ফেনীতে দুই বছর আগে এক প্রতিবন্ধী অন্তঃসত্ত্বা নারীকে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে হত্যার দায়ে তার স্বামীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত।
Published : 21 Nov 2021, 02:44 PM
রোববার দুপুরে ফেনী জেলা ও দায়রা জজ বেগম জেবুন্নেছা এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডিত মো. ইয়াসিন (৩৫) ফেনী সদর উপজেলার ফাজিলপুর ইউনিয়নের আবদুল মুন্সীর ঘাট গহির কোম্পানি বাড়ির আহসান উল্যার ছেলে।
রায়ে ইয়াসিনকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও দিয়েছেন বিচারক। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
মামলার বরাতে ফেনী আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আসামি হাফেজ আহমেদ জানান, ২০১৮ সালের ২৬ নভেম্বর অটোরিকশা চালক ইয়াসিনের সঙ্গে উপজেলার শিবপুর গ্রামের শারীরিক প্রতিবন্ধী জাফর উল্যাহ বাড়ির মোহাম্মদ মোস্তফার মেয়ে শিরিনা আক্তারের বিয়ে হয়।
বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে নগদ দুই লাখ টাকা স্বর্ণালংকারসহ প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র দেয় শিরিনার পরিবার। বিয়ের পর থেকে ইয়াসিন ফের যৌতুকের জন্য শিরিনাকে চাপ দিতে থাকে।
এক পর্যায়ে শিরিনার উপর নির্যাতন চালনো হয়। শিরিনা নির্যাতনের বিষয়টি তার পরিবারকে জানালে তার ওপর শশুরবাড়ির লোকজন নির্যাতনের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয়।
বিয়ের সাড়ে তিন মাস পর ২০১৯ সালের ৬ মার্চ রাতে যৌতুকের জন্য তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা শিরিনার দুই হাতে ও পেটে বৈদ্যুতিক শকে দিয়ে নির্যাতন চালানো হয়। এক পর্যায়ে শিরিনা মারা গেলে সকালে তার বাড়িতে খবর দেয় শশুরবাড়ির লোকজন।
এ ঘটনায় ২০১৯ সালের ৭ মার্চ নিহত শিরিনার মা রেজিয়া বেগম বাদী হয়ে ইয়াসিনকে এজহার নামীয় ও অজ্ঞাত ৩/৪ জনকে আসামি করে ফেনী মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
শিরিনাকে হত্যার পর তার স্বামী ইয়াসিন, শশুর আহসান উল্যা ও শাশুড়ি ফিরোজা বেগমকে আটক করেপুলিশ। পরে ইয়াসিন হত্যার দায় স্বীকার করে ২০১৯ সালের ৮ মার্চ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ধ্রুব জ্যতি পালের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
মামলার তদন্ত শেষে পুলিশ ২০২০ সালের ১৮ জানুয়ারি ইয়াসিনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। ওই বছরের ১০ নভেম্বর মামলার চার্জ গঠন হয় বলে জানান হাফেজ আহমেদ।