নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যার পাড়ে বিআইডব্লিউটিএর একটি প্রকল্প কার্যক্রম পরিদর্শন করেন নৌ-পরিবহন এবং শ্রম উপদেষ্টা।
Published : 03 Dec 2024, 08:45 PM
বাংলাদেশের সঙ্গে সর্ম্পক নষ্ট হলে ‘ভারতের ক্ষতি হবে’ বলে মনে করেন নৌ-পরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন।
ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, “আমি মনে করি, ভারতের সঙ্গে (বাংলাদেশের) যে সম্পর্ক আছে, সেইটা নষ্ট হলে ভারতের ক্ষতি হবে, আমাদের না।”
মঙ্গলবার দুপুরে শীতলক্ষ্যার পাড়ে নারায়ণগঞ্জ শহরের ৩ নম্বর মাছঘাট এলাকায় বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে বিআইডব্লিউটিএর একটি প্রকল্প কার্যক্রম পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
ভারতীয় কিছু সংবাদমাধ্যম ও রাজনীতিক ‘বেশি বেশি’ করছেন মন্তব্য করেন সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “ভারত একটি বৃহৎ দেশ। আমরা তার পাশে একটা ছোট প্রতিবেশী। এখন ভারত যদি...ভারত বলব না, ভারতের মিডিয়াই এইটা বেশি বেশি করছে।
“আর কিছু কিছু পলিটিশিয়ান আছে, তাদের আগামীর নির্বাচন আছে, সেগুলোর জন্য এমন করছে। এখন তারা যদি আমাদের পায়ে পড়ে ঝগড়া করতে চায়, তাহলে আমরা তো সবসময় চুপ থাকব না। আমাদের মিডিয়াও চুপ থাকবে না। এইটা কি ভালো লক্ষণ? ভালো লক্ষণ না।”
প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো হওয়া উচিত জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “এখন ওনারা একজনকে পছন্দ করেন সেজন্য এখানে (বাংলাদেশ) অস্থিতিশীল করতে হবে? বাংলাদেশ অস্থিতিশীল না, কথার কথা যদি (অস্থিতিশীল) হয়ও, তাহলে ওনারা কি আরামে থাকতে পারবেন? আঠারো কোটি লোকের দেশ এটা।
“সুতরাং আমি মনে করি না, ভারতের সরকার এ ধরনের কোনো ব্যাপারে আছে। এইগুলো মিডিয়া আছে, কিছু পলিটিক্যাল পার্টি আছে, তারা মনে করে এইগুলো করে তারা ভোট পাবে। এইটা তাদের ব্যাপার। কিন্তু আমি মনে করি, ভারতের সঙ্গে যে সম্পর্ক আছে সেইটা নষ্ট হলে ভারতের ক্ষতি হবে, আমাদের না।”
পোশাক খাতে অসন্তোষ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “গার্মেন্টস বন্ধ করার পেছনে বড় ধরনের ষড়যন্ত্র আছে। এটা শুধু শ্রমিককে দোষ দিলে হবে না। কী ধরনের ষড়যন্ত্র আছে সেটাত আমরা মোটামুটি টের পাচ্ছি।
“যেসব গার্মেন্টস বন্ধ আছে, সেগুলোর ব্যাপারে আমরা কথা বলেছি। যেসব গার্মেন্টস ব্যাংক থেকে প্রচুর ঋণ নিয়েছে, কিন্তু এখন মালিক হয় পলাতক কিংবা কোথাও গেছে। এগুলোর ব্যাপারে আগামী সপ্তাহের মধ্যে একটা নির্দেশনা পাবেন।”
এর আগে নদীপথে চাঁদপুর হয়ে বাংলাদেশ আঞ্চলিক অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন প্রকল্প-১ এলাকা পরিদর্শনে নারায়ণগঞ্জ আসেন অন্তর্বর্তী সরকারের এই উপদেষ্টা।
জুলাই-অগাস্টের অভ্যুত্থানে পতন হওয়া আওয়ামী লীগ সরকারের সময় হাতে নেওয়া এই প্রকল্পের অধীনে শীতলক্ষ্যা নদীর পাড়ের অর্ধশতাধিক পুরোনো গাছ কেটে ফেলা হয়। এ নিয়ে বিগত সরকারের আমলে আন্দোলন করেছে স্থানীয় সংস্কৃতি কর্মী ও পরিবেশবাদীরা।
আন্দোলনকারীদের একটি দল দুপুরে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার সঙ্গে তাদের উদ্বেগের কথা জানান। এ সময় সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের তর্কে জড়াতে দেখা যায়।
এ প্রসঙ্গে পরে সাংবাদিকদের উপদেষ্টা বলেন, “নারায়ণগঞ্জে এক সময় পাটের ব্যবসা ছিল। একে প্রাচ্যের ডান্ডি বলা হত। এখন পাট না থাকলেও নানা ধরনের ব্যবসা হচ্ছে। এখানে বিশ্ব ব্যাংকের প্রজেক্টে একটি নতুন টার্মিনাল ভবন হচ্ছে। আমি এখানে এসে না দেখলে এই টার্মিনাল ভবনটি সময়মতো উঠবে না। অলরেডি আমরা পিছিয়ে আছি। এই কাজে যদি বাধা আসে তাহলে তো আর এ কাজ হবে না।”
তবে নদী দূষণ ও দখলরোধে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করবেন বলেও জানান তিনি।
এ সময় বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা এবং নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।