নিহতের লাশ উদ্ধার করতে গেলে এলাকাবাসী থানা পুলিশকে ধাওয়া করে। পরে লাশ উদ্ধার না করেই থানায় ফিরে আসে পুলিশ।
Published : 15 Sep 2024, 01:10 AM
কুমিল্লার দেবিদ্বারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে মাথায় গুলি লেগে গুরুতর আহত হওয়ার ৪০ দিন পর তরুণের মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে দেবিদ্বারের ভিংলাবাড়ী এলাকার নিজ বাড়িতে ওই তরুণের মৃত্যু হয় বলে স্থানীয়রা জানান।
নিহত সাব্বির হোসেনের (১৮) বাড়ি পাশের মুরাদনগর উপজেলার কাজিয়াতল এলাকার হলেও তিনি ছোটবেলা থেকেই নানাবাড়ি দেবিদ্বারের ভিংলাবাড়িতে মায়ের সঙ্গে থাকতেন।
ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালক সাব্বিরের বাবা আলমগীর মিয়া বছর দুয়েক আগে মারা গেছেন।
স্বজনরা জানান, তিন ভাই-বোনের মধ্যে সাব্বির সবার বড়। এজন্য বাবাহারা সংসারের হাল ধরতে অটোরিকশা চালানো শুরু করেন তিনি। তার মৃত্যুতে পরিবারটি নিঃস্ব হয়ে পড়েছে।
সাব্বিরের পরিবার ও স্থানীয়রা জানান, গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ওইদিন বিকালে বিজয় মিছিল নিয়ে দেবিদ্বার থানা ঘেরাও করে ছাত্র-জনতা।
তখন পুলিশ থানার ছাদে উঠে ছাত্র-জনতার ওপর এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করে। এতে মিছিলে থাকা বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হন।
তাদের মধ্যে সাব্বিরের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে গুলি লাগে।
স্বজনরা আরও জানান, ওইদিন তাকে প্রথমে মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে পরে ঢাকার গ্রিন লাইফ হসপিটালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়।
সেখানে অস্ত্রোপচারের পর কিছুটা সুস্থ হলে শুক্রবার সকালে সাব্বিরকে বাড়ি নিয়ে আসেন স্বজনরা।
তবে শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে হঠাৎ মাথা ঘুরিয়ে পড়ে গেলে তাকে দ্রুত দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে নিহতের মা রীনা বেগম বলেন, “যারা আমার ছেলেকে তিলে তিলে কষ্ট দিয়ে মেরেছে তাদের ফাঁসি চাই। সাব্বির যে বয়সে স্কুলে যাওয়ার কথা ছিল- সে বয়সে পরিবারের হাল ধরেছিল। কিন্তু এখন আমি কী নিয়ে বাঁচবো।”
এদিকে, খবর পেয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করতে গেলে এলাকাবাসী থানা পুলিশকে ধাওয়া করে। পরে লাশ উদ্ধার না করেই থানায় ফিরে আসে পুলিশ সদস্যরা।
দেবিদ্বার থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, “সুরতহাল তৈরি এবং ময়নাতদন্তের জন্য নিহতের লাশ উদ্ধার করতে গেলে স্থানীয়রা বাধা দেয়। এরপর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে ময়নাতদন্ত ছাড়াই সাব্বিরের লাশ দাফনের অনুমতি দিয়ে পুলিশ থানায় ফিরে আসে।”