জানাজা ও দাফনের পুরো সময়ে সেলিম রেজাকে হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে রাখে পুলিশ।
Published : 17 Jan 2023, 10:03 AM
শরীয়তপুর সদর উপজেলায় হাতকড়া আর ডান্ডাবেড়ি নিয়ে মায়ের জানাজা পড়েছেন সেলিম রেজা নামের বিএনপির এক কেন্দ্রীয় নেতা।
গাজীপুরের কাশিমপুরে কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে প্যারোলে মুক্তি পেয়ে রোববার রাতে সদর উপজেলার সুজন দোয়াল গ্রামে মায়ের জানাজায় যান।
ওই উপজেলার আনোয়ার হোসেন মুন্সির ছেলে সেলিম রেজা ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক। রোববার সকালে তার মা নাছিমা বেগম গ্রামের বাড়িতে মারা যান।
শরীয়তপুর জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আবুল হোসেন জানান, রোববার রাত আড়াইটার দিকে সদর উপজেলার সুজন দোয়াল গ্রামে সেলিম রেজার মায়ের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর মসজিদের কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
মায়ের মৃত্যুতে কারাগার থেকে প্যারোলে মুক্তি পেলেও জানাজার সময় তার হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি খোলা হয়নি। দাফনের সময় খোলা হাত পায়ে কবরে মাটি দিতে পারেননি তিনি।
ছাত্রদল নেতা সেলিম রেজার পরিবারের সদস্যরা জানান, সেলিমকে ৭ ডিসেম্বর বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে আটক করে পুলিশ। এরপর ১০ ডিসেম্বর পল্টন থানার নাশকতার একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করে গাজীপুরের কাশিমপুরে কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
সেলিম রেজার ভাই শামীম মুন্সি বলেন, “রোববার সকালে বেগম গ্রামের বাড়িতে মা মারা যান। এরপর আইনজীবীর মাধ্যমে সেলিমের প্যারোল মুক্তির জন্য ঢাকার জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবেদন করা হয়। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সেলিমকে বিকাল সাড়ে ৪টা থেকে ১০ ঘণ্টার জন্য প্যারলে মুক্তি দেওয়া হয়।
“গাজীপুর জেলা পুলিশ সেলিমকে হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে গ্রামে নিয়ে আসেন। সেখানে মায়ের মরদেহ নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন স্বজনেরা।”
রাত আড়াইটার দিকে একই এলাকার মসজিদ মাঠে জানাজায় অংশ নেয় সেলিম। পরিবারের সদস্য ও স্বজনেরা রাত তিনটার দিকে মায়ের দাফন করেন বলে জানান তিনি।
শামীম বলেন, জানাজা ও দাফনের পুরো সময়ে সেলিম রেজাকে হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে রাখে পুলিশ।
সেলিম ঢাকার দনিয়াতে একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক জানিয়ে তার ভাই শামীম মুন্সি আরও বলেন, সে রাজনীতি করে। ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশের আগে গণহারে পুলিশ বিএনপির নেতা-কর্মীদের আটক করেছে।
সেলিমকেও আটক করে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয় বলে দাবি করেন তিনি।
শরীয়তপুর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রদলের কর্মী শাজাহান মিয়া বলেন, একজন সন্তান রাজনীতি করার অপরাধে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় তার মায়ের জানাজায় অংশ নিতে হয়েছে। এর চেয়ে দুঃখের আর কষ্টের কী হতে পারে। মায়ের কবরে মাটিও দিতে পারেননি।
এ প্রসঙ্গে শরীয়তপুর সদরের পালং মডেল থানার ওসি আক্তার হোসেন বলেন, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট প্যারোল মুক্তি দেওয়ার পর কারা কর্তৃপক্ষের থেকে পুলিশের জিম্মায় আসামিকে আনতে হয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে আসামিকে হাতকড়া পরানো হয়েছিল।
তিনি বলেন, গাজীপুর জেলা পুলিশ তাদের জিম্মায় আসামি নিয়ে শরীয়তপুরে আসেন। পালং মডেল থানা পুলিশ তাদের সহায়তা দিয়েছে মাত্র।