নতুন নির্বাচন কমিশনের ‘মূলা’ দেখিয়ে কোনো লাভ হবে না বলে সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
Published : 28 Feb 2022, 06:14 PM
নির্বাচনকালীন ‘নির্দলীয় সরকারের’ দাবি পুনর্ব্যক্ত করে ময়মনসিংহে সোমবার দুপুরে এক সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, “সরকারকে বলছি, নির্বাচন কমিশনের টালবাহানা দেখিয়ে আর এই মূলা দেখিয়ে কোনো লাভ হবে না। আমাদের বক্তব্য খুব সুস্পষ্ট, নির্বাচন কমিশন যেটাই হোক, আমরা তাতে বিশ্বাস করি না।
“আমরা যেটা বিশ্বাস করি, আওয়ামী লীগ যদি সরকারে থাকে, নির্বাচনকালে কোনো নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবে না।”
মির্জা ফখরুল বলেন, “নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে ভোট হতে হবে। এই ইলেকশন কমিশন দিয়ে আবার তোমাদের মতো করে ভোট নিয়ে চলে যাবা, সেই কাজ আর হবে না।
“বারে বারে ঘুঘু তুমি খেয়ে যাও ধান। এইবার ঘুঘু তুমার বধিব পরান। এ দেশের মানুষ জেগে উঠছে, জেগে উঠবে এবং তাদের সমস্ত চক্রান্ত নস্যাৎ করে দিয়ে দেশনেত্রীকে মুক্ত করবে, জনগণকে মুক্ত করবে এবং সত্যিকার অর্থেই একটা নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে তারা জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করবে।”
গত শনিবার রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বাংলাদেশের্ এয়োদশ সিইসি হিসেবে হাবিবুল আউয়ালকে নিয়োগ দেন। আর তার নেতৃত্বেই আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন পরিচালিত হবে।
সার্চ কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতি সিইসির সঙ্গে আরও চারজন নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দিয়েছেন।
তারা হলেন, অবসরপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আলমগীর, আনিছুর রহমান, অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ রাশেদা সুলতানা এমিলি ও অবসরপ্রাপ্ত বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আহসান হাবীব খান।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আজ খুব পরিষ্কার কথা। এখনও সময় আছে। চাল-ডাল-তেলের দাম কমাও, গ্যাস-বিদ্যুতের দাম কমাও এবং জনগণের যে আশা-আকাঙ্ক্ষ তার ওপর শ্রদ্ধা রেখে পদত্যাগ করো, নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা দাও।”
দুর্নীতি, দমন-নির্যাতন, গুম-খুন, মামলা-গ্রেপ্তারের চিত্র তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “অবশ্যই এসবের জন্য জনগণের কাঠগড়ায় আওয়ামী লীগকে দাঁড়াতে হবে।”
ময়মনসিংহ মহানগর বিএনপির উদ্যোগে নতুন বাজারে বিদ্যুৎ-গ্যাস-চাল-ডাল-তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ঊর্ধ্বগতি ও টিসিবির মাধ্যমে ন্যায্যমূল্যে পণ্য সামগ্রী বিক্রির দাবিতে এই সমাবেশ হয়। প্রত্যেক বিভাগীয় শহরে সোমবার একযোগে এই কর্মসূচি পালন করে দলটি।
জেলার বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে সকাল থেকে সমাবেশে যোগ দেয়।
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আবু ওয়াহাব আকন্দ, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ ওয়ারেস আলী মামুন, শরীফুল আলম সমাবেশে বক্তব্য দেন।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, “এখানে আমাকে কয়েকজন নেতা জিজ্ঞাসা করছিলেন যে, ডা. জাফরুল্লাহ সাহেব বলেছেন, এই নির্বাচন কমিশন নাকি ভালো। আপনারা তাকে মেনে নেন। আমি পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, ডা. জাফরুল্লাহ সাহেবের সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পর্ক নাই। ওটা তার নিজস্ব মন্তব্য।”
“আমি তাকে শ্রদ্ধা করি, সব সময় শ্রদ্ধা করি। তিনি জ্ঞানী মানুষ, গুণী মানুষ, দেশপ্রেমিক মানুষ। কিন্তু এ বিষয়ে তিনি বিএনপির পক্ষে কথা বলার কেউ নন। জাফরুল্লাহ ভাই বিএনপির কেউ নন। জাফরুল্লাহ ভাইয়ের বক্তব্য বিএনপির বক্তব্য নয়।”