Published : 05 May 2025, 01:44 PM
যমুনা নদীতে আকস্মিক পানি বৃদ্ধির ফলে পাবনার বেড়া উপজেলার চরাঞ্চলের শত শত একর বাদাম ক্ষেত তলিয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে অপরিপক্ব বাদাম তুলছেন চাষি।
রোববার উপজেলার চর পেচাকোলা, রাকসা, নগরবাড়ি, মোল্লার চরসহ বিভিন্ন চর ঘুরে কৃষকের বাদাম তোলার দৃশ্য চোখে পড়ে। এতে কৃষকরা ক্ষতির মুখে পড়ছেন বলে জানিয়েছেন।
তবে বেড়া উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা নুসরাত কবীর বলছেন, চরাঞ্চলের বাদাম ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ার খবর তাদের কাছে নেই। এরপরও খোঁজখবর নিয়ে দেখার কথা বলেছেন তিনি।
চাষিরা জানান, যমুনায় জেগে ওঠা চরে এ বছরও অনেক কৃষক বাদাম চাষ করেছিলেন। বিশেষ করে রুপপুর, ঢালারচর, নতুন ভারেঙ্গা, পুরান ভারেঙ্গা, হাটুরিয়া নাকালিয়া ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকার প্রায় এক হাজার ৫০০ হেক্টরের বেশি জমিতে বাদামের আবাদ হয়।
কিছুদিনের মধ্যেই বাদাম ঘরে তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন কৃষকরা। তবে হঠাৎ যমুনায় জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। এতে চরের নীচু এলাকার বাদামের ক্ষেত তলিয়ে যায়। প্রায় ৫০০ হেক্টর জমির বাদাম অপরিপক্ষ অবস্থায় তুলতে হয়েছে।
কৃষকদের দাবি, প্রায় এক হাজার মণ বাদাম নষ্ট হয়েছে তাদের। ফলে এসব এলাকার কৃষকরা চরম দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছেন।
রাকসার চরের কৃষক আবদুল, শামীম, জুয়েল, রেজা ও ছানোয়ার হোসেন জানান, অন্যান্য বছর বাদামের ভালো ফলন হয়েছিল। তাই তারা এবারও বেশি জমিতে চাষ করেছিলেন। কিন্তু হঠাৎ পানি এসে তাদের অনেক জমির বাদাম নষ্ট করে দিল।
নদীতে তলিয়ে যাওয়া ক্ষেত থেকে কৃষক পরিবারের নারী, পুরুষ ও শিশুসহ সবাই মিলে বাদাম তোলায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।
জমি থেকে আগাম ফসল তোলার কারণে উৎপাদন অর্ধেকে নেমেছে। এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আগামী মৌসুমে কৃষি প্রণোদনার দাবি জানিয়েছেন তারা।
রুপপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান উজ্জ্বল হোসেন বলেন, “ক্ষেত পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বহু বাদাম চাষির ক্ষতি হয়েছে। এ বছর লোকসানের মুখে পড়বেন কৃষক। এমন পরিস্থিতিতে সরকারিভাবে কৃষককে সহায়তার দাবি জানাচ্ছি।”
কৃষি কর্মকর্তা নুসরাত কবীর বলেন, “নীচু জমিতে যারা আগাম বাদাম চাষ করেছিলেন তারা ইতিমধ্যে ফসল তুলেছেন। তবে কিছু জমি থেকে অপরিপক্ব বাদাম তোলার কারণে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। কৃষকরা সরকারি অনুদানের আশায় এমনিতেই এমন কথা বলে থাকেন। তারপরও খোঁজখবর নিয়ে দেখব।”
চলতি বছরে বেড়া উপজেলায় এক হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে বাদামের চাষ হয়েছে বলে জানান তিনি।
এর আগে উপজেলার সুতিখালি এলাকায় ইরি ক্ষেতের ধান ডুবে যাওয়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে স্লুইস গেইট বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে জানান এই কৃষি কর্মকর্তা।