মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা সাবেক সংসদ সদস্য মাওলানা আব্দুল খালেক মণ্ডল ও খাঁন রোকনুজ্জামানের ফাঁসির রায়ে সাতক্ষীরায় আনন্দ মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে।
Published : 24 Mar 2022, 11:19 PM
বৃহস্পতিবার দুপুরে শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্ক থেকে ‘মুক্তিযোদ্ধা-জনতা’ ব্যানারে আনন্দ মিছিল বের হয়ে মুক্তিযোদ্ধা সড়কে শেষ হয়।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ বৃহস্পতিবার খালেক মণ্ডল ও খাঁন রোকনুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ড দেন।
আব্দুল খালেক মণ্ডল সদর উপজেলার বৈকারী ইউনিয়নের খলিলনগর গ্রামের বাসিন্দা। খান রোকনুজ্জামান শহরের পলাশপোল এলাকার বাসিন্দা। তিনি সাতক্ষীরা নবজীবন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা।
সরেজমিনে দেখা যায়, সাবেক জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কার্যালয়ের সামনের সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ‘মুক্তিযোদ্ধা-জনতা’র জেলা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সুভাষ সরকার।
বক্তব্য রাখেন জেলা জাসদের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী রিয়াজ, জাসদের সভাপতি ওবায়দুস সুলতান বাবলু, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী আক্তার হোসেন প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাতক্ষীরার প্রথম রায় এটি। একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধ করেও খালেক মণ্ডল সদর্পে রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করেছেন সাতক্ষীরায়। এই ব্যক্তি সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেছে, যেটা সাতক্ষীরার জন্য কলঙ্ক। দেরিতে হলেও ফাঁসির রায়ের মধ্য দিয়ে সেই কলঙ্ক কিছুটা হলেও মুক্ত হয়েছে।
মানবতাবিরোধী ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন জানান, ২০১৮ সালের ১৫ এপ্রিল সূচনা বক্তব্য এবং সাক্ষ্যগ্রহণের মাধ্যমে এ মামলার বিচার শুরু হয়। মামলায় তখন চারজন আসামি ছিলেন। এর মধ্যে খালেক মন্ডল কারাবন্দি ও খান রোকনুজ্জামান পলাতক। অপর দুই আসামি আব্দুল্লাহেল বাকি ও জহিরুল ইসলাম ওরফে টিক্কা খান মারা গেছেন।
মুক্তিযুদ্ধের সময় পাঁচ ব্যক্তিকে জবাই ও বেয়োনেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যার অভিযোগে সাতক্ষীরা সদর আসনের জামায়াতের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল খালেক মল্ডলসহ নয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালের ২ জুলাই মামলা হয়। মামলা করেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার শিমুলবাড়িয়া গ্রামের শহীদ রুস্তম আলী গাজীর ছেলে নজরুল গাজী। পরে মামলাটি ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়।
২০১৫ সালের ১৬ জুন ভোরে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার খলিলনগর মহিলা মাদ্রাসায় বৈঠকের সময় খালেক মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে শহীদ মোস্তফা গাজী হত্যা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখায় ট্রাইব্যুনাল। এ মামলার চার আসামিদের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ৭ অগাস্ট তদন্ত শুরু হয়; চলে ২০১৭ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। ২০১৭ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দেয় ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। মামলায় ৩৩ জনকে সাক্ষী করা হয়েছিল, যাদের মধ্যে ১৭ জনের সাক্ষ্য শুনেছে ট্রাইব্যুনাল।