প্রায় ২৯ ঘণ্টা পর শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের বাসভবনের বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করে দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
Published : 25 Jan 2022, 03:47 PM
সোমবার রাত ১২টা ১০ মিনিটে উপাচার্যের বাসভবনে বিদ্যুতের সংযোগ চালু করে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মুখপাত্র মোহাইমিনুল বাশার রাজ।
মঙ্গলবার তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “উপাচার্যের বাসভবনের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫ থেকে ৩০ জন কর্মচারীর বাসার বিদ্যুতের সংযোগ রয়েছে। তাদের অনেকে অসুস্থ রয়েছেন বলে জানিয়েছিলেন কর্মচারী সমিতির সভাপতি।”
“কর্মচারীদের কথা বিবেচনা করে আমরা পুনরায় বিদ্যুতের লাইন সংযোগ করে দিই”, যোগ করেন মুখপাত্র।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী ছাত্রী হলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে গত ১৩ জানুয়ারি রাতে আন্দোলনে নামেন ওই হলের শিক্ষার্থীরা। এর জেরে ১৬ জানুয়ারি পুলিশের লাঠিপেটা, কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেডে শিক্ষার্থীসহ ক্যাম্পাসের অন্তত অর্ধশত লোকজন আহত হন। সে ঘটনায় পুলিশ ‘গুলি বর্ষণ ও হত্যার উদ্দেশ্যে মারপিটের অভিযোগ’এনে অজ্ঞাতপরিচয় ২০০ থেকে ৩০০ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করে।
তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সেই নির্দেশ উপেক্ষা করে উল্টো উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে তারা অনশনে যান; ঘোষণা দেন উপাচার্য পদত্যাগ না করা পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাওয়ার।
আমরণ অনশনের পঞ্চম দিন বিকালে উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দেন, আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী ছাড়া উপাচার্যের বাসভবনের ভেতরে আর কাউকে ঢুকতে দেওয়া হবে না। এখনও সেই অবস্থাই আছে।
পরে ওইদিন সন্ধ্যায় শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেয়। তবে এই সময়ে জেনারেটরের মাধ্যমে বিদ্যুৎ চালু ছিল বলে একজন কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন।
শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী ছাত্রী হলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ তুলে গত ১৩ জানুয়ারি রাতে আন্দোলনে নামেন ওই হলের শিক্ষার্থীরা।
তাদের তিনটি দাবির মধ্যে ছিল- প্রভোস্ট কমিটির পদত্যাগ, হলের অব্যবস্থাপনা দূর করে সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং দ্রুত ছাত্রীবান্ধব ও দায়িত্বশীল প্রভোস্ট নিয়োগ দেওয়া।
পরে গত রোববার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করলে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।
এরপর ওইদিন বিকালে ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েনের প্রতিবাদ করলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দেয় পুলিশ।
ধাওয়া-পাল্টার এক পর্যায়ে পুলিশ লাঠিপেটা করে, কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তাসহ অন্তত অর্ধশত আহত হন।
এরপর বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দিলেও তা উপেক্ষা করে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার তাদের অনশনের সপ্তম দিন চলছে।