কোভিড মহামারীর কারণে দুই বছর বন্ধ থাকার পর আবার বসেছে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার পইল গ্রামের ঐতিহ্যবাহী মাছের মেলা। এবারের মেলায় ৫০ কেজি একটি বাঘাইর মাছের দাম হাঁকা হয়েছে দেড় লাখ টাকা।
মেলায় মাছটি নিয়ে এসেছেন মো. ইসলাম উদ্দিন নামে এক বিক্রেতা। তিনি জানান, সিলেটের সুরমা নদীর মাছ এটি। এক লাখ টাকা দাম হলে মাছটি বিক্রি করে দিবেন তিনি।
আরেক মাছ বিক্রেতা মো. রমজান আলীও ২৫ কেজি ওজনের একটি বাঘাইর নিয়ে এসেছেন মেলায়। তিনি তার মাছের দাম হাকাচ্ছেন ৪৫ হাজার টাকা।
এ ছাড়া শতাধিক মাছ বিক্রেতা মাছ নিয়ে এসেছেন এবারের মেলায়।
বাঘাইর ছাড়াও বড় আকৃতির আইড়, চিতল, গজার, রুই, কাতলসহ নানা প্রজাতির মাছ নিয়ে আসেন বিক্রেতারা। তবে মেলায় পুটি, চিংড়ি, কৈ, চাপিলা, চান্দা মাছ উঠে ব্যাপকহারে। মেলায় নদী, হাওরের মাছের আধিক্য দেখা গেছে।
প্রতি বছর পৌষ সংক্রান্তিতে এ মেলার আয়োজন করে থাকেন আয়োজকরা। মেলাটি পইলসহ আশপাশের গ্রামের মানুষের মধ্যে যেন এক উৎসবের আমেজ নিয়ে আসে।
রোববার সকাল থেকে শুরু হওয়া মেলা চলবে সোমবার সকাল পর্যন্ত। মাছ ছাড়াও ছোটদের খেলা ও নানান ধরনের কৃষি যন্ত্রপাতি রয়েছে মেলায়। যা কিনতে দোকানগুলোতে ভিড় করছেন দর্শনার্থীরা।
শতবর্ষের পুরনো এ মেলায় আসা মো. আক্তার হোসেন নামে এক দর্শনার্থী জানান, এই মেলাটি আমাদের এলাকার সবছেয়ে বড় মাছের মেলা। এখানে বড় বড় মাছ নিয়ে আসেন বিক্রেতারা। অনেকে শুধু বড় বড় মাছ দেখার জন্যও মেলায় এসে থাকেন।
তিনি বলেন, “এটা আমাদের পূর্বপুরুষদের ঐতিহ্য।”
মো. রফিক নামে একজন বলেন, “বাচ্চাদের সঙ্গে নিয়ে পইলের মাছের মেলায় এসেছি। মূলত বাচ্চাদের বড় বড় মাছ দেখানোর জন্যই এখানে আসা।”
ফিরোজ আলী বলেন, “এ মেলা থেকে আমারা প্রতি বছর মাছ কিনে থাকি। এবার নিজেদের ছাড়াও প্রতিবেশীদের জন্য মাছ কিনতে এসেছি।”
এ ব্যাপারে মেলার উদ্যোক্তা পইল বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোস্তফা মিয়া বলেন, “করোনাভাইরাসের মহামারীর জন্য গত দুই বছর আমাদের ঐতিহ্যবাহী এ মেলাটি অনুষ্ঠিত হয়নি। তবে এবার জমজমাট আয়োজনে মাছের মেলা বসেছে। এই মেলাকে ঘিরে এলাকায় উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।”