এর আগে বুধবার সেন্ট মার্টিন থেকে উপজেলা ভোটের সরঞ্জাম নিয়ে ফেরার পথে এই ট্রলারটি লক্ষ্য করেই শতাধিক গুলিবর্ষণ করা হয়েছিল।
Published : 08 Jun 2024, 08:56 PM
কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে সেন্ট মার্টিন যাওয়ার পথে একটি পণ্যবাহী ট্রলারে আবারও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এতে ট্রলারের গায়ে গুলি লাগলেও কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
শনিবার দুপুর ১টার দিকে নাফ নদীর বদরমোকাম মোহনায় নাইক্ষ্যংদিয়া নামক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে বিজিবির টেকনাফ-২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ জানান।
এর আগে বুধবার সেন্ট মার্টিন থেকে উপজেলা পরিষদের ভোটের সরঞ্জাম নিয়ে ফেরার পথে ট্রলার লক্ষ্য করে শতাধিক গুলিবর্ষণ করা হয়েছিল। এ নিয়ে আতঙ্কের মধ্যেই ফের গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটল।
সেন্ট মার্টিন সার্ভিস ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রশিদ বলেন, দুপুরে টেকনাফ পৌরসভার কায়ুকখালীয়া খাল থেকে বিভিন্ন ধরনের পণ্যসামগ্রী ভর্তি করে ‘এসবি রাফিয়া’ ট্রলারটি চারজন মাঝিসহ সেন্ট মার্টিনের উদ্দেশে রওনা দেয়। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌপথের বদরমোকাম এলাকায় পৌঁছালে মিয়ানমারের নাইক্ষ্যংদিয়া থেকে ট্রলারের দিকে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়া হয়।
“তখন ট্রলারে থাকা মাঝি-মাল্লারা শুয়ে পড়েন। এ সময় এসবি রাফিয়াকে লক্ষ্য করে ২০-৩০টি গুলিবর্ষণ করা হয়। পরে মাঝি মোহাম্মদ বেলাল ট্রলারটি ঘুরিয়ে নিয়ে শাহ পরীর দ্বীপ জেটিতে এসে নোঙ্গর করেছেন”, বলেন আব্দুর রশিদ।
ট্রলারটির মাঝি মোহাম্মদ বেলাল বলেন, “এর আগে বুধবার রাতে সেন্ট মার্টিন দ্বীপ থেকে উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের নির্বাচনি কর্মকর্তা ও সরঞ্জাম নিয়ে ফেরার সময় এই ট্রলারটি লক্ষ্য করে শতাধিক গুলিবর্ষণ করা হয়েছিল। ওই ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।
“আজ আবার একই ঘটনা ঘটল। মিয়ানমারের উপকূল থেকে ট্রলার লক্ষ্য করে ২০-৩০টি গুলি করা হয়। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের ওপো থেকে গুলি ছোড়া হয়েছে। মিয়ানমারের বিজিপি নাকি বিদ্রোহী আরাকান আর্মি গুলি চালিয়েছে তা বলা যাচ্ছে না।”
পরে ট্রলারটিকে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য শাহ পরীর দ্বীপ জেটিতে এনে নোঙ্গর করা হয়েছে বলে জানান মাঝি মোহাম্মদ বেলাল।
সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, “সেন্ট মার্টিন দ্বীপে প্রায় সাড়ে ১০ হাজার বাসিন্দা রয়েছেন। এসব মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রীর জোগান টেকনাফ থেকে আসে। কয়েকদিন ধরে মিয়ানমারের সীমান্ত থেকে এই নৌপথে চলাচলকারী সার্ভিস ট্রলারকে লক্ষ্য করে গুলি করার ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যেই আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, এর মধ্যে নৌ যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এ নৌপথে ট্রলার চলাচল স্বাভাবিক করতে ওই এলাকায় বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড ও বিজিবির টহল জোরদার করার জন্য সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
বিজিবি টেকনাফ-২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, “গুলির বিষয়টি শুনেছি। সার্ভিস ট্রলারকে গুলিবর্ষণের ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষা বাহিনী বিজিপির কাছে প্রতিবাদলিপি পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।”
সেন্ট মার্টিন থেকে ভোটের সরঞ্জাম নিয়ে ফেরার পথে ট্রলারে গুলি