ফরিদপুরে বিএনপির মঞ্চ ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে

পুলিশ বলছে, বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে।

ফরিদপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Nov 2022, 03:50 PM
Updated : 30 Nov 2022, 03:50 PM

ফরিদপুরে বিএনপির পূর্বঘোষিত সমাবেশের মঞ্চ ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।

বুধবার বিকালে ফরিদপুর প্রেসক্লাব চত্বরে এ ঘটনার সময় পুলিশ উপস্থিত হয়ে ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় পুলিশের পাঁচ সদস্য ও বিএনপির কয়েক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।

বিএনপি নেতারা অভিযোগ করেন, দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হামলা, মামলা, নির্যাতন ও হত্যার প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়। বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে সেখানে শতাধিক বিএনপি নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি ও রাজেন্দ্র কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাউসার আকন্দের নেতৃত্বে হেলমেট পরিহিত অবস্থায় ২০ থেকে ২৫ জন যুবক মোটরসাইকেলে এসে জয়বাংলা স্লোগান দিয়ে হামলা চালায় এবং মঞ্চ ভাঙচুর করে। তারা হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘোয় এবং বিএনপি নেতাদের দিকে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে।

তবে হামলার কথা অস্বীকার করেছেন ছাত্রলীগ নেতা কাউসার আকন্দ। তিনি বলেন, “আমি সেসময় মিছিল নিয়ে প্রেসক্লাবের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলাম। আমার কোনো ছেলে এই হামলা চালায়নি। অন্যরা হামলা করে আমাদের ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করছে।”

ফরিদপুর কোতোয়ালী থানার ওসি এম এ জলিল সাংবাদিকদের বলেন, “বিএনপির সমাবেশ মঞ্চে হামলার ঘটনা তাদের দলের আভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণেই হয়েছে। এখানে শামা ওবায়েদ ও চৌধুরী নায়াব ইউসুফের সমর্থকদের মধ্যে বিভক্তি রয়েছে। এই হামলা সেই বিভক্তির কারণেই ঘটেছে।”

তিনি আরও বলেন, পুলিশ ১২টি ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে গিয়ে দেখা যায়, ভাঙচুর হওয়া মঞ্চ, চেয়ারের ভাঙা টুকরা ও ইট-পাটকেল ছড়িয়ে থাকা প্রেসক্লাব চত্বরে অর্ধশত পুলিশ সদস্য অবস্থান নিয়েছে।

বিএনপি নেতারা জানান, সমাবেশে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান এবং ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ইসলামের বক্তব্য দেওয়ার কথা ছিল। তারা হামলার কথা শুনে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন।

শামা ওবায়েদ এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “পুলিশের তত্ত্বাবধানে ছাত্রলীগ-যুবলীগ এ হামলা করেছে। আমরা দেখেছি, তারা বিভিন্ন জায়গায় হাতবোমা রেখে গায়েবি মামলা দিচ্ছে। সেই ধারাবাহিকতায় আজ এখানেও আমাদের দলের নেতাকর্মীদের ধরপাকড় করেছে।“

আব্দুল মঈন খান বলেন, “এখানে আজ আমাদের যে সমাবেশ ছিল, সেটা সাধারণ মানুষ এবং দলের নেতাকর্মীদের ওপরে সরকারের নির্যাতনের বিরুদ্ধে। এর বিরুদ্ধে একটি শান্তিপূর্ণ ছোট সমাবেশ করতে এসে আমরা হামলার শিকার হলাম।”

জেলা বিএনপির সদস্যসচিব এ কে কিবরিয়া স্বপন দাবি করেন, হামলায় তাদের অন্তত আট নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। পুলিশ রিতু, কামাল, রাজীব ও সিজানসহ বেশ কয়েকজন কর্মীকে আটক করেছে।

বিকাল ৫টার দিকে দেখা যায়, ফরিদপুর প্রেসক্লাব সংলগ্ন মুজিব সড়কের পাশ থেকে এক যুবককে আটক করে পুলিশ ভ্যানে তুলে নেয়। এ সময় তাকে ছাড়াতে বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা এগিয়ে গেলে তাদের সঙ্গে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে।

ফরিদপুর কোতোয়ালী থানার ওসি এম এ জলিল বলেন, মারামারি করে শান্তি-শৃঙ্খলা ভঙ্গ করায় আটক করা হয়েছে।