উত্তরাঞ্চল থেকে উপদেষ্টার দাবিতে রংপুরে মহাসড়ক অবরোধ

বক্তারা বলেন, উপদেষ্টাদের ১৩ জন চট্টগ্রাম বিভাগের হলেও উত্তরাঞ্চল থেকে কাউকে নেওয়া হয়নি।

অন্তর্বর্তী সরকারে উত্তরাঞ্চল থেকে উপদেষ্টা রাখার দাবিতে ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন সাধারণ ছাত্র-জনতা।

বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রংপুরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা লালবাগের সামনে জড়ো হন। সেখান থেকে তারা মিছিল নিয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে মডার্ন মোড়ে যান।

সাড়ে ১২টার দিকে শিক্ষার্থীরা ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক অবরোধ করে মর্ডান মোড়ে বসে পড়েন। এ সময় সেখানে বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রংপুরের অন্যতম সমন্বয়ক ইমরান আহমেদ, আশফাক আহমেদ, নাহিদ হাসান খন্দকার, ইমতিয়াজ আহমেদ, ইয়াসির আরাফাত, কারমাইকেল কলেজ শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম, শিক্ষার্থী শরিফুল ইসলাম।

ইমরান আহমেদ বলেন, “রংপুর জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সূতিকাগার। আবু সাঈদের রক্তের মাধ্যমে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শুরু হয়েছিল। ১০ অগাস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস রংপুরে এসে বলেছিলেন, রংপুর হবে দেশের অন্যতম সেরা জেলা, এক নম্বর হবে।

“কিন্তু রংপুর অঞ্চলের জনগণের হয়ে কথা বলার জন্য সরকারে একজনও উপদেষ্টা নেই। আবু সাঈদের জন্মভূমি রংপুরকে চরম অবহেলা করা হয়েছ।”

এ সময় বক্তারা অভিযোগ করেন, অন্তর্বর্তী সরকার রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের সঙ্গে বৈষম্য করছে। সরকারের উপদেষ্টাদের ১৩ জন চট্টগ্রাম বিভাগের হলেও উত্তরাঞ্চল থেকে কাউকে নেওয়া হয়নি। সরকার এভাবে চললে আঞ্চলিক বৈষম্য আরও বাড়বে।

বক্তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক ও জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব আখতার হোসেনসহ উত্তরাঞ্চলের যোগ্য একাধিক ব্যক্তিকে উপদেষ্টা করার দাবি জানান।

এ সময় তারা ‘বৈষম্য বন্ধ করো’, ‘আখতার হোসেনকে উপদেষ্টা হিসেবে দেখতে চাই’সহ নানা স্লোগান দেন। ঘণ্টাখানেক অবস্থান করে কর্মসূচি শেষ করেন বিক্ষোভকারীরা।

দাবি মানা না হলে সড়ক ও রেলপথ অবরোধসহ রংপুর বিভাগ অচল করার মতো কর্মসূচি ঘোষণার হুমকি দেন আন্দোলনকারীরা। এ সময় আঞ্চলিক বৈষম্য দূরীকরণে উত্তরবঙ্গের ছাত্র-জনতার পক্ষে তিন দফা দাবি তুলে ধরেন তারা।

দাবিগুলো হলো- সুষম উন্নয়ন অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতি প্রণয়নে উত্তরবঙ্গের দুই বিভাগ থেকে কমপক্ষে দুজন করে চারজন উপদেষ্টা নিয়োগ করতে হবে। সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আমলা ও কর্মকর্তা নিয়োগে আঞ্চলিক বৈষম্য করা যাবে না; সেই সঙ্গে প্রত্যেক উপদেষ্টাকে কার্যক্রমের অগ্রগতি সাপ্তাহিকভাবে জনসমক্ষে প্রকাশ করতে হবে। বিতর্কিত ও জুলাই বিপ্লবকে ধারণ করেন না, এমন কোনো উপদেষ্টাকে অন্তর্র্বতী সরকারে রাখা যাবে না; নীতি প্রণয়নে উত্তরবঙ্গের বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতাদের পরামর্শ নিতে হবে।

এর আগে সোম ও মঙ্গলবার বিকালেও শিক্ষার্থীরা আখতার হোসেনকে উপদেষ্টা নিয়োগের দাবিতে শহরের প্রেসক্লাব মোড়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।