পুরোনো দ্বন্দ্বের জেরে আগের রাতে দুপক্ষের মধ্যে মারামারি হয়। সকালে ফের সংঘর্ষ হয় বলে স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানিয়েছে পুলিশ।
Published : 25 Mar 2024, 02:52 PM
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় পুরোনো দ্বন্দ্বের জেরে দুপক্ষের সংঘর্ষে অন্তত আটজন গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
সোমবার ভোরের দিকে উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের নাওড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে বলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ- সার্কেল) আবির হোসেন জানান।
রফিকুল ইসলাম নামে সাবেক এক ইউপি চেয়ারম্যান ও মোশারফ হোসেন নামে সাবেক ইউপি সদস্যের সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয় বলে স্থানীয়রা জানান।
গুলিবিদ্ধরা হলেন- মো. আকবর (২৪), মো. তাজেল (৩৬), মো. জয়নাল (৩৫), মো. শামীম (২৫), মুক্তার হোসেন (৬০), নুর হোসেন (২৪), মো. আরিফ (৯) ও মো. রোমান (২০)।
তারা মোশারফ হোসেনের পক্ষের লোক বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানান, ওই আটজন শর্টগানের ছোড়া ছররা গুলিতে আহত হয়েছেন। তবে তাদের আঘাত গুরুতর নয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ জানায়, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ও জেলা পরিষদের সদস্য ভাই মিজানুর রহমানের সঙ্গে সাবেক ইউপি সদস্য মোশারফ হোসেনের দ্বন্দ্ব পুরোনো।
স্থানীয়রা জানান, বিভিন্ন আবাসন কোম্পানির জন্য জমি বেচা-কেনার ব্যবসা নিয়ে প্রায়ই ওই দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। গত রোববার রাতে বাড়ি ফেরার পথে নাওড়া গ্রামের বাসিন্দা নাজমুল নামে রফিকুল ইসলামের পক্ষের এক যুবককে পিটিয়ে আহত করেন মোশারফের লোকজন।
এ ঘটনার জেরে সোমবার সকালে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
উভয়পক্ষ এ সময় আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় তৈরি ধারালো অস্ত্র ব্যবহার করে।
মোশারফ হোসেনের ছেলে নিরব হোসেনের অভিযোগ, সকালে তাদের বাড়ি ঘেরাও করেন রফিকুল ইসলাম, তার ভাই মিজানুর রহমানসহ লোকজন।
নিরব আরও অভিযোগ করেন, রফিক ও মিজানের নেতৃত্বে শতাধিক ‘সন্ত্রাসী’ আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। তাদের ছোড়া গুলিতে আটজন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
তবে, আগের রাতে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেন নিরব।
এদিকে, মিজানুর রহমানের দাবি, তিনি ঢাকায় আছেন। সংঘর্ষের ঘটনায় তিনি কিংবা তাদের কোনো লোক জড়িত নন।
তিনি বলেন, “আমি শুনেছি, নাজমুল নামে গ্রামের একটা নিরীহ ছেলেকে গতরাতে মারধর করে টাকা-পয়সা রেখে দেয় মোশারফ ও তার লোকজন। এতে গ্রামবাসী ক্ষুব্দ হয়ে ওঠে। সকালে গ্রামবাসীদের ওপর মোশারফের লোকজন আবারও হামলা চালিয়েছে বলে শুনেছি। হামলায় গ্রামবাসীদের মধ্যে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এর বেশি কিছু ভাই আমি জানি না, কারণ আমি তো গ্রামে ছিলামই না।”
সোমবার দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা হয়নি বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা আবির হোসেন।
নাওড়া গ্রামে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে জানিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, “তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”