“আমার দুঃখ হয় এই কারণে আপনাদের (সাংবাদিক) ভালো কথা বললেও অন্যভাবে নেন; ক্ষেপে যান।”
Published : 02 Feb 2024, 02:59 PM
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্তে ‘আরও সময় দিতে হবে’ বলে যে বক্তব্য দিয়েছিলেন তা সংবাদমাধ্যমে ‘অন্যভাবে’ উপস্থাপন হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
শুক্রবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া রেলওয়ে স্টেশনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এ কথা বলেন তিনি।
বৃহস্পতিবার আইন মন্ত্রণালয়ে নিজের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আইনমন্ত্রীকে সাগর-রুনি হত্যা মামলার ধীরগতি নিয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন।
উত্তরে মন্ত্রী বলেন, “যদি পুলিশ তদন্ত শেষ না করতে পারে, তাহলে পুলিশকে জোর করে তদন্ত শেষ করিয়ে ফাইনাল রিপোর্ট বা চার্জশিট দেওয়াটা কি ঠিক?
“তদন্তে যতদিন সময় লাগে সঠিকভাবে দোষী নির্ণয় করার জন্য, তাদেরকে ততটুকু সময় দিতে হবে।"
এ হত্যার ঘটনায় ‘তদন্তের জন্য প্রয়োজনে ৫০ বছর সময় দিতে হবে’ এমন শিরোনামে আইনমন্ত্রীকে উদ্বৃত করে কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়।
ওই ৫০ বছর সময় দেওয়ার বিষয়টি আপেক্ষিক অর্থে বলেছেন বলে দাবি করে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, “এটা বিতর্কের বিষয় না। আমার দুঃখ হয় এই কারণে আপনাদের (সাংবাদিক) ভালো কথা বললেও অন্যভাবে নেন; ক্ষেপে যান।
“হত্যার ৪২ বছরেও আসামি ধরা, ২৪ বছরে রহস্য উন্মোচনের ঘটনা আছে। প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করতে সময় লাগলেও দিতে হবে বুঝিয়েছি।”
পুলিশ ‘প্রকৃত আসামিকে’ ধরতে পারছে না বলেই তদন্তে সময় লাগছে বলেও এ সময় দাবি করেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, “আইনি কাঠামোতে বলা আছে, যারা অপরাধী নয় তাদেরকে হয়রানি যাবে না। যারা প্রকৃতভাবে দোষী তাদের ধরতে হবে।”
এ সময় দলীয় নেতাকর্মীরা মন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন।
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারে ভাড়া বাসায় খুন হন বেসরকারি টিভি চ্যানেল মাছরাঙার বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার এবং তার স্ত্রী এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি।
সেই রাতে সেই ফ্ল্যাটে তাদের দুজনের সঙ্গে ছিল তাদের একমাত্র সন্তান পাঁচ বছর বয়সী মাহির সরওয়ার মেঘ। তাকে উদ্ধৃত করে পুলিশ তখন জানিয়েছিল, খুনি ছিল দুজন।
আলোড়ন সৃষ্টি করা ওই হত্যাকাণ্ডের পর তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু তারপর বছরের পর বছর গড়ালেও হত্যা রহস্যের কিনারা হয়নি।
হত্যাকাণ্ডের পর রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন রুনির ভাই নওশের রোমান। বিভিন্ন সময়ে মোট আটজনকে এ মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়। পরে দুজন জামিনও পান।
প্রথমে শেরেবাংলা নগর থানা পুলিশ আলোচিত এ হত্যা মামলার তদন্তে নামে। চারদিন পর তদন্তের ভার দেওয়া হয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে।
তারা রহস্যের কিনারা করতে না পারায় হাই কোর্টের নির্দেশে ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল তদন্তভার র্যাবের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
দায়িত্ব পেয়ে ডিএনএসহ অন্যান্য বায়োমেট্রিক পরীক্ষার জন্য ঘটনাস্থল থেকে বটি, পরিধেয় কাপড়সহ বেশ কিছু বস্তু পরীক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ল্যাবেও পাঠায় র্যাব। কিন্তু এতদিনেও তার ফল প্রকাশ করা হয়নি।
আরও পড়ুন:
একটি রায় ঘিরে দেশের ‘মর্যাদা ক্ষুণ্ন করার’ চেষ্টা হচ্ছে: আইনমন্ত্রী