“রঞ্জু নামের লোকটা একটা ভুয়া এজেন্সি খুলে আমাদের সবাইকে নিঃস্ব করে দিছে।”
Published : 10 Mar 2025, 02:33 PM
মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে বিদেশে পাঠানোর নামে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ।
হরিরামপুর থানা ওসি মুহাম্মদ মুমিন খান জানান, রোববার রঞ্জু নামের ওই ব্যক্তিকে আটকের পর আদালতে পাঠানো হয়েছে।
৪৫ বছর বয়সী রঞ্জু চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গার মৃত রেজাউল হকের ছেলে। রোববার মানিকগঞ্জে আসার পর পুলিশের হাতে আটক হন তিনি।
হরিরামপুর উপজেলার বাল্লা ও গালা ইউনিয়নের ভুক্তভোগীরা বলছেন, বাল্লা ইউনিয়নের ঝিটকা শিকদার পাড়া এলাকার ফারুক হাজারির মাধ্যমে টাকা নিত রঞ্জু। হরিরামপুরের প্রায় শতাধিক ব্যক্তির থেকে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে রঞ্জু ও ফারুক। উপজেলার বাল্লা গালা ও গোপীনাথপুরের অর্ধশতাধিক ব্যক্তি এ প্রতারক চক্রের ফাঁদে পড়েছেন।
বাল্লা ইউনিয়নের ঝিটকা কলাহাটা এলাকার বাসিন্দা ইজিবাইক চালক হৃদয় ব্যাপারি বলেন, তার প্রতিবেশী ফারুক হাজারি আর তার ভাই মতিন চাচার মাধ্যমে কিস্তি উঠিয়ে (এনজিও লোন) ১ লাখ টাকা দিয়েছিলেন বিদেশে যাওযার জন্য। এরপর থেকে তারা আর কোনো যোগোযোগ করেনি।
তিনি বলেন, “দুই বছর আগে টাকা দিয়েও এখন দ্বারে দ্বারে ঘুরছি, বিচার চাইছি অনেকের কাছে। এখন অবস্থা বেগতিক দেখে ফারুক হাজারি কাকা, ওই প্রতারক রঞ্জুকে কৌশলে থানায় এনেছে। সাভারে রঞ্জু নামের লোকটা একটা ভুয়া এজেন্সি খুলে আমাদের সবাইকে নিঃস্ব করে দিছে।”
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার স্থানীয়রা রঞ্জুকে এলাকায় দেখে আটক করে। পরে রঞ্জু-৯৯৯ এ ফোন করে পুলিশের সহায়তা চান। পরে স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে আটক করা হয়।
বাল্লা ইউনিয়নের ঝিটকা গাছি বাড়ি এলাকার পলাশ হোসেন বলেন, “ফারুক হাজারি কাকার মাধ্যমে এই রঞ্জু নামের প্রতারক সাভারে ভুয়া এজেন্সি খুলে বিদেশে নেওয়ার নাম করে আমাদের ৭০-৮০ জনের কাছ থেকে কোটি টাকার মত হাতিয়ে নিয়েছে। এখন পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাওয়ায় ফারুক কাকা নিজেই রঞ্জুকে আটকাইছে।
“পরে প্রতারক রঞ্জু ৯৯৯-এ ফোন করে সাহায্য চাইলে পুলিশ রঞ্জুকে থানা হেফাজতে আনে। আমাদের সবাইকে পথের ফকির বানাইছে এই রঞ্জু। আমরা টাকা ফেরতসহ এর বিচার চাই।”
ঝিটকা শিকদার পাড়া এলাকার খন্দকার মিজান গাছি বলছিলেন, “হাজারি বাড়ির ফারুক হাজারি কাকা আর মতিন হাজারি কাকারে আমরা চিনি। ঈদের আট দশদিন পর ফারুক কাকা টাকা ফেরত দিবো। আমি এক লক্ষ টাকা দিছিলাম। পঞ্চাশ হাজার টাকা ফেরত দিছে কয়দিন আগে।
“থানায় উপস্থিত রাজ্জাকের থেকে ৭০ হাজার, রহমানের থেকে ৩ লাখ ৪৯ হাজার, সুজাতের থেকে ৭০ হাজার, আজিজুলের থেকে দেড় লাখ, আক্কাসের কাছ থেকে ৯০ হাজার, ওমরের থেকে ১ লাখসহ অনেকের কাছ থেকে প্রায় কোটি টাকার মত নিয়েছে এই প্রতারক চক্র।”
ওসি মুমিন খান বলেন, “ফারুক হাজারিসহ প্রায় অর্ধশতাধিক ব্যক্তি রোববার থানায় আসে। ফারুক বেশির ভাগ ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। আর রঞ্জুও জড়িত। আমরা-৯৯৯ এ ফোন পেয়ে তাকে থানায় নিয়ে আসি। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আর অভিযোগকারীদের অভিযোগ না থাকায় ফারুককে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।”
এ বিষয়ে জানতে ফারুক হাজারির মোবাইল ফোনে একাধিক বার চেষ্টা করেও সাড়া মেলেনি।