটের বিশ্বনাথ, মোগালাবাজার, ফেঞ্চুগঞ্জ ও দুক্ষিণ সুরমার এলাকার বাসিন্দা বলে নিজেদের পরিচয় দিয়েছেন।
বিয়ের সময় কয়েকজন বিএনপি নেতা ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন বলে তুলে ধরেন তিনি।
সিলাম এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, রিসোর্টের কক্ষ ভাড়া নিয়ে নানা অসামাজিক কাজ হয়। এটা জানতে পেরে দুপুর ২টার দিকে তারা সেখানে হানা দেন।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় মোগলাবাজার থানা পুলিশ। পরে এলাকার মুরুব্বিরা তাদের অভিভাবকদের খবর দেন।
এ ঘটনার পর থেকে রিজেন্ট পার্ক রিসোর্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের নম্বরটি বন্ধ রয়েছে। ফলে তাদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ঘটনাস্থলে থাকা জাতীয়তাবাদী কৃষকদল সিলেট জেলার সদস্যসচিব তাজরুল ইসলাম তাজুল বলেন, “অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে আটক শুনে এলাকার প্রায় দুই হাজার মানুষ এসেছিলেন রিসোর্টে। আমরা চেষ্টা করেছি, যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। এজন্য রিসোর্টের গেইট বন্ধ করেছিলাম।
“কিন্তু অনেকে দেয়াল টপকে ভেতরে প্রবেশ করেন। রিসোর্টে আগুন জেনারেটর থেকে লেগেছে। তবে কোনো রুমে আগুন লাগেনি। অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে ১৬ জন ছেলেমেয়েকে আটক করেছিল এলাকাবাসী। এর মধ্যে আটজনের বিয়ে এবং বাকি আটজনকে পরিবারের সদস্যদের কাছে দেওয়া হয়েছে।
তাজুল বলেন, “তবে রিসোর্টে ছেলেমেয়ে আরও বেশি ছিল। তারা স্থানীয়রা আসার আগেই চলে গেছে। বর্তমানে বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসী রিসোর্টের মালিকদের সঙ্গে বসেছি।”
দক্ষিণ সুরমা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ঊর্মি রায় বলেন, “আমি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নই।”