বিদেশে না পাঠানোর শর্তে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়ার পর এখন চিকিৎসা করাতে তাকে বিদেশে নিয়ে যেতে বিএনপি আন্দোলনে নামায় দলটির সমালোচনা করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
Published : 10 Dec 2021, 01:42 PM
তিনি বলেছেন, “একটা কথা আছে না… দাঁড়াইতে দিলে বইতে চায়, বইতে দিলে শুইতে চায়। আর শুইতে দিলে ঘুমাইতে চায়। এখন অবস্থা হইছে এই রকম আর কি। এখন কয় বিদেশে যাইতে দিতে হবে।”
শুক্রবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন সিরাজুল হক পৌর মুক্তমঞ্চে আয়োজিত কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন মন্ত্রী।
৭৬ বছর বয়সী খালেদা জিয়া বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যা নিয়ে গত ১৩ নভেম্বর ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে তার ‘পরিপাকতন্ত্রে’ রক্তক্ষরণ এবং লিভার সিরোসিসের কথা জানান চিকিৎসকরা।
দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ডিত সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বর্তমানে সরকারের নির্বাহী আদেশে মুক্ত আছেন। পরিবার ও দল তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার অনুমতি চাইলেও সরকার তাতে সায় দিচ্ছে না।
সরকারের সিদ্ধান্তের কারণ ব্যাখ্যা করে আইনমন্ত্রী বলেন, “মানবিক কারণে উনাকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নির্বাহী আদেশে মুক্তি দিয়েছেন দণ্ডাদেশ স্থগিত রেখে। উনি চিকিৎসা করাচ্ছেন।এখন বলে বিদেশে যেতে দিতে হবে।”
খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুর পরের ঘটনার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে আনিসুল হক বলেন, “তখন স্বাভাবিকভাবেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমবেদনা জানানোর জন্য তার বাসায় যান। প্রধানমন্ত্রীর মুখের ওপরে গেইট বন্ধ করে দিয়েছিলেন, বাসায় ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এটি শুধু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অপমান করা হয়নি, সারা বাংলাদেশের মানুষকে অপমান করা হয়েছে।
“তারপরও প্রধানমন্ত্রী গত বছর আমাকে বলেছেন- বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ বলতেছে তারা। উনি জেলখানায় আছে অনেক দিন হয়ে গেছে। তার পরিবার একটা দরখাস্ত দিয়েছে। আইনের মারফত তুমি ওনাকে ছেড়ে দাও। আমি বললাম ঠিক আছে।“
মন্ত্রী বলেন, “আমরা দুইটা শর্তে উনাকে ছাড়লাম। একটা হচ্ছে উনি বিদেশ যেতে পারবেন না, আরেকটা হচ্ছে উনি নিজ বাসায় থেকে চিকিৎসা নেবেন। এমন বলিনি যে ওনি হাসপাতালে যেতে পারবেন না। উনি তিন-তিনবার হাসপাতালে গেছেন।
“তাকে বিচারিক আদালত সাজা দিয়েছেন পাঁচ বছর। হাই কোর্টে আপিল করার পর সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করেছেন। অন্যায় এত গভীর যে এতিমের টাকা মেরে দিয়েছে, সেজন্য পাঁচ বছরের জায়গায় ১০ বছর করেছেন। তারপর জামিন চেয়েছেন, জামিন দেয়নি।”
খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠাতে আন্দোলনে থাকা বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে আইনমন্ত্রী বলেন, “মানবতা আন্দোলনের মাধ্যমে কামাই করা যায় না। আইন আইনের গতিতে চলবে, জিয়াউর রহমানের গতিতে চলবে না।“
আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে অসহায়দের মাঝে কম্বল বিতরণ করেন মন্ত্রী।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ডিসি হায়াত উদ দৌলা খান, পুলিশ সুপার মো. আনিসুর রহমান, আখাউড়া পৌরসভার মেয়র তাকজিল খলিফা, আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোমানা আক্তার ও উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক জয়নাল আবেদীন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।