বিভিন্নভাবে ভারতে গিয়ে আটক হওয়া ও হারিয়ে যাওয়া ২১ শিশু ও নারী-পুরুষ দেশে ফিরেছেন, যাদের কেউ কেউ সাজাও ভোগ করেছেন।
Published : 07 Jan 2022, 08:55 PM
বেনাপোল ইমিগ্রেশন ওসি মোহাম্মাদ রাজু জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্টের শূন্যরেখায় পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ তাদের হস্তান্তর করেছে।
২৮ জন ফেরত আসার কথা থাকলেও সাত জনের শরীরে করোনাভাইরাস [ওমিক্রন] সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ায় তাদের ফেরত আনা সম্ভব হয়নি বলে রাজু জানান।
বাংলাদেশের পক্ষে তাদের গ্রহণ করেন শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর আলীফ রেজা, বেনাপোল পোর্ট থানার ওসি মামুন খান ও ইমিগ্রেশন ওসি মোহম্মদ রাজু।
এ সময় কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশ হাই কমিশনের প্রথম সেক্রেটারি শামিমা ইয়াসমিন স্মৃতি ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক [কনস্যুলার ও কল্যাণ] সেহেলি সাবরিন সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
ফেরত আসাদের মধ্যে ১৫ শিশু এবং ছয় জন নারী-পুরুষ রয়েছেন যাদের বাড়ি নড়াইল, বাগেরহাট, যশোর, খুলনা, ঠাকুরগাঁও ঢাকা, মুন্সিগঞ্জ, চট্টগ্রাম ও ঝিনাইদহ জেলায়।
ওসি মোহাম্মাদ রাজু বলেন, এরা ভারতে গিয়ে কেউ হারিয়ে যায়, কেউ পুলিশের কাছে আটক হয়ে আদালতের মাধ্যমে সেদেশের সেইফ হোমে থাকে। আজ ২৮ জনের আসার কথা থাকলেও ওমিক্রন শনাক্ত হওয়ার কারণে ফিরেছে ২১ জন। ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে এদের বেনাপোল পোর্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সেক্রেটারি শামিমা ইয়াসমিন স্মৃতি বলেন, এরা কেউ কেউ পাচারের শিকার ও কেউ কেউ স্ব-ইচ্ছায় ভারতে গিয়ে সেদেশের পুলিশের হাতে আটক হন। এরপর বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন কলকাতা, স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রাণালয়ের যৌথ উদ্যেগে বিভিন্ন সেইফ হোমে অবস্থানরত এসব বাংলাদেশি নারী ও শিশুদের নাগরিকত্ব যাচাই বাছাইপূর্বক বিশেষ ট্রাভেল পারমিটের মাধ্যমে বাংলাদেশে ফেরত আনা হয়েছে।
বাংলাদেশ পরারাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিচালক সেহেলী সাবরিন বলেন, “আমরা বিভিন্ন দেশে নারী শিশু পাচার হওয়াদের উদ্ধারের জন্য কাজ করে থাকি। ভারতের পশ্চিমবঙ্গে পাচার হওয়া ২৮ জন শিশু ও নারীদের আমরা উদ্ধার করি। এরপর ভারতে তাদের কোভিড-১৯ পরীক্ষা করার পর সাত জনের ওমিক্রন ধরা পড়ে। ওই সাত জনকে সেখানে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বাকি ২১ জনকে ফিরিয়ে এনেছি।”
শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর আলীফ রেজা বলেন, ভারতে পাচার হওয়া নড়াইল জেলার বনগাঁও গ্রামের চার বছরের এক শিশু পশ্চিমবঙ্গে মা-বাবার কাছ থেকে পাঁচ মাস আগে হারিয়ে যায়। তাকেও আজ দেশে ফেরত আনা হয়েছে।
আনুষ্ঠানিকতা শেষে পরিবারের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য তাদের মানবাধিকার সংস্থা যশোর জাস্টিস এন্ড কেয়ারের প্রতিনিধির কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে ইউএনও জানান।
যশোর জাস্টিস এন্ড কেয়ারের মাঠ কর্মকর্তা রোকেয়া বেগম বলেন, “ফেরত আসাদের ইমিগ্রেশন, কাস্টমস ও থানার আনুষ্ঠানিকতা শেষে পরিবারের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য আমরা তাদের গ্রহণ করেছি।”