নীলফামারীতে একটি লেভেলক্রসিংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় অটোরিকশার চার আরোহী প্রাণ হারিয়েছেন।
Published : 26 Jan 2022, 11:07 PM
বুধবার সকাল ৭টার দিকে সদর উপজেলার দারোয়ানী রেলওয়ে স্টেশনের অদূরে রেলক্রসিংয়ে আন্তঃনগর সীমান্ত এক্সপ্রেস ট্রেনের ধাক্কায় একটি অটোরিকশা যাত্রীসহ দূরে ছিটকে পড়ে।
এতে ঘটনাস্থলে এক নারী শ্রমিক নিহত হন; অটোরিকশা চালকসহ আরও সাত নারী শ্রমিক আহত হন। হাসপাতালে মারা যান আরও তিন নারী শ্রমিক।
নিহতরা হলেন সদর উপজেলার ধনীপাড়া গ্রামের ইটভাটা শ্রমিক আশরাফ হোসেনের স্ত্রী শেফালী বেগম (৩৫), একই গ্রামের ইজবাইক চালক মোশারফ হেসেনের স্ত্রী রুমানা বেগম (৩৫), কোরানীপাড়া গ্রামের ইটভাটা শ্রমিক বেলাল হোসেনের স্ত্রী সাহেরা বানু (৩৫) এবং ধনীপাড়া গ্রামের হোটেল শ্রমিক আরমান আলীর স্ত্রী মিনারা বেগম (৩০)।
আহতদের মধ্যে রওশনারা বেগম (২৭) ও কুলসুম বেগমকে (৩০) নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে এবং অটোরিকশাচালক অহিদুল ইসলাম (২৪) ও নাসরীন আক্তারকে (৩৫) রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
হতাহত সবাই উত্তরা ইপিজিডের বিভিন্ন কারখানার শ্রমিক।
গত ৮ ডিসেম্বর ওই ঘটনাস্থলের চার কিলোমিটার দূরে জেলা সদরের কুন্দপুকুর ইউনিয়নের মনষাপাড়া গ্রামের বৌবাজার এলাকায় ট্রেনে কাটা পড়ে একই পরিবারের তিন শিশুসহ চার জনের মৃত্যু হয়েছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকালে ঘন কুয়াশার মধ্যে ধনীপাড়া ও কোরানীপাড়া গ্রামের বাড়ি থেকে নয় নারী শ্রমিক অটোরিকশা যোগে নিজেদের কর্মস্থল উত্তরা ইপিজেডে যাচ্ছিলেন। পথে দারোয়ানী রেলওয়ে স্টেশনের অদূরে তাদের অটোরিকশাটি একটি রেল ক্রসিং পার হওয়ার সময় খুলনা থেকে ছেড়ে আসা চিলাহাটিগামী আন্তঃগর ‘সীমান্ত এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি অটোরিকশাটিকে ধাক্কা দেয়। এতে যাত্রীসহ অটোরিকশাটি কয়েক ফুট দূরে ছিটকে পড়ে।
এতে ঘটনাস্থলে শেফালী বেগম মারা যান। গুরুতর আহত অটোরিকশা চালকসহ আরও সাত জনকে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে নিলে সেখানে রুমানা বেগম, সাহেরা বানু মারা যান।
জেনারেল হাসপাতাল থেকে রংপুর মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান মিনারা বেগম।
নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালের আবাশিক চিকিৎসক কাজী আব্দুল মোমিন জানান, হাসপাতালে আসা সাত রোগীদের মধ্যে সাহেরা বেগম, রোমানা বেগম মারা যান। ভর্তি পাঁচজনের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তিনজনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তাদের মধ্যেও মিনা পারভীন মারা যান।
নীলফামারী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের জ্যেষ্ঠ স্টেশন কর্মকর্তা মো. মিয়ারাজ হোসেন বলেন, ঘন কুয়শা থাকায় অটোরিকশা চালক বুঝে উঠতে পারেনি যে ট্রেন তাদের কাছে চলে এসেছে, যার ফলে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
সৈয়দপুর রেলওয়ে থানার পরিদর্শক মো. আব্দুর রহমান বলেন, ঘটনাস্থলে একজন, এ ব্যাপারে সৈয়দপুর রেলওয়ের পিডাব্লিউ সুলতান আহমেদ বাদী হয়ে রেলওয়ে থানায় একটি অপমৃত্য মামলা দায়ের করেছেন।
স্বজনদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়া মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
নীলফামারী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন নাহার বলেন, সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে নিহত ও আহতদের তালিকা চাওয়া হয়েছে। তালিকা হাতে এলেই তাদের পরিবারকে সরকারি ভাবে অর্থিকসহায়তা প্রদান করা হবে।