৭ মার্চ পর্যন্ত এক দফা সময় বাড়ানো হলেও ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ শেষ করা যায়নি; ফলে কৃষকরা উদ্বিগ্ন।
Published : 08 Mar 2024, 12:02 AM
এক দফা সময় বাড়িয়েও সুমানগঞ্জের হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ শেষ করা যায়নি। এ ঘটনায় উদ্বিগ্ন কৃষকদের প্রতি সংহতি জানিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে হাওর বাঁচাও আন্দোলন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে প্রতিবাদ সমাবেশে বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।
হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায় অভিযোগ করেন, “এবারও হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের প্রকল্প গ্রহণ ও অনুমোদনে অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে। অপ্রয়োজনীয় প্রকল্পের পাশাপাশি অক্ষত, অল্প ক্ষতিগ্রস্ত প্রকল্পেও সমান বরাদ্দ দিয়ে সরকারের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে একটি চক্র। দুর্নীতি ও অনিয়মের দিকে নজর থাকায় এবারও তাই যথাসময়ে বাঁধের কাজ শেষ করা যায়নি।
পিআইসি নীতিমালা অনুযায়ী, ২৮ ফেব্রুয়ারি হাওরের ৭৩৫টি প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা ছিল। ১৫ ডিসেম্বর থেকে কাজ শুরুর নির্দেশনা থাকলে যথামসময়ে অনেক জায়গায় কাজ শুরু হয়নি। এবার ১২৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫৯১ কিলোমিটার অস্থায়ী ফসলরক্ষা বাঁধ সংস্কার, নির্মাণ ও পুনঃনির্মাণ করা হচ্ছে।
হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সহসভাপতি অধ্যাপক চিত্তরঞ্জন তালুকদার বলেন, “বিলম্বে কাজ শুরু হওয়ায় বাঁধ টেকসই না হওয়ার আশঙ্কা আছে। বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলের প্রথম ধাক্কা সামলানোর শক্তি থাকবে না বাঁধের।”
বক্তারা বলেন, ২৮ ফেব্রুয়ারি যথাসময়ে ও যথানিয়মে কাজ শেষ করতে না পারায় ৭ মার্চ পর্যন্ত এক দফা সময় বাড়ানো হয়। কিন্তু ওই সময়ে এসেও কাজ শেষ করা যায়নি। ফলে হাওরের কৃষকরা উদ্বিগ্ন।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি নজরুল ইসলাম শেফু, কৃষক আন্দোলনের প্রবীণ নেতা রমেন্দ্র কুমার দে মিন্টু, হাওর বাঁচাও আন্দোলন জেলা কমিটির সভাপতি ইয়াকুব বখত বাহলুল, অ্যাডভোকেট বুরহান উদ্দিন দোলন।
২০১৭ সালে হাওরের ফসলডুবির পর ঠিকাদারি প্রথা বিলোপ করে পিআইসি (প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি) করে সরকার কৃষকদের নেতৃত্বে হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করছে। এতে জেলা প্রশাসক সভাপতি এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সদস্যসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
গণশুনানি করে হাওরে গিয়ে প্রকৃত কৃষকদের মাধ্যমে কমিটি গঠনের নির্দেশনা থাকলেও সেটা মানা হচ্ছে না। ফলে মধ্যস্বত্ত্বভোগীরা ফসলরক্ষা বাঁধের প্রকল্প নিয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ছে বলে কৃষকদের অভিযোগ আছে।